বাংলাদেশ
৫৪ দেশে জরুরিভিত্তিতে ঋণ সহায়তা দরকার: জাতিসংঘ
বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি দরিদ্র মানুষের বসবাস রয়েছে এমন অন্তত ৫৪টি দেশে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। চলমান এই সংকট সমাধানের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ঋণ সহায়তা দরকার। বললেন জাতিসংঘ।
আজ মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
নতুন প্রতিবেদনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, উন্নয়নশীল কয়েক ডজন দেশ দ্রুতই গুরুতর আকার ধারণ করা অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। আর এই সংকটে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার ঝুঁকি ভয়াবহ হতে পারে।
ইউএনডিপি বলেছে, অবিলম্বে ত্রাণ সহায়তা সরবরাহ করা না হলে অন্তত ৫৪টি দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা চরম বৃদ্ধি পাবে। একই সাথে জলবায়ু অভিযোজন এবং সংকট প্রশমনে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দরকার।
ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকায় এটি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়াশিংটনে জি২০ জোটের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকের আগে প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
ইউএনডিপির প্রধান অচিম স্টেইনার জেনেভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বৈশ্বিক এই অর্থনৈতিক সংকট সম্পর্কে বার বার সতর্ক করে দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি এবং সে কারণে ঝুঁকি আরও বাড়ছে। এই সংকট তীব্রতর হচ্ছে এবং বিশ্বের কয়েক ডজন দেশে ছড়িয়ে পড়ার হুমকি রয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, দরিদ্র ঋণগ্রস্ত দেশগুলো একীভূত অর্থনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে এবং অনেকের জন্য তাদের ঋণ পরিশোধ বা নতুন অর্থায়নের ব্যবস্থা করা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে।
ইউএনডিপি বলেছে, বাজার পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যাচ্ছে। ধারাবাহিক রাজস্ব ঘাটতি, আর্থিক সংকোচন ও প্রবৃদ্ধির ধীরগতি বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারি আঘাত হানার অনেক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত অনেক দেশেই ঋণ সংকট মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছিল।
সংস্থাটি বলেছে, গেলো দশকে ঋণের দ্রুত বৃদ্ধিকে ধারাবাহিকভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় উন্নয়নশীল দেশগুলোর বোঝা হালকা করার জন্য ঋণ পরিশোধের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মহামারী চলাকালীন জি২০'র সাধারণ কাঠামোর আওতায় ভারী ঋণগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের ঋণ পরিশোধের ঢেলে সাজানো ব্যবস্থার তেমন অগ্রগতিও দেখা যাচ্ছে না। বরং তাদের এই ব্যবস্থা শামুকের গতিতে এগিয়ে চলছে।
ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫৪টি দেশের মধ্যে অন্তত ৪৬টি দেশ ২০২০ সালে মোট ৭৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সরকারি ঋণ সংগ্রহ করেছে। আর এই ঋণের এক তৃতীয়াংশের বেশি একাই নিয়েছে আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন এবং ভেনিজুয়েলা।
পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ আকার ধারণ করছে। বিশ্বের ১৯টি উন্নয়নশীল দেশের ঋণের বাজার এখন কার্যকরভাবে বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি দেশের ঋণপ্রাপ্তি বন্ধ হয়ে গেছে চলতি বছরের শুরুর দিকেই।
ইউএনডিপির প্রধান অর্থনীতিবিদ জর্জ গ্রে মোলিনা সাংবাদিকদের বলেন, উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অন্তত এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যে তাদের ঋণের পরিমাণকে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি, চরম অনুমানমূলক বা খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
তিনি বলেন, ঋণের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো হলো শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, তিউনিসিয়া, চাদ এবং জাম্বিয়া।
বিপ্লব আহসান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ