বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস সারাতে গায়ে মাখছেন গরুর গোবর!
করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারত। অক্সিজেনের অভাবে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। ভারত সরকার অক্সিজেন সহায়তা চেয়ে বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়েছে। মৃত্যুর মিছিল এত দীর্ঘ যে দাহ করার জন্য শ্মশানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ধর্মের দ্বারস্থ হচ্ছেন ভারতের অনেক হিন্দুধর্মাবলম্বী।
করোনা থেকে মুক্তি পেতে তারা গায়ে মাখছেন গরুর গোবর। কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন ভারতের চিকিৎসকরা। গরুর গোবর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে, এমন ধারণার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। বরং গোবর ব্যবহারের ফলে অন্য রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গুজরাটের কিছু মানুষ সপ্তাহে এক দিন গোশালায় যাচ্ছেন। সেখানে তারা শরীরে গোবর ও গোমূত্র মাখছেন। তাদের বিশ্বাস গোবর ও গোমূত্র শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। করোনা আক্রান্ত অনেকেই তাই সুস্থ হতে গোশালায় ছুটছেন।
হিন্দুধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, গরুকে দেবতার বাহন করা হয়। তারা গরুর মহত্ত্ব ও পবিত্রতা স্বীকার করে । হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণসহ সব শাস্ত্রে গরুর প্রতি অসাধারণ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মনিলাল বরিসা বলেন, ‘ডাক্তাররাও এখানে আসছেন। তাদের বিশ্বাস এই থেরাপি তাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করবে।’ এ পদ্ধতিতে তিনি গত বছর করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও জানান।
তখন থেকেই শ্রী স্বামী নারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করছেন মনিলাল। সেখানে অনেকেই গরুর গোবর ও মূত্র শরীরে মাখিয়ে শুকানোর অপেক্ষায় রয়েছে। সেখানে তারা গরুকে জড়িয়েও ধরছে। তাছাড়া নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য যোগব্যায়াম অনুশীলন করছে। সর্বশেষে দুধ দিয়ে তারা গোসলের মাধ্যমে থেরাপি শেষ করবে।
ভারতের ডাক্তার ও বিজ্ঞানীরা এসব থেরাপি থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো কিছুই তাদের রুখতে পারছে না। এসব থেরাপি যে শরীরে জটিলতা বাড়াতে পারে সে সর্তকবাণীও তারা কানে নিচ্ছে না। ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় প্রেসিডেন্ট ডাক্তার জে এ জয়ালাল বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে গরুর গোবর বা মূত্র ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। সম্পূর্ণ বিশ্বাসের ওপর ভর করে তারা এটা করছে। তাছাড়া এসব কিছু তাদের শরীরের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দিতে পারে। এমনকি প্রাণী থেকে মানুষের দেহে অন্য রোগও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এ দিকে গোবর ও গোমূত্র থেরাপি নেয়ার জন্য যেভাবে মানুষ ভিড় করছে তাতে করে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আহমেদাবাদের একটি গোশালার দায়িত্বে থাকা মধুচরণ দাস জানান, তারা অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা সীমিত করে দিয়েছেন।
ভারতে মহামারি করোনাভাইরাসে ২২.৬৬ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জন মারা গেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর সংখ্যা আরো অনেক বেশি। প্রকৃত সংখ্যা পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি হতে পারে। আক্রান্ত রোগীদের হাসাপাতালে স্থান পেতে যেমন লড়তে হচ্ছে তেমনি লড়তে হচ্ছে অক্সিজেন এবং ওষুধ পেতে। ফলে চিকিৎসার অভাবে অনেকেই মারা যাচ্ছেন।
এস
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ