চট্টগ্রাম
বিএসএফের হাতে কৃষক হত্যা, কাঁটাতারের ওপারে লাশ
ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মেজবাহ উদ্দিন নামের এক কৃষককে ধানক্ষেত থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে। তিন দিন আগে ওই কৃষককে বাংলাদেশ অংশ থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ পরিবার ও স্থানীয়দের।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) সীমান্তের ওপারে কাঁটাতারের কাছাকাছি ওই কৃষকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ বাংলাদেশে ঢুকে অন্যায়ভাবে মেজবাহকে ধরে নিয়ে গেছে এবং পরে গুলি করে হত্যা করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে উপজেলার বাঁশপদুয়া গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের অংশে নিজের জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষক মেজবাহ উদ্দিন। বিএসএফ-এর একটি দল সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অংশে ঢুকে পড়ে। তারা চোরাকারবারিদের না পেয়ে কৃষক মেজবাহ উদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার এবং পরিবারের অন্যরা বিষয়টি রোববারই স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনকে জানান।
গ্রামবাসী জানান, পরদিন সোমবার সকাল ১১টা, দুপুর ২টা এবং বিকেল সাড়ে ৫টায় পরপর তিনবার বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কৃষককে ধরে নেওয়ার বিষয়টি বিএসএফ অস্বীকার করে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়।
এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আপাতত আমরা মরদেহ উদ্ধারে বা বুঝে নিতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুথুমা বিজিবি ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা, পরশুরামের বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সুমন জানান, বিএসএফ মেজবাহকে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু বিজিবির সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি অস্বীকার করে তারা। আজ তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ফেনী ৪-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘ভারতের অভ্যন্তরে এক ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন আমাদের জানিয়েছেন। স্থানীয়রা দাবি করছেন, তিন দিন আগে এক কৃষককে বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে; পড়ে থাকা মরদেহ ওই কৃষকের।’
বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক হওয়া না হওয়া নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
এ প্রসঙ্গে গুথুমা বিজিবি ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বুধবার রাতে বলেন, ‘কৃষক মেজবাহর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সোমবার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি। তারা কাউকে ধরে নেয়া বা হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। আপাতত আমরা মরদেহ উদ্ধারে বা বুঝে নিতে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি না।’
পরশুরাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, ‘মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী পুলিশকে খবর দেয়। যেহেতু সীমান্তবর্তী এলাকা তাই বিজিবি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মরদেহ উদ্ধার করবে।’
বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত ওই মরদেহ উদ্ধার বা বিএসএফের মাধ্যমে বুঝে নেয়া হয়নি।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
চট্টগ্রাম
রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছেন ছাত্রীরা
সরকার পতনের পরে চট্রগ্রামে নগরীর থানাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। এ অবস্থায় নগরীর রাস্তায় নেই কোন ট্রাফিক পুলিশ। দিনভর রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেন সরকার পতনের আন্দোলন করা শিক্ষার্থীরা। তবে দিন পেরিয়ে রাত হলেও, রাস্তায় ছাত্রদের পাশপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ছাত্রীদেরও।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় এমন চিত্র দেখতে পায় গণমাধ্যম।
নগরীর অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম বলেন, দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই তারা কাজ করতে এসেছেন।
আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জানান, শিফট সিস্টেম করে ছাত্ররা কাজ করছে। এখন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। নিজেদের ইচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন।
আই/এ
চট্টগ্রাম
‘বালুখেকো’ চেয়ারম্যান সেলিম ও তার ছেলে গণপিটুনিতে নিহত
চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের আলোচিত ‘বালুখেকো’ খ্যাত চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তার ছেলে নায়ক শান্ত খান গনপিটুনিতে নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর নিজ এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় বালিয়া ইউনিয়নের ফরক্কাবাদ বাজারে এসে জনগণের তোপের মুখে পড়েন তারা। এরপর সেখানে নিজের পিস্তল থেকে গুলি করে উদ্ধার হয়ে আসতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে জনতার মুখোমুখি হয়। তারপর সেখানে জনগণের পিটুনিতে নিহত হোন সেলিম খান ও তার ছেলে শান্ত খান।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম গণমাধ্যমে বলেন, তাদের মৃত্যুর বিষয় জেনেছি। তবে কেউ খবর দেয়নি। আর জানমালের নিরাপত্তার কারণে সেখানে কাউকে পাঠানো হয়নি।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেলিম খান চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীতে শত শত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। এসব ঘটনায় সে কারাভোগ করেন এবং দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। সেলিম খান একজন আলোচিত প্রযোজকও। তিনি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার।
এছাড়া সেলিম খানকে পদ্মা-মেঘনার চর থেকে বিভিন্ন সময় বালু তোলাসহ নানা কারণে চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
এএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন