ইউরোপ
ইউক্রেনে লাখ লাখ জীবন হুমকির মুখে
টানা ৯ মাস ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় ধরে উভয়পক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত থাকলেও আসন্ন শীতকাল হতে পারে ইউক্রেনীয়দের জন্য বিপদের কারণ। একই কথা বলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটি বলছে, আসন্ন শীতে ইউক্রেনে লাখ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক ডক্টর হ্যান্স হেনরি পি ক্লুজ বলেছেন, ইউক্রেনের অর্ধেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অবকাঠামো হয় ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বর্তমানে ১০ মিলিয়ন মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
এমনকি ইউক্রেনের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পর্যন্ত নামতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য অবকাঠামোতে ৭০৩টি হামলা নথিভুক্ত করেছে ডব্লিউএইচও।
রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।
এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।
বিবিসি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহেই ইউক্রেনে সবচেয়ে ভারী বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলায়ও ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো এবং বেসামরিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।
মূলত সম্মুখসারির যুদ্ধে ব্যর্থতার পর রাশিয়ার সাম্প্রতিক এসব হামলা একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ এবং শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউক্রেনে রুশ এই কৌশলের প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হতে শুরু করেছে।
সোমবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে ডক্টর ক্লুজ বলেন, ‘সহজভাবে বললে, এই শীতকালে লক্ষ্য হবে কেবল বেঁচে থাকা।’
তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতিতে এই শীত মানুষের বেঁচে থাকার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তার ভাষায়, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ‘এখন সবচেয়ে অন্ধকার দিনগুলোর মুখোমুখি’ হয়েছে এবং সংঘাতের অবসানের জন্য সর্বোত্তম সমাধান শেষ হতে চলেছে।
ডক্টর ক্লুজ বলেন, হামলার কারণে ইউক্রেনের শত শত হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো এখন ‘আর পুরোপুরি চালু নেই। কারণ মৌলিক চাহিদা মেটাতে জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুতের অভাব রয়েছে’।
প্রসূতি ওয়ার্ডের জন্য ইনকিউবেটর প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্লাড ব্যাংকের জন্য রেফ্রিজারেটর প্রয়োজন এবং নিবিড় পরিচর্যার বিছানায় ভেন্টিলেটর প্রয়োজন। আর তাই সকলেরই জ্বালানি প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, উষ্ণতা ও নিরাপত্তার খোঁজে আসন্ন শীতে ৩০ লাখ পর্যন্ত মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন।
ডা. ক্লুজ বলেছেন, তিনি দোনেতস্কের ১৭ হাজার এইচআইভি রোগীর জন্য ‘খুবই উদ্বিগ্ন’। কারণ শিগগিরই এসব রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে। মূলত এই ওষুধটিই এইচআইভি রোগীদের বাঁচিয়ে রাখতে সহায়তা করে।
ইউরোপে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক এই পরিচালক বলছেন, দোনেতস্কের বেশিরভাগ অংশ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যার কারণে জরুরিভাবে এই অঞ্চলের সকল এলাকায় মানবিক স্বাস্থ্য করিডোর তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। হ্যান্স হেনরি পি ক্লুজ বলেছেন, টিকার বুস্টার ডোজের কথাই ছেড়ে দিন। করোনার মৌলিক টিকাদানের কম হারের কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিকের কোভিডের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে বা নেই।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের পক্ষে হাজারো মানুষের মিছিল
যুক্তরাজ্যে বার্মিংহাম, লিভারপুল, শেফিল্ড, ব্রিস্টলে ও লন্ডনসহ আরো বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসীদের পক্ষে ও অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন । খবর ডয়চে ভেলে।
বুধবার ( ৭ আগস্ট ) সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ হাতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন। সেখানে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছাড়াও অভিবাসী, শরণার্থী ও যারা আশ্রয় নিতে চান, তাদের স্বাগত জানাবার কথাও বলা হয়েছিল।
মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাছাড়া সম্ভাব্য হামলা সামলাবার জন্য এক হাজার তিনশ বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে রাখা হয়েছে।
লন্ডনের ফিঞ্চলিতে মিছিলে নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতি দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মিছিলে যোগদানকারীরা। মিছিলকে ঘিরেপূর্ব লন্ডনের একটি অভিবাসন কেন্দ্রর সামনে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। এছাড়াও মানুষ সোচ্চারে বলেন, ‘অভিবাসন কোনো অপরাধ নয়’, ‘অতি ডানপন্থিদের থামানো হোক’।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, যে দাঙ্গা হয়েছে তা সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য নয়, এটা অতি ডানপন্থিদের গুণ্ডামির জন্য হয়েছে।
জেডএস/
ইউরোপ
টিউলিপের পর ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের পর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় বাসস্থান, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথানাল গ্রীন বো আসন থেকে টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হওয়া রুশনারাকে।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
রোশনারা আলী যুক্তরাজ্যে প্রথম বাংলাদেশি এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাঙালির জয়যাত্রা নিয়ে উঠে আসে রোশনারা আলীর নাম। এরপর টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক, আপসানা বেগমসহ চার বাঙালি এমপি পেয়েছে বাঙালি কমিউনিটি।
গেলো সপ্তাহে (৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। তিনি ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পার্লামেন্ট বাতিল করা পর্যন্ত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-এর সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন সদস্য।
২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
জেএইচ
ইউরোপ
গিনেস বুকে বিশ্বের দীর্ঘতম বাইসাইকেলের নাম লিখালো ৮ প্রকৌশলী
এতোদিন বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির রেকর্ড দখলে রেখেছিলো অস্ট্রেলিয়ার বার্নি রায়ান। তিনি ২০২০ সালে ১৫৫ ফুট দীর্ঘ ৮ ইঞ্চি চওড়া সাইকেল বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো গোটা বিশ্বকে। এবার নেদারল্যান্ডসের ৭ জন প্রকৌশলীকে সঙ্গে করে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইভান শাল্ক। নতুন বাইসাইকেলটি ১৮০ ফুট লম্বা, ১১ ইঞ্চি চওড়া।
চাকা আবিষ্কারের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হল বাইসাইকেল। দূষণে জর্জর পৃথিবীতে এর চেয়ে উপকারী যান আর হয় না। তাই বলে ১৮০ ফুট লম্বা বাইসাইকেল কে দেখেছে? দুই বা খুব বেশি হলে তিন চাকার (সার্কাসের কুশীলবরা চালান) সাইকেলই সাধারণত নজরে পড়ে। কিন্তু ৩৯ বছরের ইভান শাল্ক হৃদয়ের অন্তঃপুরে লালন করছিলেন ব্যতিক্রমী ইচ্ছে।
শৈশব থেকেই গিনেস বুকে নাম তোলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। এর ফলে জন্ম হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেলের। আদৌ কি চলে এই দু-চাকার যান?
২০১৮ সালে দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির কাজ শুরু করেন ইভানসহ আট ইঞ্জিনিয়ার। তবে চাইলেই এই সাইকেল নিয়ে পথেঘাটে নামা যাবে না। বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে সাইকেলটির বিরাট দৈর্ঘ্যই।
ইতোমধ্যে নেটিজেনদের মন জয় করেছে ইভানের সাইকেল। আজব ‘সৃষ্টি’ ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। এই বিষয়ে ইভান বলেন, ‘অন্যরা যখন আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে, আমরা তখন সৃষ্টিশীল কাজে মগ্ন থাকি।’
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন