এশিয়া
‘এই জন্মে আমি আর কাউকে বিয়ে করব না’
সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে টলিপাড়ার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। আপ্রাণ চেষ্টা করেও তাকে ধরে রাখতে পারলেন না প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী। মারণরোগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন লড়াই করে রোববার দুপুরে অজানার উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। থেকে গিয়েছেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার বাবা-মার মতো সব্যসাচীও শেষ পর্যন্ত তার পাশে ছিলেন। ২৪ বছর বয়সি অভিনেত্রীর মৃত্যুতে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সেলেব মহল, এমনকি সাধারণ মানুষও গভীর ভাবে ব্যথিত। ঐন্দ্রিলার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে এবং সব্যসাচীকে ভাল থাকার পরামর্শ দিয়ে অনেকেই প্রার্থনা করেছেন।
ঐন্দ্রিলার শোকের আবহেই প্রকাশ্যে এসেছে অন্য এক ভালবাসার গল্প। সব্যসাচীর মতো প্রেমিকাকে হারিয়েছেন আরও এক প্রেমিক। সেই কাহিনিও কম হৃদয়বিদারক নয়।
আসামের গুয়াহাটির বাসিন্দা বিটুপন তামুলী। দীর্ঘ দিন ধরে তার প্রেম প্রার্থনা বোরার সঙ্গে। ২৭ বছর বয়সি বিটুপনের বাড়ি অসমের মরিগাঁওয়ে। প্রার্থনার বয়স হয়েছিল ২৫। তিনি চাপারমুখের কসুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
সম্প্রতি প্রার্থনাকে হারিয়েছেন বিটুপন। তাকে ছেড়ে চিরতরে চলে গিয়েছেন প্রার্থনা। প্রার্থনা বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ হয়ে আসামের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অনেক দিন ধরেই প্রার্থনার চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসকদের কথা শুনে মেয়ের পরিণতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন বাবা-মা। অবগত ছিলেন বিটুপনও। কিন্তু প্রার্থনার বাবা-মার মতোই এক মুহূর্তের জন্যও তার পাশ ছেড়ে যাননি বিটুপন। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) অসুস্থতার কারণে হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে প্রার্থনার।
সব্যসাচীর মতো পরিণতি পায়নি বিটুপনের ভালবাসাও। কিন্তু প্রার্থনার মৃত্যুর পর আসম শহর যা দেখল তাতে চোখ ফেটে জল বেরিয়ে এসেছে অনেকেরই। প্রার্থনার মৃত্যুর পর তার দেহের সামনে বসে হাউ হাউ করে কাঁদতে শুরু করেন বিটুপন। একটু সামলিয়ে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যান তিনি। কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসেন বিয়ের সরঞ্জাম নিয়ে। সিঁদুর-মালা হাতে প্রার্থনার দেহের সামনে বসে পড়েন বিটুপন। কান্না থামিয়ে দৃঢ় মুখে প্রার্থনার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেন তিনি। এরপর গালে সিঁদুর লাগিয়ে প্রার্থনার গলায় মালাও পরিয়ে দেন। প্রার্থনার হাতে ছুঁইয়ে নিজেও একটা মালা পরে নেন বিটুপন। বিয়ের প্রাথমিক আচার -অনুষ্ঠান শেষ করে স্পষ্ট ভাষায় জোরে জোরে চিৎকার করে বলেন, ‘‘আমার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই জন্মে আমি আর কাউকে বিয়ে করব না।’’
এই কথা শুনে উপস্থিত সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিটুপন-প্রার্থনার এই ভিডিও ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দুই পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে বিটুপন এবং প্রার্থনা দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করতেন। শীঘ্রই বিয়ের পরিকল্পনাও করেছিলেন তারা। এই প্রসঙ্গে প্রার্থনার ভাই সুভন বোরা বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে প্রার্থনা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওকে গুয়াহাটির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। আমাদের সব রকম চেষ্টা করা সত্ত্বেও ওকে বাঁচাতে পারিনি। শুক্রবার রাতে ও মারা যায়।’’
সুভন আরও বলেন, ‘‘প্রার্থনার মৃত্যুর পর বিটুপন জানায় যে, ও প্রার্থনাকেই বিয়ে করতে চায়। এই কথা শুনে আমরা বাক্রুদ্ধ হয়ে পড়ি। কারণ ও যেটা বলেছিল, তা আমাদের কল্পনার বাইরে ছিল। আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি যে, কেউ আমার বোনকে এত গভীর ভাবে ভালবাসতে পারে। আমরা ওকে থামানোর কথাও ভাবিনি।’’ সুভন আরও জানান যে, প্রার্থনা মনেপ্রাণে বিটুপনকে বিয়ে করতে চাইত। বিটুপন তার সেই ইচ্ছা পূরণ করেন। যেমন এক সঙ্গে থাকতে চাইতেন ঐন্দ্রিলা এবং সব্যসাচীও। কিন্তু নিয়তির কারণে আজ তাঁরা দু’জনেই একা। কিন্তু দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, ভালবাসার মানুষ না থাকলেও সেই ভালবাসাকে তারা বাঁচিয়ে রাখবেনই।
ঐন্দ্রিলার ক্ষেত্রে অবিকল এই ঘটনা না ঘটলেও আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। দেহ চুল্লিতে ঢোকানোর আগে দেখা যায়, ঐন্দ্রিলার কপালে নিজহাতে চন্দন পরিয়ে দিচ্ছেন তার লড়াইয়ের সব সময়ের সঙ্গী সব্যসাচী।
সেই ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। ভিডিও’তে দেখা গিয়েছে, শায়িত রয়েছে ঐন্দ্রিলার দেহ। পাশে ঠায় বসে রয়েছেন সব্যসাচী। তারপর নিজে হাতে প্রিয়জনের কপালে চন্দন পরালেন অভিনেতা। ঐন্দ্রিলার দু’পা ছুঁয়ে চুম্বনও করতে দেখা গেল সব্যসাচীকে।
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
এশিয়া
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যা বললেন পুতুল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশে গঠিত হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে মায়ের পদত্যাগ ও দেশত্যাগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য হওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে এ বিষয়ে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
পোস্টে তিনি লিখেছেন, আমার দেশ বাংলাদেশ যাকে আমি ভালোবাসি, সেখানে প্রাণহানির ঘটনায় হৃদয় ভেঙে গেছে। আরও হৃদয়বিদারক যে, আমি এই কঠিন সময়ে আমার মাকে দেখতে ও আলিঙ্গন করতে পারিনি। আমি আরডি হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছি।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
জিএমএম/
এশিয়া
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। জানিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজ্যের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ আহ্বান জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থী। দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন এবং মাথায় রাখুন যে, চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন।
সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে ভারত চলে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু করে।
এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় লিটন দাসের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে খবর বের হয়। পরে জানা যায়, মাশরাফির বাড়িতে হামলার ভিডিও ব্যবহার করে সেটি লিটন দাসের বাড়ি বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
জিএমএম/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন