ফুটবল
স্বপ্ন পূরণের মিশনে মাঠে নামছেন মেসি!
আর কিছুক্ষণ পরই মাঠে নামছেন লিওনেল মেসি। হয়তো এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। আর শেষবারে পারবেন কি বহু কাঙ্ক্ষিত সেই স্বপ্ন পূরণ করতে?
সময়ের সেরা প্রশ্নে সবসময়ই আসে মেসির নাম। ক্যারিয়ারে সম্ভাব্য সবই জিতেছেন কেবল এক বিশ্বকাপ ছাড়া। সেই অধরা শিরোপা হাতে তুলে নেয়ার মিশনেই নামছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল চারটায় মেসিদের প্রতিপক্ষ মধ্যপ্রাচ্যের দল সৌদি আরব। খেলা হবে লুসাইল স্টেডিয়ামে।
সেই মাঠেই আগামী ১৮ ডিসেম্বর হবে ফাইনাল। সেই ফাইনালে তিনি থাকবেন কি-না তার একটি মোহরা হয়ে যাবে আজই। আর তার জন্য অপেক্ষায় পুরো বিশ্বের কোটি কোটি সমর্থক।
সেই ২০০০ সালে বড় স্বপ্ন নিয়ে আর্জেন্টিনা ছেড়ে স্পেনে এসেছিলেন মেসি। ২০০৫ সালে হয় জাতীয় দলে অভিষেক। আলবিসেলেস্তেদের বর্তমান কোচ লিওনেল স্কালোনিও ছিলেন সেই দলের সদস্য। প্রায় সাত মাস অপেক্ষার পর ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম গোলের দেখা পান মেসি। যদিও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা।
২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে খেলেন ক্ষুদে জাদুকর। সেবার তিন ম্যাচ খেলে এক গোল করেছিলে তিনি।
পরের বছরই প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা উঠতে পারত মেসির হাতে, তবে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে পাত্তাই পায়নি আলবিসেলেস্তেরা। জাতীয় দলে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে না পারলেও ক্লাব ফুটবলে সাফল্য পেতে শুরু করেন লিও।
২০০৮-০৯ মৌসুমে লা লিগায় ৩১ ম্যাচ খেলে করেন ২৩ গোল, বিশ্বকে দেন একদিন সেরা হওয়ার বার্তা। সেই মৌসুম শেষেই জয় করেন প্রথম ব্যালন ডি অর।
২০০৯-১০ মৌসুমটা বার্সা শিবিরে দুর্দান্ত কাটে মেসির। সেবার লা লিগায় ৩৫ ম্যাচে ৩৪ গোল করে আবারও চমকে দেন তিনি। তবে জাতীয় দল মেসির জন্য পরিণত হতে থাকে আক্ষেপের এক নামে।
২০১০ বিশ্বকাপে তারকাখচিত দল নিয়ে গিয়েও হতাশ করে আর্জেন্টিনা। গঞ্জালো হিগুয়েন, কার্লোস তেভেজ, আনহেল দি মারিয়াদের দল শেষ আটে ০-৪ গোলে বিধ্বস্ত হয় জার্মানদের কাছে। গোটা আসরেই অনুজ্জ্বল ছিলেন মেসি।
এরপরই বিতর্ক পিছু নেয় মেসির, শুধু ক্লাবেই পারেন তিনি-রটতে শুরু করে এমন কথাও। বিশ্বকাপ খেলে ফিরে বার্সেলোনার হয়ে আবারও সাফল্যের রথ চালাতে থাকেন মেসি। ফলে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার ছিল না উপায়ও। ২০১১ সালের কোপা আমেরিকাতেও হতাশ করে আর্জেন্টিনা, লা পুল্গাও কাটান গোলহীন এক আসর। সেই আসরের পরই আলবিসেলেস্তেদের অধিনায়কের আর্মব্যান্ড উঠে মেসির হাতে।
২০১১-১২ মৌসুমে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান লিও। জার্মান কিংবদন্তি গার্ড মুলারের এক মৌসুমে ৮৫ গোলের রেকর্ড ভেঙে থামেন ৯১ গোল করে। জাতীয় দলের হয়েও মনে রাখার মতো একটি বছর কাটান তিনি। আকাশী নীলদের হয়ে ১৯ গোল করেন সেবার। মৌসুম শেষে চতুর্থ ব্যালন ডি অর জিতে গড়েন আরও একটি রেকর্ড। ২০১৪ সালে অপবাদ ঘুচানোর সুবর্ণ সুযোগ ছিল মেসির সামনে।
ব্রাজিল বিশ্বকাপের গোটা আসরে অনেকটা একাই দলকে টেনে তুলেছিলেন ফাইনালে, কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে মারিও গোটজের শেষ মুহূর্তের গোলে অশ্রুর বন্যা বয়ে যায় ভক্তদের চোখে। এরপর ফাইনাল হারাটা যেন নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হয় আর্জেন্টিনার। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কোপা আমেরিকার দুই আসরের ফাইনাল হারে তারা। দুঃখে-ক্ষোভে-অপমানে অবসরই নিয়ে ফেলেছিলেন মেসি, সমালোচকরাও বেশ সরব হয়ে উঠে সেই সময়।
২০১৮ বিশ্বকাপে শেষ ষোলতেই থামে আকাশী নীলদের যাত্রা। তবে এরপরই একটু একটু করে সব বদলে দিতে থাকেন লিওনেল স্কালোনি। তার অধীনে ২০১৯ কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল খেলে আলবিসেলেস্তেরা। ব্রাজিলের বিপক্ষে হারে সেবার শিরোপার লড়াই থেকে ছিটকে গিয়ে আরও একবার হতাশ হতে হয় মেসিদের। তবে সবাই ভেঙে পড়লেও স্কালোনির মনোবল ছিল অটুট, সেখান থেকেই শুরু হয় নতুন আর্জেন্টিনার উত্থান।
শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালে মেসির হাতে ধরা দেয় প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি। খোদ ফুটবল ঈশ্বরও হয়ত সেদিন কেঁদেছিলেন, ২৮ বছরের শিরোপাখরা কাটে আলবিসেলেস্তেদের। গোটা আসরে চার গোল ও পাঁচটি অ্যাসিস্ট করেন ক্ষুদে জাদুকর, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে রক্তাক্ত হয়েও ছাড়েননি হাল। দলের সকল সদস্যকে মারাত্মক অনুপ্রাণিত করে তার এই হার না মানা মনোবল।
মহাদেশীয় এই অর্জন বদলে দেয় গোটা দলকে। আত্মবিশ্বাসে টগবগ করতে শুরু করে তারা, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দেখা মিলে অদম্য আর্জেন্টিনার। উয়েফা কাপ অব নেশন্সের ফাইনালেও হেসে খেলে হারায় ইতালিকে। ফলে কাতারে মেসির দলের সঙ্গী হবে টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার আত্মবিশ্বাস।
আগুনে ফর্মে আছেন মেসিও, তার ভাবনার পুরোটা জুড়েই এখন কেবল আর্জেন্টিনা। সাতটি ব্যালন ডি অর ও চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর একটি বিশ্বকাপ তো জিততেই পারেন লা পুল্গা। মরুর বুকে মেসির হাতে উঠলে যেন স্বার্থকতা পাবে সোনায় মোড়ানো ট্রফিও।
প্রশ্ন একটাই, মেসি কি পারবেন তার নিজের সঙ্গে কোটি সমর্থকদের স্বপ্নও পূরণ করতে?
তবে শিরোপা জিতেন বা নাই জিতেন, তার ভক্তদের জন্য ২০২২ বিশ্বকাপ হতে চলেছে অনেক আবেগের।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন