ফুটবল
নেইমারদের উড়িয়ে ইতিহাস গড়ে স্বপ্নের ফাইনালে সিটি
ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ঘরের মাঠ ইতিহাদে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ২-০ গোলে হারিয়ে (দুই লিগ মিলিয়ে ৪-১) প্রথম দল হিসেবে ইস্তাম্বুলের টিকেট হাতে পেলো পেপ গার্দিওলার দল।
ম্যাচটা নেইমারদের জন্য বেশ কঠিন ছিলো। শর্ত ছিল শুধু জিতলেই হবে না, ব্যবধানটাও যথেষ্ঠ রাখতে হবে। পিএসজি তার কিছুই পারল না। মঙ্গলবার রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে জিতেছে সিটি। দুই অর্ধে একবার করে বল জালে পাঠান রিয়াদ মাহরেজ।
পুরো ম্যাচে পিএসজিকে শুধু সিটির বিপক্ষেই নয় লড়তে হয়েছে পুরো মাঠ জুড়ে আবৃত হয়ে থাকা তুষারের সাথেও। তুষারে মাঠের প্রায় পুরো জায়গা ঢেকে ছিল। তাতে ফুটবলের স্বাভাবিক ছন্দে বিঘ্ন গটে। বিরতির পর আবার নামে বৃষ্টি। তবে কোনো কিছুই থামাতে পারেনি দুর্দান্ত সিটিকে।
পিএসজি প্রথম মিনিট থেকে চাপ তৈরি করে স্বাগতিকদের ওপর। সেই আশার পালে হাওয়া দেয় ষষ্ঠ মিনিটের পেনাল্টির বাঁশি। কিন্তু ভিএআরে পাল্টে যায় সিদ্ধান্ত। বরং উল্টো পাঁচ মিনিট পরেই গোল খেয়ে বসে পিএসজি। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে কেভিন ডি ব্রুইনের শট মার্কিনিয়োসের পায়ে লেগে বল চলে ডান দিকে গেলে ছুটে গিয়ে জোরালো কোনাকুনি শটে কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করেন আলজেরিয়ান তারকা রিয়াদ মাহরেজ।
দুই মিনিট বাদে ভালো দুটি সুযোগে সুযোগ পায় পিএসজি, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি তারা। মার্কিনিয়োসের করা হেড ক্রসবারে বাধা পায়। পরের সুযোগটি আসে প্রতিপক্ষের ভুলে। কিছুটা এগিয়ে সতীর্থকে পাস দিয়েছিলেন এডারসন, দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ধরেই শট নেন ডি মারিয়া। কিন্তু একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
প্রথমার্ধে লক্ষ্যে একটিও শট নিতে না পারা পিএসজি বিরতির পর সাদামাটা ফুটবল খেলতে থাকে। বারবার আক্রমণে উঠলেও প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে এলোপাথারি শট নিচ্ছিল নেইমার-দি মারিয়ারা।
৬৪তম মিনিটে ম্যাচ প্রায় শেষ করে দেন মাহরেজ। বাঁ দিক থেকে দারুণ পাল্টা আক্রমণে উঠে ডি ব্রুইনেকে বল বাড়িয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ফোডেন। এরপর ফিরতি পাস পেয়ে ডান দিকে ক্রস বাড়ান তরুণ এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। আর কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ২-০ করেন মাহরেজ।
৬৯তম মিনিটে মেজাজ হারিয়ে ডি মারিয়া লাল কার্ড দেখলে পিএসজির ঘুরে দাঁড়ানোর আশা শেষ হয়ে যায়। সাইডলাইনে বাইরে অহেতুক সিটির অধিনায়ক ফার্নানদিনহোর পায়ে পাড়া দিয়ে বহিষ্কার হন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার। প্রথমার্ধেও দু-দফায় দুই পক্ষের মাঝে একটু উত্তেজনা ছড়িয়েছিল।
৭৭তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো সিটি। তবে ফোডেনের শট নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে পোস্ট কাঁপায়। বাকিটা সময়ও রক্ষণ জমাট রেখে শেষ বাঁশির সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে গার্দিওলা বাহিনী।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//