দুর্ঘটনা
দশ মাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু ২০৯৭
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে সারা দেশে ২ হাজার ৩ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৯৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৮৬ জন। জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।
রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ১৬.৫৪ শতাংশ (৩৪৭ জন) ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী এবং ৭৩.১০ শতাংশ (১৫৩৩ জন) ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী। এছাড়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ৯২ জন পথচারী নিহত হয়েছে।
ফাউন্ডেশনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ২১.১৭ শতাংশ এবং প্রাণহানি ১৯.২৮ শতাংশ বেড়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ৩৭৪টি, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬২৯টি, মোটরসাইকেলে অন্য যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেয়ার ঘটনা ঘটেছে ৯৫৮টি এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪২টি।
এরমধ্যে ৮৩৭টি দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেল চালক এককভাবে দায়ী।
বাস চালক দায়ী ১৬৯টি দুর্ঘটনায়, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি চালক দায়ী ৭৪২টি দুর্ঘটনায়, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস চালক দায়ী ৫৬টি দুর্ঘটনায়, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান-নসিমন-ভটভটি-টমটম) চালক দায়ী ১১৯টি দুর্ঘটনায়, প্যাডেল রিকশা ও বাই-সাইকেল চালক দায়ী ১৭টি দুর্ঘটনায় এবং পথচারী দায়ী ৬৩টি দুর্ঘটনায়।
এতে বলা হয়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৬৯৫টি জাতীয় মহাসড়কে, ৮৭৯টি আঞ্চলিক সড়কে, ৩২৯টি গ্রামীণ সড়কে এবং ১০২টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়, কিশোর-যুবকদের বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালানো; অতি উচ্চগতির মোটরসাইকেল ক্রয়ে সহজলভ্যতা ও চালানোয় বাধাহীন সংস্কৃতি; মোটরযান চালকদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির শিথিলতা; বাস-ট্রাক-পিকআপ-প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-সহ দ্রুতগতির যানবাহনের বেপরোয়া গতি; চালকদের অদক্ষতা ও অস্থিরতা; ইজিবাইক-সিএনজি-নসিমন-ভটভটি ইত্যাদি স্বল্পগতির যানবাহন অদক্ষ হাতে চালানো; সড়ক-মহাসড়কে ডিভাইডার না থাকা; কিশোর-যুবকদের গতির প্রতি আকৃষ্ট করতে মোটরসাইকেলের বিজ্ঞাপনের উত্তেজনাকর ভাষা-ভঙ্গি; সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা না থাকা; পারিবারিকভাবে সন্তানদের বেপরোয়া আচরণকে প্রশ্রয় দেয়া এবং দেশে কলুষিত রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতায় কিশোর-যুবকদের মধ্যে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর সংস্কৃতি গড়ে ওঠা ইত্যাদি।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, কিশোর-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; মাত্রাতিরিক্ত গতিসম্পন্ন মোটরসাইকেল বিক্রয় ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; গণপরিবহন চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মোটরসাইকেল ও স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য মহাসড়কে সার্ভিস রোড নির্মাণ করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; যানবাহনের গতি মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে; গণপরিবহন উন্নত ও সহজলভ্য করে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার এবং বিস্তৃত করে সড়ক পথের ওপর থেকে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের মতো পণ্যবাহী যানবাহনের চাপ কমাতে হবে; সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাতে হবে এবং ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ৬৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৭৫৮ জন নিহত হয়েছিল।
চট্টগ্রাম
কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ হারালেন দুই সাইকেল আরোহী
কর্ণফুলীতে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় দুই সাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা একটার দিকে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগর বাংলাবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার নন্দনালী গ্রামের কামাল মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল মণ্ডল (১৮) ও রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট পাগলা গ্রামের মোহাম্মদ আবদুল জলিলের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা কর্ণফুলী উপজেলার ইছানগর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
চরপাথরঘাটার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে তারা তিনজন সাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। এ সময় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। অপরজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়। কাভার্ডভ্যানটি আটক করা হয়েছে।
এএম/
ঢাকা
মেঘনায় নিখোঁজ ৩ জনের মধ্যে ২ জনের লাশ উদ্ধার
শরীয়তপুরের মেঘনা নদীতে বরযাত্রীবাহী একটি ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন জনের মধ্যে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের মধ্যে ছিলেন বর সানজুসহ তার ভাই শাওন ও বন্ধু হৃদয়। এর মধ্যে জেলেদের জালে বরের ভাই শাওন ও বন্ধু হৃদয় বেপারীর মরদেহ উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বর সানজু।
শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা ১১টার সময় গোসাইরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পুষ্পেন দেবনাথ বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন।
উদ্ধার হওয়া শাওন পুরান ঢাকার ধোলাইখালের শাহজাহান বেপারীর ছেলে ও হৃদয় একই এলাকার বলু বেপারীর ছেলে। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একই পরিবারের ৩জন সহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার হলো। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১ জন।
গেলো শুক্রবার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে এসে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহত হন বরের মা, বোন, ভাই ও বন্ধু। এর আগে সকাল ১০টায় কোদালপুর লঞ্চ ঘাট থেকে মাঝেরচর যাওয়ার সময় মেঘনায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় (স্রোতের) ডুবে ট্রলারটি। এসময়ে ট্রলারটিতে ১১ জন যাত্রী ছিলো বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ৫ জন বর্তমানে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এএম/
দুর্ঘটনা
বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে রাজবাড়ীতে নিহত ২
রাজবাড়ীতে যাত্রীবাহী বাস ও সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আরও কয়েজন আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ৮টায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আহলাদিপুর টিটিসি ভবনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রাজবাড়ী আহলাদিপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ সকাল ৮ টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ফরিদপুরগামী লোকাল আমানত শাহ নামের একটি বাস সদর উপজেলার রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের আহলাদিপুর টিটিসি ভবনের সামনে এলে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন। আহত হন আরও ৪-৫ জন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা বলেন, আহতদের রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ও ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। চালক ও হেলপাররা পলাতক রয়েছে ।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মৃত অবস্থায় হাসপাতালে একজনকে নিয়ে আসা হয়। আহত অবস্থায় ছয়জনকে হাসপাতালে আনলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
জেডএস/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন