জাতীয়
প্রকৃতির ক্ষতি করে এমন প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
প্রকৃতির ক্ষতি করে না এমন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসাথে তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখা ও অপ্রয়োজনীয় সংশোধনী এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা প্রদান করেন। একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি জানান, ২৫৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘উপকূলীয় জলবায়ু সহিঞ্চু শহর’ প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় এলাকা সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। তাই, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট না করে প্রকল্পটি সতর্কতার সাথে বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী কেবল কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বলেছেন-এমন নয়, তিনি মানসম্পন্ন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্যশস্য এবং ফসল উৎপাদন নিশ্চিত করার উপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী গুদামে খাদ্যশস্য মজুদ বাড়ানোর পাশাপাশি খাদ্যশস্য সংরক্ষণে উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দেয়ার নির্দেশ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবারও চলমান প্রকল্প নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন এবং বারবার প্রকল্প সংশোধনী এড়ানোর উপর জোরারোপ করেছেন। তিনি রাজধানীর খালসমূহে স্বাভাবিক জলপ্রবাহ নিশ্চিত করতে খাল মুক্ত রাখার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি এখন নিন্মমুখী, পক্ষান্তরে শ্রম মজুরির সূচক ঊর্ধ্বমুখী। যদিও এটি খুব বেশি সন্তোষজনক নয়, তবে ভাল লক্ষণ।
তিনি বলেন, দেশে এবার আমন ফসলের ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি, যা অবশ্যই সকলের জন্য সুখবর। এটি মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার ক্ষেত্রে সরবরাহ বাড়াবে। তিনি বলেন, লাখ লাখ টন খাদ্যশস্য এখন মাঠে রয়েছে, যা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য-উপাত্ত উদ্বৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গেলো কয়েক বছরে শাকসব্জির উৎপাদন ছয়গুণ বেড়েছে এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ বিভিন্ন খাদ্যশস্য ও ফলমুলের উৎপাদন মূল্যস্ফীতিকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছে।
পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, নভেম্বর মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি আরও কমে আসবে এবং ডিসেম্বর মাসে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে আরও হ্রাস পাবে এবং আগামী মার্চ মাস নাগাদ মূল্যস্ফীতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে মান্নান বলেন, রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। গণমাধ্যম বন্ধুদের বলবো সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। তিনি বলেন, রিজার্ভ নিয়ে গেলো কয়েক বছরে সরকার প্রধান যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তার ফল আমরা পাচ্ছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের জন্য একটি মহল যড়যন্ত্র করছে। তবে, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মামুন-আল রশিদ জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ন্যুনতম জমি অধিগ্রহণ করতে বলেছেন, যাতে কৃষি জমি বাঁচিয়ে রাখা যায়।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন