ফুটবল
মেসির জোড়া গোলে শিরোপার পথেই বার্সেলোনা
স্প্যানিশ লা লিগায় দুর্দান্ত জয় পেয়েছে কাতালান ক্লাব এফসি বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে গেটাফেকে ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করে লিগ শিরোপা জয়ের আশা টিকিয়ে রাখলো রোনাল্ড কোম্যানের শিষ্যরা। জোড়া গোলের সাথে আরও একটি অ্যাসিস্ট করে এ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি।
গেটাফের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে শীর্ষে থাকা অ্যাথলেটিকোর চেয়ে ৮ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলো বার্সেলোনা। যদিও তাদের চেয়ে দুই ম্যাচ কম খেলায় স্বস্তিতেই ছিলো কাতালানরা। লিগের বাকি থাকা ৮ ম্যাচের সবগুলো জিতলে কোন সমীকরণ ছাড়ায় শিরোপা উঠবে কাতালানদের হাতে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ঘরের মাঠে গেটাফেকে অতিথ্য দেয় বার্সা। গেটাফের বিপক্ষে প্রথম পরীক্ষায় পাস করে গেলো কাতালানরা।
স্বাগতিকদের জন্য ম্যাচের শুরুটা দারুণ হতে পারতো। তৃতীয় মিনিটেই ডি-বক্সের বাইরে থেকে মেসির বুলেট গতির শটে বল ক্রসবারের ভিতরের দিকে লেগে গোললাইনে ড্রপ খেয়েও বাইরে চলে আসে। বেঁচে যায় গেটাফে।
যদিও এই স্বস্তি বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি অতিথীদের। অষ্টম মিনিটে মেসির নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। সার্জিও বুসকেটসের রক্ষণচেরা পাস বার্সেলোনা অধিনায়ক পান মাঝমাঠে। সেখান থেকে দারুণ ক্ষিপ্রতায় সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শটে খুঁজে নেন ঠিকানা।
তবে এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অল্প সময়ের মধ্যেই বিলীন হয়ে যায়। দ্বাদশ মিনিটে গোল হজম করে বার্সা। বাঁ দিক থেকে মার্ক কুকুরেইয়ার ক্রসে আনহেল রদ্রিগেসের ফ্লিক ক্লেমেন্টে লেংলেটের গায়ে লেগে জড়ায় জালে। কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষকের।
২৮তম মিনিটে আবারও আত্মঘাতী গোলে আবার এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণে বল ডি-বক্সের বাইরে পেয়ে কি বুঝে গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দিলেন ডিফেন্ডার সোফিয়ান চাকলা, দেখলেনও না অনেকটা এগিয়ে এসেছেন দাভিদ সোরিয়া। বল তার পাশ দিয়ে গড়াতে গড়াতে খুঁজে নিল ঠিকানা।
পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান বাড়ান মেসি। তার ডান পায়ের কোনাকুনি শটে বল ঝাঁপিয়ে পড়া সোরিয়ার আঙুল ছুঁয়ে দূরের পোস্টে লেগে ফিরে আসলেও কেই ক্লিয়ার করতে পারেনি, ফিরতি বল এবার গোলমুখে পেয়ে বাঁ পায়ের শটে স্কোরলাইন ৩-১ করেন রেকর্ড সাতবারের পিচিচি ট্রফি জয়ী। এবারের লিগে তার গোল হলো সর্বোচ্চ ২৫টি।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে খেলার ধারার বিপরীতে সফল স্পট কিকে গেটাফেকে লড়াইয়ে ফেরান এনেস উনাল। তুর্কি এ ফরোয়ার্ডকে রোনাল্ড আরাউহো ফাউল করলে পেনাল্টিটি পায় গেতাফে।
ব্যবধান কমিয়ে উজ্জীবিত হয়ে আক্রমণে ওঠে গেটাফে। তখন বার্সেলোনাকেও বলের দখল নিতে ভুগতে দেখা যায়। যদিও শেষ দিকে এসে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন আরাউহো। মেসির অসাধারণ কর্নারে গোলমুখে লাফিয়ে হেডে বল জালে পাঠান উরুগুয়ের ডিফেন্ডার।
যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের পাস দারুণ পজিশনে পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মেসি। তারপরও হ্যাটট্রিক হতে পারতো মেসির। পরের মিনিটেই ডি-বক্সে গ্রিজমান ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। কিন্তু মেসি সেটি না নিয়ে গ্রিজমানকে দিলে কোনো ভুল করেননি বিশ্বকাপ জয়ী ফরাসি তারকা।
এ জয়ে ৩১ ম্যাচে ২১ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ফিরল বার্সেলোনা। একটি করে ম্যাচ বেশি খেলা রিয়াল ও আটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট যথাক্রমে ৭০ ও ৭৩।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//