সিলেট
আগামীকাল দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটবে সুনামগঞ্জবাসীর
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল স্বপ্নের এ সেতুটি উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটবে হাওর জনপদের মানুষের।
সোমবার (৭ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সেতু চালু হলে সুনামগঞ্জবাসীকে আর সিলেট হয়ে ঢাকা যেতে হবে না। পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে দ্রুত সময়ে যাতায়াত করতে পারবেন তারা। ফলে সুনামগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব কমবে ৫২ কিলোমিটার। সময় বাঁচবে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। সেইসঙ্গে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজতর হলে প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় ছোট-বড় অনেক শিল্প কারখানা গড়ে উঠতে পারে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন।
দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের শেষ জেলা সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকার সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে সিলেট নগরী হয়ে যেতে হয়। ১৯৯৮ সালে এ সড়ক যোগাযোগ সহজ করতে সুনামগঞ্জের পাগলা-জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ শুরু হয়। প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের চেষ্টায় কাজ শুরু হলেও ২০০১ সালে সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের চেষ্টায় আবারও কাজ শুরু হয়।
সুনামগঞ্জ ও আউশকান্দির মধ্যস্থল জগন্নাথপুর উপজেলা হয়ে উঠবে অপার সম্ভাবনাময় উপজেলা। এরই মধ্যে রানীগঞ্জ সেতুর পূর্বপাড়ে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের বিষয়টি অনুমোদন লাভ করেছে। সেতুর পশ্চিমপাড়ে একটি ইকোনমিক জোন হওয়ার প্রস্তাব রয়েছে।
অপেক্ষার প্রহর শেষে হয়ে দৃষ্টিনন্দন এ সেতু হতে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের স্বপ্নের সেতু। এই সেতু নির্মাণের ফলে এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসহ এখানকার কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয় সহজলভ্য হবে। এতে জেলার কৃষক লাভবান হবে। এরই মধ্যে সেতুটি ভ্রমণপিাপাসু মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সুনামগঞ্জ জেলা ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকরা সেতুর পাশের অপরূপ দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন। সিলেট বিভাগের সবচেয়ে দীর্ঘ রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের ফলে উপজেলার মানুষের দীর্ঘ বছরের কষ্ট লাঘব হবে।
সিলেট
সুনামগঞ্জে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছে শিক্ষার্থীরা
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিকের দায়িত্বও পালন করেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সকাল থেকে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। এছাড়া সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা পরিস্কারে নামেন সাদা টি শার্ট পরিহিত একটি টিম। গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল ওয়াহিদ, হেক্সাস গোবিন্দগঞ্জের শিক্ষক রেদ্বওয়ান আহমদসহ অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে ওই টিমে।
মহাসড়কের ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতে আসা শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কারসহ এক দফা দাবিতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী যেভাবে সড়কে নেমে এসেছিল, তেমনি শিক্ষর্থীরা মহাসড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণে সড়কে নেমে এসেছেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ঝাড়ু দিয়ে মহাসড়ক পরিষ্কার করে ময়লা-আবর্জনা বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট ডাম্পিং এরিয়ায় নিয়ে যান। আর তাদের পানি ও শুকনো খাবার দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মহাসড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশের মতো কাজ করছে। সত্যিই এ দৃশ্য অনেক সুন্দর। আমাদের সবাইকে তাদের সাপোর্ট করা উচিৎ। এছাড়াও তারা গতরাতে মন্দির পাহারা দিয়েছে।
এএম/
সিলেট
হবিগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ১ জনের মৃত্যু, আওয়ামী লীগ অফিসে আগুন
হবিগঞ্জে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তিনি শ্রমিক বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল তিনটার দিকে হবিগঞ্জ শহরের তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।
মারুফ হোসেন (যিনি মোস্তাকের সঙ্গে কাজ করেন) বলেন, মোস্তাক এখানে জুতা কিনতে এসেছিল। এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিজিবি) ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতেন। তার বাড়ি সিলেটের টুকের বাজার এলাকায়।
এক পর্যায়ে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মঈন উদ্দীন চৌধুরী বলেন, মোস্তাকের হাতে বড় ধরনের আঘাত ছিল। সেটা গুলি কি না, পরে জানানো যাবে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
এরআগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’–এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের বোর্ড মসজিদের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় পূর্ব টাউন হল এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রদল ও অন্য দলের নেতা-কর্মীরা।
এরপর মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে টাউন হল এলাকায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে সেখানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।এ সময় তার বাসার সামনে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়।
পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সহস্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাক মিয়ার মৃত্যু হয়।
পরে বায়তুল আমান জামে মসজিদের সামনে কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়। এ সময় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএইচ
সিলেট
বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। আহতরা ঘটনায় সময় সীমান্তে মহিষ চরাচ্ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) দুপুর ১টায় কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিকড়িয়া সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন আহত হন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. জাকির হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, সীমান্তবর্তী এক হাজার ৮৪৬ নম্বর সীমানা পিলারের কাছে টহলরত বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে আহত হন কামরুল ইসলাম ও চান্দ আলী। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুলাউড়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জানান, গুলিবিদ্ধ কামরুল ইসলামকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার বাম হাতে চারটি গুলির ক্ষত রয়েছে।
এ বিষয়ে আলীনগর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার হরি জীবন বলেন, সরকারি কাজে অন্যত্র থাকায় সীমান্তে কী ঘটেছে সেটি তার জানা নেই।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন