ইউরোপ
‘ধর্মগুরু’ আস্তানায় ১ হাজার যৌনদাসী, ৬৯ হাজার গর্ভনিরোধক ওষুধ
‘ধর্মগুরু’ রামরহিমের কীর্তির কথা অনেকেই জানেন। সম্প্রতি তাকে প্যারোলে ছাড়া নিয়ে জোর চর্চা হয়েছে। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এল আরও এক ধর্মগুরুর কাহিনী। তবে এই ধর্মগুরু ভারতের নন। তিনি তুরস্কের এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু আদনান ওক্তার। তার বয়স ৬৬ বছর। তিনি হারুণ ইয়াইয়া নামেও পরিচিত। ইস্তানবুলের ফৌজদারি আদালত ওক্তার ও তার ১৩ সহযোগীকে সাড়ে ৮ হাজার বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দিয়েছে সম্প্রতি।
আদনান ওক্তারের রয়েছে এক হাজার সঙ্গিনী যাদের তিনি যৌনদাসী বানিয়ে রাখতেন। তার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় ৬৯ হাজার গর্ভনিরোধক ওষুধ।
খুন, ধর্ষণ, মহিলাদের যৌনদাসী বানিয়ে রাখাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই ধর্মগুরুকেই এ বার ৮ হাজার ৬৫৮ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন দেশটির এক আদালত।
ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনার করার পর ধর্মগুরুর পথ বেছে নেন আদনান। ১৯৮০ সালে এক জন ধর্মগুরু হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি।
ধর্মগুরু হিসেবে কাজ করতে করতেই আদনানসিলর নামে একটি সংগঠন খোলেন এই ধর্মগুরু। পরে ১৯৯০ সালে সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন খুলে মহিলাদের পোশাক নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেন। মহিলাদের জন্য আধুনিক এবং ছোট পোশাক বানিয়ে ব্যবসাতেও নামেন।
গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পেয়েছিল যে, সংগঠনের আড়ালে আদনান অসামাজিক কাজকর্মের একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার পরই ২০১৬ সালে আদনানের বাংলো এবং সংগঠনের দপ্তরে তল্লাশি চালায় তুরস্ক পুলিশ। যদিও সেই সময় কিছু পায়নি তারা।
২০১৭ সালেও ফের তল্লাশি চালায় পুলিশ। তখন ওক্তার কোনও রকমে পুলিশের নাগাল থেকে পালিয়ে যান। তার খোঁজে তল্লাশি জারি রাখে পুলিশ।
সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাবালিকাদের যৌন শোষণ, ধর্ষণ, প্রতারণা, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে উস্কানি এবং চরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৮ সালে ওক্তারকে গ্রেপ্তার করে তুরস্ক পুলিশ।
একটি টেলিভিশন চ্যানেল চালাতেন ওক্তার। ধর্ম নিয়ে জনপ্রিয় টক শো-ও করতেন সেখানে। কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়ার পর এ৯ নামে সেই টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম টাউন্সভিলে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংগঠন চালানোর নামে ওক্তার এক হাজার তরুণীকে জোর করে যৌনদাসী বানিয়ে তাঁদের উপর অত্যাচার চালাতেন। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহিলাদের ত্বকের সমস্যা দূর করার বাহানায় তাদের জোর করে গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ানোর অভিযোগ ওঠে ওক্তারের বিরুদ্ধে। তার বাংলোতে তল্লাশি চালানোর সময় ৬৯ হাজারের বেশি গর্ভনিরোধক ওষুধ পেয়েছিল পুলিশ।
ওক্তারের আশপাশে সব সময় সুন্দরী মহিলারা ঘিরে থাকতেন। আদালতে ওক্তার স্বীকার করেছিলেন, তার এক বা দুই নয়, এক হাজার ‘গার্লফ্রেন্ড’ রয়েছে। ওই মহিলাদের তিনি ‘পোষা বিড়াল’ বলে ডাকতেন।
ওক্তারের সংগঠনে এক সদস্য এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কেউ যদি ওক্তারের সংগঠন ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতেন, তার জীবন নরকে পরিণত করতে দ্বিধাবোধ করতেন না এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ওক্তারের রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল যথেষ্ট মজবুত। ফলে সংগঠন ছেড়ে পালিয়ে কেউ রেহাই পেতেন না।
অপরাধীদের গ্যাং চালানো, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল এবং শারীরিক অত্যাচার-সহ একাধিক অভিযোগে ২০২১ সালে ১০টি আলাদা মামলায় ওক্তারের ১০৭৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে আদালত।
তুরস্কের নির্বাসিত ধর্মগুরুকে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছিল ওক্তারের বিরুদ্ধে।
অবৈধ ভাবে সংগঠন চালানো, শিক্ষা এবং যৌন অধিকার লঙ্ঘন, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, চরবৃত্তি-সহ নানা অভিযোগে এ বছরের ১৭ নভেম্বর ওক্তারকে ৮,৬৫৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে তুরস্কের আদালত।
ওক্তার হলেন তুরস্কের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি যাকে এত বড় সাজা দিল আদালত। এর আগে তুরস্কেরই এক ব্যক্তিকে ৯ হাজার ৮০৩ বছরের জন্য সাজা দিয়েছিল আদালত।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের পক্ষে হাজারো মানুষের মিছিল
যুক্তরাজ্যে বার্মিংহাম, লিভারপুল, শেফিল্ড, ব্রিস্টলে ও লন্ডনসহ আরো বিভিন্ন শহরে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে অভিবাসীদের পক্ষে ও অতি ডানপন্থিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন । খবর ডয়চে ভেলে।
বুধবার ( ৭ আগস্ট ) সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ হাতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামেন। সেখানে বর্ণবাদীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছাড়াও অভিবাসী, শরণার্থী ও যারা আশ্রয় নিতে চান, তাদের স্বাগত জানাবার কথাও বলা হয়েছিল।
মেট্রোপলিটান পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে কয়েক হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তাছাড়া সম্ভাব্য হামলা সামলাবার জন্য এক হাজার তিনশ বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীকে ‘স্ট্যান্ড বাই’ হিসাবে রাখা হয়েছে।
লন্ডনের ফিঞ্চলিতে মিছিলে নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতি দক্ষিণপন্থিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন মিছিলে যোগদানকারীরা। মিছিলকে ঘিরেপূর্ব লন্ডনের একটি অভিবাসন কেন্দ্রর সামনে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানে ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠে। এছাড়াও মানুষ সোচ্চারে বলেন, ‘অভিবাসন কোনো অপরাধ নয়’, ‘অতি ডানপন্থিদের থামানো হোক’।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, যে দাঙ্গা হয়েছে তা সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য নয়, এটা অতি ডানপন্থিদের গুণ্ডামির জন্য হয়েছে।
জেডএস/
ইউরোপ
টিউলিপের পর ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুশনারা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি টিউলিপ সিদ্দিকের পর যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় বাসস্থান, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথানাল গ্রীন বো আসন থেকে টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হওয়া রুশনারাকে।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম ঘোষণার ঘণ্টাদুয়েক পরেই রোশনারা আলীর মন্ত্রীদের সংবাদ প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলীর জন্ম সিলেটে। তার বয়স যখন সাত বছর তখন যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমায় তার পরিবার। তিনি অক্সফোর্ডের সেন্ট জনস কলেজ থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
রোশনারা আলী যুক্তরাজ্যে প্রথম বাংলাদেশি এমপি হিসাবে নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছিলেন। যুক্তরাজ্যে বাঙালির জয়যাত্রা নিয়ে উঠে আসে রোশনারা আলীর নাম। এরপর টিউলিপ সিদ্দিক, রূপা হক, আপসানা বেগমসহ চার বাঙালি এমপি পেয়েছে বাঙালি কমিউনিটি।
গেলো সপ্তাহে (৪ জুলাই) অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি থেকে টানা পঞ্চমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন রুশনারা আলী। তিনি ২০১০ সাল থেকে চলতি বছর পার্লামেন্ট বাতিল করা পর্যন্ত বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো-এর সংসদ সদস্য (এমপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন সদস্য।
২০১০ থেকে আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রুশনারা আলী। এরপর তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে ছায়া শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন।
জেএইচ
ইউরোপ
গিনেস বুকে বিশ্বের দীর্ঘতম বাইসাইকেলের নাম লিখালো ৮ প্রকৌশলী
এতোদিন বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির রেকর্ড দখলে রেখেছিলো অস্ট্রেলিয়ার বার্নি রায়ান। তিনি ২০২০ সালে ১৫৫ ফুট দীর্ঘ ৮ ইঞ্চি চওড়া সাইকেল বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলো গোটা বিশ্বকে। এবার নেদারল্যান্ডসের ৭ জন প্রকৌশলীকে সঙ্গে করে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ইভান শাল্ক। নতুন বাইসাইকেলটি ১৮০ ফুট লম্বা, ১১ ইঞ্চি চওড়া।
চাকা আবিষ্কারের অন্যতম সেরা প্রাপ্তি হল বাইসাইকেল। দূষণে জর্জর পৃথিবীতে এর চেয়ে উপকারী যান আর হয় না। তাই বলে ১৮০ ফুট লম্বা বাইসাইকেল কে দেখেছে? দুই বা খুব বেশি হলে তিন চাকার (সার্কাসের কুশীলবরা চালান) সাইকেলই সাধারণত নজরে পড়ে। কিন্তু ৩৯ বছরের ইভান শাল্ক হৃদয়ের অন্তঃপুরে লালন করছিলেন ব্যতিক্রমী ইচ্ছে।
শৈশব থেকেই গিনেস বুকে নাম তোলার প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। এর ফলে জন্ম হলো বিশ্বের দীর্ঘতম সাইকেলের। আদৌ কি চলে এই দু-চাকার যান?
২০১৮ সালে দীর্ঘতম সাইকেল তৈরির কাজ শুরু করেন ইভানসহ আট ইঞ্জিনিয়ার। তবে চাইলেই এই সাইকেল নিয়ে পথেঘাটে নামা যাবে না। বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে সাইকেলটির বিরাট দৈর্ঘ্যই।
ইতোমধ্যে নেটিজেনদের মন জয় করেছে ইভানের সাইকেল। আজব ‘সৃষ্টি’ ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়। এই বিষয়ে ইভান বলেন, ‘অন্যরা যখন আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করে, আমরা তখন সৃষ্টিশীল কাজে মগ্ন থাকি।’
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন