বাংলাদেশ
মোদিকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান সোনিয়ার
ভারত আজ এমন একটি রাজনৈতিক নেতৃত্ব দ্বারা পঙ্গু হয়ে আছে, যার মানুষের প্রতি কোনো সহানুভূতি নেই। দেশের মানুষকে হতাশ করেছে মোদী সরকার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছেন কংগ্রেসের সভাপতি সোনিয়া গান্ধী।
শনিবার ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শুক্রবার কংগ্রেসের সংসদীয় দলের এক ভার্চুয়াল বৈঠকে সোনিয়া বললেন, মোদী সরকার ব্যর্থ। গোটা দেশ আজ অসহায়। কারণ দেশের মানুষের প্রতি রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোনো সহানুভূতি নেই। এ সময় সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে ভারতের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করার আহ্বান জানান সোনিয়া গান্ধী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং এবং রাহুল গান্ধীর চিঠিগুলো তুলে ধরে কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, এই সব সহায়ক উদ্যোগগুলো যেন বধির কানে পড়েছিল। কারণ কোনও অর্থবহ সাড়া দেয়নি সরকার। তারা এমন আচরণ অব্যাহত রেখেছে যেন তাদের একার কাছে সব উত্তর রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি চিঠি লিখে অভিযোগ তুলেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি লেখেন, আপনার সরকারের কাছে কোভিড মোকাবিলা ও টিকাকরণের কোনও পরিকল্পনাই নেই। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে রাহুল আরো লিখেছেন, কোভিড মোকাবিলায় পরিকল্পনার অভাব এবং করোনার বিরুদ্ধে আগাম যুদ্ধ জয় ঘোষণা করে দেওয়ায় কোভিড সংক্রমণ এমন জায়গায় পৌঁছেছে, বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত। এর ফলে আরও একবার লকডাউন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।
একাধিক বিশেষজ্ঞ ও সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে দেশজুড়ে লকডাউনের কথা খতিয়ে দেখতে বললেও অর্থনীতিতে ধাক্কার কথা ভেবে এখনও লকডাউন করতে নারাজ মোদী সরকার। রাহুল প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, আমি জানি অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাব নিয়ে আপনি উদ্বিগ্ন। কিন্তু আপনার উপদেষ্টারা যে অর্থনীতির অঙ্ক কষছে, ভাইরাসকে না-আটকালে মানুষের জীবনে তার থেকে অনেক বেশি দুর্ভাগ্য ডেকে আনবে।
কোভিড মোকাবিলায় মোদী সরকারের এখন এমনই দিশাহীন অবস্থা, কার্যত সাংবাদিকদের মুখোমুখিই হতে চাইছে না কেন্দ্রের মন্ত্রীরা। দুই সপ্তাহ ধরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর ডাকা হচ্ছে না সংবাদ সম্মেলন। এরই মধ্যে কংগ্রেসের শীর্ষস্তর থেকে একসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করল সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী।
আগেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে পরামর্শ দিয়েছিলেন মনমোহন সিংহ, সোনিয়া ও রাহুল। কিন্তু সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়ার বদলে পাল্টা তাঁদের নিশানা করেছে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। কংগ্রেসের সংসদীয় দলের ভার্চুয়াল বৈঠকে সোনিয়া আবারো দাবি করেন, এখনই কেন্দ্র সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক। এটা সরকারের সঙ্গে আমাদের লড়াই নয়। আমাদের সঙ্গে করোনার লড়াই।
সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাহুলও বলেছেন, সঙ্কটের সময় সবাইকে নিয়ে এগোনো দরকার। এই চিঠিকে সময়ের প্রয়োজনে দেওয়া পরামর্শ হিসেবেই দেখা হোক। অবশ্য কেন্দ্রের দিক থেকে সাড়া মেলেনি।
সোনিয়া বলেন, সরকারের নিজের ক্ষমতাসম্পন্ন গোষ্ঠী, কোভিডের বিষয়ে জাতীয় টাস্ক-ফোর্স মোদী সরকারকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করেছিল। কিন্তু ঔদ্ধত্যের সঙ্গে বুক বাজিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অতিমারিকে হারিয়েছেন তিনি। অনুগত হয়ে তাঁকে তথাকথিত সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছে তাঁর দল।
করোনা সংকটের অব্যবস্থাপনা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারকে বারবার আক্রমণ করে যাচ্ছে কংগ্রেস। দেশটিতে ওষুধ, অক্সিজেন, সিলিন্ডার, হাসপাতালের শয্যা, ভেন্টিলেটর এবং ভ্যাকসিনের গুরুতর অভাব দেখা দিয়েছে।
এসএন
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ