অন্যান্য
নিবন্ধন পেতে ইসিতে ‘বিডিপির’ আবেদন, শুরুতেই প্রশ্নের মুখে
রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) নামে নতুন একটি দলের নেতারা।
আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে তাঁরা এই আবেদনপত্র জমা দেন।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি নতুন দল। নতুন প্রজন্মের আমার সাথে যাঁরা আছেন, বিভিন্নভাবে তাঁদেরকে আমরা সংগ্রহ করেছি। তাঁদের নিয়ে আমরা কাজ করেছি। এখানে অন্য কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি বা সহযোগিতা আমরা ফিল করি না। এখন যদি কেউ কিছু বলে, সে ব্যাপারে আমাদের কোনো দায় নেই।
নতুন এই দলটির সঙ্গে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতা আছে বলে আলোচনা রয়েছে। আবেদনপত্র জমা দিতে এসে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন দলটির নেতারা। এই দলের প্রতিষ্ঠা কবে, জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক কী, দলের নেতাদের রাজনৈতিক পরিচয় কী—সাংবাদিকদের এসব প্রশ্ন এড়িয়ে যান দলটির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম (চান)। তিনি বারবার বলেন, তাঁদের দলটি সম্পূর্ণ নতুন দল। আরেকটু সংগঠিত হয়ে তাঁরা এসব বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানাবেন।
জামায়াতের অনেকেই এই দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এমন আলোচনা আছে, এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিডিপির চেয়ারম্যান বলেন, না না। আমরা বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলব। যা আছে আমরা পরিষ্কার করব। আজ এ বিষয়ে আমরা কোনো কথা বলব না।
বিডিপি সভাপতি বলেন, অল্প কিছু দিনের মধ্যে তাঁদের সম্পর্কে অনেক কথা শুরু হয়েছে। তাঁরা এটা প্রত্যাশা করেননি। খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন।
আনোয়ারুল ইসালম দাবি করেন, জামায়াতের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই। দেশের সংবিধান মেনে তাঁরা রাজনীতিতে এসেছেন। দেশের সংবিধানের প্রতিটি শব্দ তাঁরা সম্মান করেন এবং সেটা লালন করেই রাজনীতি করেন। সংবিধানের বাইরে কোনো কিছুতেই যেতে তাঁরা রাজি নন। মুক্তিযুদ্ধের পরে জন্ম নেয়া ব্যক্তিদের নিয়ে দল গঠন করা হয়েছে।
দলে যুদ্ধাপরাধী কেউ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিডিপির চেয়ারম্যান বলেন, যারা স্বাধীনতার পরে জন্মগ্রহণ করেছে, তাদের কেউ যুদ্ধাপরাধী বানালে বানাতে পারে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হবেন। তখন বিস্তারিত বলবেন। তাঁরা এখন নিবন্ধনের জন্য এসেছেন। নিবন্ধনের যতগুলো শর্ত, সব পূর্ণ করে আবেদন করেছেন। আশা করছেন ইসির নিবন্ধন পাবেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। এর পাঁচ বছর পর ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নিবন্ধন বাতিলের পর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিছু আসনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতারা।
এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের একদল সংস্কারপন্থী নেতা-কর্মী ২০২০ সালের ২ মে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) নামে একটি দল গঠন করেছিলেন। এবি পার্টির নেতারাও দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছেন।
সদ্য আত্মপ্রকাশ করা বিডিপির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা না বললেও তাঁর এই দলের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হকের (নাঈম) রাজনৈতিক পরিচয় সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নিজামুল হক জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য ছিলেন।
অন্যান্য
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূসকে প্রধান করে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের নিকট ছাত্র-জনতার অনেক প্রত্যাশা। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবেন।’
জামায়াত আমীর বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। ছাত্র-জনতার বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বৈরশাসক মুক্ত হয়েছে।’
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব উপদেষ্টাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করার এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মাদ ইউনূস এবং অন্যান্য উপদেষ্টাগণ শপথ নিয়েছেন। শপথ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাবৃন্দ, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, প্রকৌশলী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক, লেখক, গবেষকসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
শপথ অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান (সাবেক এমপি) ও ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোঃ তাহের (সাবেক এমপি), সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জনাব হামিদুর রহমান আযাদ (সাবেক এমপি), মাওলানা আবদুল হালিম ও এডভোকেট মোয়ায্যম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।
জেএইচ
অন্যান্য
ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন শেষে যা বললেন জামায়াতের আমীর
কোনো বাহবা বা রাজনৈতিক ফায়দার জন্য আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির পাহারা দিচ্ছি না, মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকার জন্য এ কাজে নেমেছি। আপনাদের প্রয়োজনে জাতির প্রয়োজনে যদি কখনো জামায়াতকে অনুভব করেন সেটাই হবে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। তখন যেন প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া দিতে পারি। বলেছেন জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশের কোনো জায়গায় জামায়াতে ইসলামী বা ছাত্র সংগঠনে যারা কাজ করেন তারা যদি দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কিছু করেন তাহলে তিনি হবেন দুর্বৃত্ত। আমাদের সুনির্দিষ্ট করে বলবেন। তখন দেখবেন আমরা কী করি, কী করব সেটাও জানবেন। আমরা সঠিক পথে থাকলে পরিবেশ ও মানুষ সাক্ষ্য দেবে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষভাবে এই পরিস্থিতিতে একটা বিষয়ে সহযোগিতা চাইতে এসেছি, ঢাকাসহ সারাদেশে আমাদের নামে, আমাদের ব্যানারে, আমাদের স্লোগান ব্যবহার করে কোনো দুর্বৃত্ত অপকর্ম করছে কি না তা জানাবেন। যদি কেউ কিছু করে এমন তথ্য জানাবেন। কোনো দুর্বৃত্তকে প্রশ্রয় দেব না, বরং সেই দুর্বৃত্তকে সমুচিত জবাব দিয়ে দেব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, মুহা. কামাল হোসাইন ও ড. আবদুল মান্নান প্রমুখ।
এএম/
অন্যান্য
১৩ বছর পর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জামায়াত নেতারা
প্রায় ১৩ বছর ধরে বন্ধ ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মগবাজারের কার্যালয়ের পাশাপাশি পুরানা পল্টনে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী কার্যালয়ের দশাও ছিল একই। টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়ার পর পাল্টে যায় রাজনৈতিক দৃশ্যপট। স্বস্তি নেমে আসে জামায়াত-বিএনপিসহ দীর্ঘদিন কোণঠাসা হয়ে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শিবিরে। এরইঅংশ হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজান ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে তারা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান। এ সময় গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একজন উচ্চস্বরে আজান দেন। পরে মোনাজাত করা হয়।
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন