অপরাধ
ফারুকের থেকে ১০ কোটি টাকার বিল না পেয়েও কেন চুপ ছিল তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ (ভিডিও)
রাজধানী মিরপুরের তিনটি ওয়ার্ডের দেড় হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস বিল জমা নিয়ে, দেড় বছরের গ্যাস বিল জমা না দিয়ে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন ওমর ফারুক।
দুই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্যাস বিল নিয়েছিলেন মো. ওমর ফারুক (৩২)। গ্যাস বিল ছাড়াও বিদ্যুৎ ও পানির বিল নিয়েছে ওমর ফারুকের এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স। এ সময় খোঁজও নেয়নি তিতাস কর্তৃপক্ষ। নীরবে ওমর ফারুক গ্রাহকদের ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার দেড় বছর পর তিতাস মাইকিং করে জানায় তারা বিল পায়নি।
সোমবার (৭ জুন) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তিতাসের বিল আত্মসাৎকারী ও জালিয়াতির মূলহোতা ফারুককে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। তিনি মিরপুরের দেড় হাজার গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
২০১৮ সাল থেকে রাজধানীর মিরপুর-২ এর ৬০ ফিট এলাকায় ‘ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স’ নামে একটি এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওই এলাকার প্রায় দেড় হাজার গ্রাহকের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ বিলের টাকা সংগ্রহ করতেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে ওমর ফারুক গ্রাহকদের গ্যাস বিলের ১০ কোটি টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে মিরপুর এলাকায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ মাইকিং করে বকেয়া বিলের জন্য প্রায় দেড় হাজার গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রচারণা চালায়। মাইকিংয়ের পরই ভুক্তভোগী গ্রাহকরা প্রতারক ফারুক ও তার প্রতিষ্ঠান ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্সের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেন এবং ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এরপর গ্রাহকদের মাঝে জানাজানি হলে গত ২৩ জানুয়ারি ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্সসহ তিনটি অফিস তালাবদ্ধ করে তিনিসহ তার অন্য সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান।
এ বিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী মিরপুর মডেল থানায় গত ২ ফেব্রুয়ারি ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। এরপরই র্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দল ওই মামলার ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং প্রতারক ওমর ফারুকের অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
ওমর ফারুক নোয়াখালী জেলার কবিরহাট থানার সাগরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ২০০৯ সালে এসএসসি পাস করে ২০১৪ সালে ঢাকার মগবাজার এলাকায় এসে একটি বিকাশের দোকানে চাকরি শুরু করেন। ২০১৫ সালে মিরপুরের আহম্মেদনগর এলাকায় নিজে বিকাশের ব্যবসা শুরু করেন। প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে পাঁচটির বেশি অ্যাকাউন্ট খোলেন।
পরবর্তীতে তিনি ২০১৮ সালে মিরপুর-২ এর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৬০ ফিট এলাকায় ইন্টার্ন ব্যাংকিং অ্যান্ড কমার্স নামে একটি এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করেন। ওমর ফারুক তার এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওই এলাকার গ্রাহকদের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতেন। ২০১৮ সাল থেকে তিতাস গ্যাস, ওয়াসা ও ডেসকোর গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল সংগ্রহ করে জমা না দিয়ে বিলের টাকা আত্মসাৎ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলাও প্রক্রিয়াধীন। তিতাসের কেউ তার সহযোগী হিসেবে জড়িত কি-না তা খতিয়ে দেখছে র্যাব। যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে আমরা তিতাস কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানাব। প্রতারিত সবাই মামলা করলে ভবিষ্যতে তারা ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন বলে জানান তিনি।
হৃদয় নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার পর তিতাস মাইকিং করে জানিয়েছে তারা বিল পায়নি। তারা যদি আগে গ্রাহকদের জানাতো তাহলে ওমর ফারুককে তখনই গ্রেফতার করা সম্ভব হতো।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ