উত্তর আমেরিকা
১৭ এপ্রিল প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য
ব্রিটেনে আগামী ১৭ এপ্রিল উইন্ডসরে অনুষ্ঠিত হবে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্বামী ডিউক অব এডিনবরা প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য। গতকাল শনিবার বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে এ ঘোষণা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে বাকিংহাম প্রাসাদের মুখপাত্র বলেছেন, আগামী ১৭ এপ্রিল ব্রিটিশ স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় ডিউকের শেষকৃত্য হবে। এটি হবে তাঁর শেষ ইচ্ছা মেনে। তাই প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হবে না। রাজপরিবারের আনুষ্ঠানিক রীতি অনুযায়ী রাজকীয় অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হবে।
বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়, শেষকৃত্যে প্রিন্স ফিলিপের বর্ণময় দীর্ঘ জীবনের নানা দিক প্রতিফলিত হবে। মহামারির নিয়মবিধি মেনে শেষকৃত্যানুষ্ঠান সীমিত আকারে করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আট দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সুপারিশ করেন। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে রানি এটি অনুমোদন করেছেন। আট দিনের রাষ্ট্রীয় শোক চলবে ডিউক অব এডিনবরার শেষকৃত্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত।
রাজপ্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, ডিউক অব এডিনবরার মরদেহ শায়িত রাখা হয়েছে উইন্ডসর ক্যাসেলের নিজস্ব চ্যাপেল সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে। কফিন ঢাকা আছে তাঁর ব্যক্তিগত পরিচিতি বহনকারী কাপড়ে ও পুষ্পস্তবকে।
জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য প্রিন্স ফিলিপের মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা হবে না। আগামী শনিবার তাঁর কফিন উইন্ডসর ক্যাসেলের প্রবেশদ্বার থেকে গাড়িতে তোলা হবে।
রাজপ্রাসাদ থেকে আরো বলা হয়েছে, প্রিন্স অব ওয়েলস, প্রিন্স চালর্সসহ রাজপরিবারের সদস্যরা ডিউক অব এডিনবরার কফিনের পেছনে পায়ে হেঁটে চ্যাপেলে যাবেন। রানি যাবেন আলাদাভাবে।
প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য হওয়ার পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সব সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল শনিবার ৪১ বার তোপধ্বনি এবং গির্জায় ঘণ্টা বাজিয়ে ডিউক অব এডিনবরাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। ডিউকের জীবনের প্রতিটি বছরের স্মরণে ওয়েস্টমিনস্টার গির্জায় বিশাল ঘণ্টায় প্রতি ৬০ সেকেন্ড পর পর ৯৯ বার ঘণ্টাধ্বনি করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে, স্পেনের জিব্রালটার এবং সমুদ্রে রণতরী থেকে সমন্বিত ও বর্ণাঢ্য তোপধ্বনি করা হয়েছে।
ব্রিটেনের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে লন্ডন, স্কটল্যান্ডের এডিনবরা, ওয়েলসের কার্ডিফ এবং আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট থেকে প্রতি মিনিটে এক রাউন্ড করে ৪১বার তোপধ্বনি করা হয়। এই তোপধ্বনির অনুষ্ঠান টিভি ও অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার করা হয়। করোনার কারণে মানুষকে ঘরে থেকে অনুষ্ঠান দেখার অনুরোধ করা হয়েছিল।
প্রিন্স ফিলিপের স্মরণে সমুদ্রে রয়্যাল নেভির জাহাজগুলো থেকেও তোপধ্বনি করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নেভাল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রিন্স এবং পরে লর্ড হাই অ্যাডমিরাল পদাসীন ছিলেন তিনি।
গেল শুক্রবার ৯৯ বছর বয়সে উইন্ডসর প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ৭৩ বছরের জীবনসঙ্গী ডিউক অব এডিনবরা। ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসে কোনো রাজা বা রানির এত দীর্ঘসময়ের জীবনসঙ্গী কেউ ছিলেন না।
১৯৪৭ সালে তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথকে বিয়ে করেন প্রিন্স ফিলিপ। এর পাঁচ বছর পর প্রিন্সেস এলিজাবেথ ব্রিটেনের রানি হন।
এদিকে, বাকিংহাম প্রাসাদের ফটকে এবং উইন্ডসর প্রাসাদের বাইরে ফুল রেখে প্রিন্স ফিলিপের প্রতি তাদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছে বহু মানুষ। তবে মহামারির কারণে মানুষকে কোথাও জড়ো হতে বা পুষ্পস্তবক না দিতে অনুরোধ করেছিল সরকার। রাজপরিবারের পক্ষ থেকেও জনসাধারণকে ফুল দেওয়ার বদলে ডিউকের স্মরণে দাতব্য প্রতিষ্ঠানে অর্থ দান করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি শারীরিক অসুস্থতার কারণে লন্ডনের কিং এডওয়ার্ড হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রিন্স ফিলিপ। পরে লন্ডনে হৃদরোগের জন্য বিশেষ হাসপাতাল সেন্ট বার্থলোমিউ হাসপাতালে তাঁর হৃদযন্ত্রের পুরোনো সমস্যার কারণে সফল অস্ত্রোপচারও হয়েছিল।
এক মাস চিকিৎসার পর ১৬ মার্চ উইন্ডসর ক্যাসেলে ফিরে যান প্রিন্স ফিলিপ। সেখানেই গেল শুক্রবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এসএন
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/