সিলেট
দ্বিতীয় দিনেও সিলেটে চলছে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট
কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন চালুর দাবিতে সিলেট জেলা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘটের আজ (১ নভেম্বর) দ্বিতীয় দিন চলছে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হয় এই ধর্মঘট। বুধবার (২ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলার কথা। এই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে পুরো বিভাগে ধর্মঘট ডাকার হুমকি দিয়েছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম হাদী ছয়ফুল গত ১৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে এই ধর্মঘটের ডাক দেন। পরে রোববার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান। এ সময় বৈঠকের পরও ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেনি তারা। এ কারণে সোমবার (৩১ অক্টোবর) ভোর ৬টায় ধর্মঘট শুরু হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাক, ট্যাংক লরি, কাভার্ডভ্যান, পিকআপসহ পণ্যবাহী যানবাহন আটক দিচ্ছেন শ্রমিকরা। সোমবারও দিন ও রাতে বিভিন্ন পয়েন্টে শ্রমিকদের পিকেটিং করতে দেখা যায়। ধর্মঘটের কারণে ট্রাক টার্মিনালসহ জেলার বিভিন্নস্থানে আটকা পড়েছে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক। এ ছাড়া মঙ্গলবার সকালে নগরীর ট্রাক টার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল করেছেন শ্রমিকরা। এ সময় তারা তাদের দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ বলেন, প্রথমে আমরা জেলায় ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছি। এর মধ্যে দাবি না মানলে আগামী ৩ নভেম্বর আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করব। ওই সমাবেশ থেকে পুরো বিভাগে ধর্মঘটের ডাক দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, গত রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমাদের সভায় কোনো সিদ্ধান্ত না আসায়, আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অনড় আছি। সোমবার (৩১ অক্টোবর) থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। আমাদের এক সপ্তাহ, অথবা ১৫ দিনের মধ্যেও দাবি মানার আশ্বাস দিলে আমরা আন্দোলন স্থগিত রাখতাম। আপাতত ৪৮ ঘণ্টা আমরা পণ্য পরিবহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করব।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমান জানান, ‘কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ নভেম্বর এই কমিটির সদস্যরা সিলেটের কোয়ারিগুলো পরিদর্শনে আসবেন। তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখবেন পাথর উত্তোলনের যৌক্তিকতা আছে কি না। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে’।
সিলেট
সুনামগঞ্জে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে নামেন সাদা টি শার্ট পরিহিত একটি টিম। গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াহিদ, হেক্সাস গোবিন্দগঞ্জের শিক্ষক রেদ্বওয়ান আহমদসহ অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে ওই টিমে।
মহাসড়কের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারসহ এক দফা দাবিতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী যেভাবে সড়কে নেমে এসেছিল, তেমনি শিক্ষর্থীরা মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে সড়কে নেমে এসেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঝাড়ু দিয়ে মহাসড়ক পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট ডাম্পিং এরিয়ায় নিয়ে যান। আর তাদের পানি ও শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশের মতো কাজ করছে। সত্যিই এ দৃশ্য অনেক সুন্দর। আমাদের সবাইকে তাদের সাপোর্ট করা উচিৎ। এছাড়াও তারা গতরাতে মন্দির পাহারা দিয়েছে।
এএম/
সিলেট
হবিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ১ জনের মৃত্যু, আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন
হবিগঞ্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি শ্রমিক বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।
মারুফ হোসেন (যিনি মোস্তাকের সঙ্গে কাজ করেন) বলেন, মোস্তাক এখানে জুতা কিনতে এসেছিল। এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিজিবি) ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। তার বাড়ি সিলেটের টুকের বাজার এলাকায়।
এক পর্যায়ে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মঈন উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মোস্তাকের হাতে বড় ধরনের আঘাত ছিল। সেটা গুলি কি না, পরে জানানো যাবে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
এরআগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’–এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের বোর্ড মসজিদের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পূর্ব টাউন হল এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রদল ও অন্য দলের নেতা-কর্মীরা।
এরপর মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে টাউন হল এলাকায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে সেখানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।এ সময় তার বাসার সামনে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়।
পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সহস্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাক মিয়ার মৃত্যু হয়।
পরে বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়। এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএইচ
সিলেট
বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। আহতরা ঘটনায় সময় সীমান্তে মহিষ চরাচ্ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর ১টায় কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন আহত হন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তবর্তী এক হাজার ৮৪৬ নম্বর সীমানা পিলারের কাছে টহলরত বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে আহত হন কামরুল ইসলাম ও চান্দ আলী। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানান, গুলিবিদ্ধ কামরুল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার বাম হাতে চারটি গুলির ক্ষত রয়েছে।
এ বিষয়ে আলীনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হরি জীবন বলেন, সরকারি কাজে অন্যত্র থাকায় সীমান্তে কী ঘটেছে সেটি তার জানা নেই।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন