ফুটবল
সিটির স্বপ্ন ভেঙে ৯ বছর পর ইউরোপ সেরা চেলসি
ফাইনালের আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচে আগে কখনোই জালের দেখা না পাওয়া কাই হাভার্টজ একেবারে মোক্ষম সময়ে বাজিমাত করলেন। দলকে সবচেয়ে বড় জয়ের উপলক্ষ উপহার দিলেন। এতে করে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে ইউরোপ সেরার আসনে বসল টমাস টুখেলের চেলসি।
শনিবার রাতে পোর্তোর এস্তাদিও দো দ্রাগাওয়ে অল ইংলিশ ফাইনালে দাপুটে ফুটবল খেলে ১-০ গোলে জিতেছে চেলসি। চেলসির এই জয়ে ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেলো ম্যান সিটির।
লম্বা করে এদেরসনের বাড়ানো বল প্রতিপক্ষের বক্সে খুঁজে পায় রাহিম স্টার্লিংকে। তার শট নেয়ার আগমুহূর্তে কোনোমতে বলে ছোঁয়া লাগান রিস জেমস, এরপর কর্নারের বিনিময়ে সম্মুখ বিপদ এড়ান গোলরক্ষক এদুয়াঁ মঁদি। অষ্টম মিনিটের ওই আক্রমণ থেকেই শুরু রোমাঞ্চ ছড়ানো লড়াই।
পরের সাত মিনিটে দারুণ তিনবার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হন টিমো ভেরনার। ২৭তম মিনিটে ফিল ফোডেনের শট স্লাইড ট্যাকলে আটকান আন্টোনিও রুডিগার। আট মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন হাভার্টজ, কিন্তু দারুণ ট্যাকলে বিপদ হতে দেননি অলেকজান্ডার জিনচেঙ্কো।
একটু পর বড় একটা ধাক্কা খায় চেলসি। অস্বস্তিবোধ করায় মাঠ ছেড়ে যান অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা। বিরতির আগেই এগিয়ে যাওয়ার উল্লাসে ভাসে দলটি।
৪২তম মিনিটে গোলরক্ষক মঁদির বাড়ানো বল মাঝমাঠে পেয়ে সুযোগ বুঝে হাভার্টজের উদ্দেশে থ্রু পাস বাড়ান ম্যাসন মাউন্ট। পোস্ট ছেড়ে বক্সের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া এদেরসনকে ওয়ান-অন-ওয়ানে দারুণ এক টোকায় ফাঁকি দিয়ে ফাঁকা জালে বল পাঠান হাভার্টজ।
চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০তম ম্যাচে এসে প্রথম গোলের দেখা পেলেন তরুণ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। ২০১৩ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে ইলকাই গিনদোয়ানের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে ইউরোপ সেরার আসরে নিজের প্রথম গোলটি করলেন।
প্রথাগত কোনো স্ট্রাইকার না রেখে শুরুর একাদশে ‘ফলস নাইন’ হিসেবে কেভিন ডে ব্রুইনেকে খেলান গুয়ার্দিওলা। কিন্তু তা ফলপ্রসু হয়নি। প্রথমার্ধে নিষ্প্রভ এই বেলজিয়ান ৫৫তম মিনিটে রুডিগারের ফাউলে চোট পেয়ে অশ্রুসিক্ত চোখে মাঠ ছাড়েন। তার জায়গায় নামেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার গাব্রিয়েল জেসুস।
৭৩তম মিনিটে ম্যাচ প্রায় শেষই করে দিতে পারতেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই ফরোয়ার্ডের চিপ দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পর আক্রমণের ধার বাড়াতে স্টার্লিংকে তুলে ক্লাবের রেকর্ড গোলদাতা সার্জিও আগুয়েরোকে নামায় সিটি।
কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি তারা। সুযোগ অবশ্য এসেছিল। ৯০তম মিনিটেই যেমন হতে পারত গোল কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকতে পারেননি ফোডেন।
এস
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//