বরিশাল
বরিশালে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত ১
বরিশালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। পাশাপাশি হামলা করে প্রতিপক্ষের ১০-১২টি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১১ এপ্রিল) ভোর ৪টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলানিয়ার সুলতানী গ্রামের কালিগঞ্জ বাজার এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহত সাইফুল সর্দার (৩০) উপজেলার আশা গ্রামের বাসিন্দা ও জব্বার সর্দারের ছেলে।
জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা উত্তর ও দক্ষিণ উলানিয়া দুটি ইউনিয়ন বিভক্তির বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নিষ্পপ্তি না হওয়া পর্যন্ত ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ স্থানীয় কয়েকটি পক্ষের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার ভোর রাত ৪টার দিকে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রের এলোপাতাড়ি কোপে সাইফুল সর্দার নিহত হন এবং এতে কমপক্ষে ১০-১২ জন আহত হন।
সাইফুলের স্ত্রী খাদিজা বেগম জানান, উলানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারেক সরদার গংদের সঙ্গে মিলন চৌধুরী, মিজান মোল্লা, নোমান মোল্লা গংদের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক হামলা-মামলার ঘটনা ঘটেছে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার ভোররাতে কালীগঞ্জ বাজার ও আশপাশের এলাকার বাড়িঘরে অতর্কিত হামলা চালানো হয়।
এ সময় হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাইফুল ইসলাম নিহত হন এবং হাবু সরদার জহিরুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করে মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় অহিদ ও হাসান আলী নামের দুই জনকে আটক করেন স্থানীয়রা।
সংঘর্ষ ও নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, রোববার ভোর ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার দিকে উলানিয়ার কালিগঞ্জ ব্রিজের পাশে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলা চালায় বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএ
বরিশাল
ববিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মিটিংয়ে ছাত্রলীগের হামলা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের মিটিংয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এই ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষার্থীরা গেট থেকে বের হওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় আবার হামলা চালায় ছাত্রলীগ। আহতদের মধ্যে আন্দোলনের সমন্বয়ক সুজয় শুভসহ ১০ আহত শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ববি সমন্বয়ক সুজয় শুভ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমাদের পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণে ২০ শিক্ষার্থী ববির গ্রাউন্ড ফ্লোরে মিটিং করছিলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা একে আরাফাতের নেতৃত্বে ২০-৩০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লাঠি, রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালায়। এসময় ছাত্রলীগের মাহমুদুল হাসান তমাল, আল সামাদ শান্ত, খালেদ হাসান, শাহরিয়ার সান, সাব্বির, জাইফ, সাইফ, শরিফুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলামকে আমরা সনাক্ত করতে পেরেছি। হামলার পর ক্যাম্পাস থেকে চলে যাওয়ার সময় দ্বিতীয় দফায় হামলা চালানো হয়। এতে কমপক্ষে ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমাদের মিটিংকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সামনেই আমাদের বেধরক মারধর করে ছাত্রলীগ।
বরিশাল নগর পুলিশের বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মিটিং শেষ দিকে ছিলো। তখন কোটা সংস্কার নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে সমর্থন জানানো কিছু শিক্ষার্থী গেট দিয়ে প্রবেশ করে। তখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও অন্য এক গ্রুপের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তারা ছাত্রলীগ কিনা তা বলতে পারবো না, তবে তারাও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা অভিযুক্ত একে আরাফাতের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে রোববার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে গ্রাফিতি অংকন করতে গেলে হামলার উদ্দেশে জড়ো হয়েছিলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
কেএস/
দেশজুড়ে
বিপৎসীমার ওপরে বরিশালের ১০ নদীর পানি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বরিশাল নগরীসহ অন্যান্য জেলা ও উপজেলার নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতিকে বন্যা বলা যাবে না। এটি মৌসুমি পানি প্রবাহ বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাতে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাউবো জানায়, বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, ঝালকাঠিতে বিষখালী নদীতে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২৪ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা নদী ৮৯ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে মেঘনা ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি ৮ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ২১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি ৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার ও উমেদপুর পয়েন্টে কচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার আন্ধারমানিক নদী তীরবর্তী বাসিন্দা আরশাদ আলী বলেন, মঙ্গলবার থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। যারা বেড়িবাঁধের বাইরে থাকেন তাদের ঘরে পানি ঢুকে গেছে। এজন্য বাধের কূলে এক ঘরে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন। পানি কমলে ঘরে ফিরবেন।
এদিকে নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় কেবল উপকূলীয় এলাকা নয়। জেলা শহরের ভিতরেও জোয়ারের পানি প্রবেশ করে মানুষের দূর্ভোগ বাড়িয়েছে।
আই/এ
বরিশাল
বরিশাল থেকে লঞ্চ ও বাস চলাচল শুরু
বরিশালে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলা এবং মেট্রেপলিটন এলাকায় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। এ দিন বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে; সড়ক পথেও চলছে যাত্রীবাহী বাস।
বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে বুধবার (২৪ জুলাই) বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে ছোট লঞ্চ চলাচল করেছে। তবে সন্ধ্যা ৬ টার কারফিউ কঠোর থাকায় ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল করেনি।
নগরবাসী জানান, নগরে গণপরিবহন চলছে এবং ব্যাংক-বিমা-অফিস-আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়াতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে প্রয়োজনীয় কাজে আসা ব্যক্তিরা অনেকটা স্বস্তি পাচ্ছেন তারা। পরিস্থিতি এমনই থাকুক, আর কোনো অস্থির বা অস্থিতিশীল পরিবেশ চান না নগরবাসী।
উল্লেখ্য, কারফিউ শুরুর পর গেলো ২০ জুলাই থেকে বরিশাল নদী বন্দর থেকে সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল।
জেডএস//