ফুটবল
৪৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড নিজের করে নিলেন মেসি
লা লিগার শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে। অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ দীর্ঘ ৭ বছর পর শিরোপা পুনরূদ্ধার করেছে। বার্সেলোনা তৃতীয় হয়ে লিগ শেষ করেছে। দল শিরোপা না পেলেও ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়লেন দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসি। শেষ ম্যাচে মেসি মাঠে না থাকলেও ঠিকই ঐতিহাসিক এক রেকর্ডের মালিক বনে গেছেন এই ক্ষুদে জাদুকর। রেকর্ড ৮ম বারের মতো লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফি জিতে ইতিহাসের পাতায় একচ্ছত্র আধিপত্য এখন এই আর্জেন্টাইন মহাতারকার।
মেসির যখন লা লিগায় অভিষেক হয় তখন কে জানতো এই ছোট্ট ছেলেটিই একদিন ফুটবলের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বলতম তারাদের মধ্যে অন্যতম একজনে পরিণত হবেন। একের পর এক অসম্ভব মনে হওয়া রেকর্ডও তার পায়ে গড়াগড়ি খাবে! কেই বা জানতো তার নামে নতুন করে সৃষ্টি হবে ইতিহাস।
গতকাল যেমন স্প্যানিশ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার আরও একবার বোগলদাবা করলেন মেসি। এই নিয়ে এই পুরস্কারটি নিজের ঝুলিতে রেকর্ড ৮ম বারের মতো পুরলেন এলএমটেন। আর এবারের পিচিচি ট্রফি জিতেই প্রায় ৫০ বছর আগের অতিমানবীয় একটি রেকর্ড নিজের করে নিলেন তিনি।
ইউরোপের ঘরোয়া ফুটবলে এতদিন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার ৭ বার জিতে শীর্ষে ছিলেন জার্মান কিংবদন্তি জার্ড মুলার। আগেই তার রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিলেন মেসি এবার টপকে গিয়ে উঠলেন অনন্য উচ্চতায়। যেখানে তার পাশে আর কেউ নেই। নিজের অষ্টম পিচিচি ট্রফি জয়ের পথে লা লীগার এবারের মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩০ গোল করে টানা ৫ মৌসুমে লা লীগা টপ গোলস্কোরার হলেন মেসি।
মুলারের রেকর্ড ভাঙ্গার পাশাপাশি আরও যেসকল রেকর্ড এখন মেসির দখলে
* ফুটবল ইতিহাসের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ‘টপ ফাইভ’ ইউরোপিয়ান ঘরোয়া লীগের মধ্যে লা লিগায় সর্বোচ্চ ৮ বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। ২য় স্থানে রয়েছেন জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলার ( তিনি ৭ বার বুন্দেসলীগার টপ স্কোরার হয়েছিলেন)।
** লা লিগায় একমাত্র ফুটবলার হিসেবে সর্বোচ্চ ৮ বার পিচিচি ট্রফি জয়ের রেকর্ড মেসির। দ্বিতীয়স্থানে থাকা তেলমো জারা পুরস্কারটি জিতেছিলেন ৬ বার। ৫ বার করে ট্রফিটি জিতেছেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো, কুইনি ও হুগো সানচেজ।
*** একমাত্র ফুটবলার হিসেবে লা লিগায় টানা ৫ মৌসুম সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। এর আগে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো ও হুগো সানচেজ টানা ৪ মৌসুমে লা লীগা শীর্ষ গোলদাতার রেকর্ড গড়েছিলেন। এছাড়া বুন্দেসলিগাতে রবার্ট লেওয়ানদোস্কি গত ৪ মৌসুমে টানা ৪ বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার কৃতির্ত অর্জন করেন।
ইউরোপের সেরা ৫ লিগে সর্বোচ্চবার টপ গোলস্কোরারের পুরস্কার বিজয়ীদের তালিকা
১. লিওনেল মেসি- ৮ বার (৮ বার, লা লিগা)
২. গার্ড মুলার- ৭ বার (৭ বার, বুন্দেসলিগা)
৩. লেভানদোস্কি- ৬ বার (৬ বার, বুন্দেসলিগা)
৪. তেলমো জারা- ৬ বার (৬ বার, লা লিগা)
৫. জিমি গ্রিভস- ৬ বার (৬ বার, ইংলিশ লিগ)
৬. ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো- ৫ বার (১ বার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, ৩ বার লা লিগা, ১ বার সিরি-এ)
৭. ইব্রাহিমোভিচ – ৫ বার (২ বার, সিরি-আ, ৩ বার লিগ ওয়ান)
৮. হুগো সানচেজ,কুইনি,ডি স্টেফানো – ৫ বার (৩ জনই ৫ বার করে, লা লিগা)
৯.গানার নরদাল – ৫ বার ( ৫ বার, ইতালিয়ান সিরি-আ)
১০. ডেলিও ওনিস, জিন প্যাপিন ,কার্লোস বিয়াঞ্চি – ৫ বার (৩ জনই ৫ বার করে, লীগ ওয়ান)
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//