ফুটবল
আমি অসম্ভবের পুত্র: নেইমার
দেশের হয়ে স্বদেশি কিংবদন্তি পেলের চেয়ে মাত্র দুই গোলে পিছিয়ে রয়েছেন নেইমার জুনিয়র। ব্রাজিলের জার্সিতে নিবেদনে কখনই কমতি দেখা যায়নি এই তারকার। তবে দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পান তিনি। তাই তো মাঠ থেকে বের হওয়ার সময় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটছিলেন তিনি। এমনকি সাইডবেঞ্চে বসে জার্সি মুখে চেপে নীরবে চোখের পানি ফেলছিলেন পিএসজির এই তারকা।
নেইমারের ইনজুরি কতটা গুরুতর সেটি এক্স-রে করানোর পর জানা যাবে। এজন্য ফলাফল পেতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বলেছেন ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লেসমার। ব্রাজিল কোচ তিতেও নেইমারকে পেতে বেশ আশাবাদী।
তবে কঠিন এই সময়ে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না ব্রাজিলের হেক্সা মিশনের স্বপ্ন সারথী নেইমার। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেইজে এবারের বিশ্বকাপে নিজ দেশের জাতীয় সঙ্গীতের সময়কার একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। যেখানে একরাশ হতাশা আর না পাওয়ার কষ্টের আবেগী বার্তা দিয়েছেন তিনি।
নেইমার বলেন,‘এই শার্টটি (জার্সি) পরে আমি যে গর্ব এবং ভালোবাসা অনুভব করি তা বর্ণনাতীত। ঈশ্বর যদি আমাকে জন্মের জন্য একটি দেশ বেছে নেয়ার সুযোগ দেন, তা হবে ব্রাজিল।
আমার জীবনে কিছুই সহজ ছিল না। আমাকে সবসময় আমার স্বপ্ন এবং আমার লক্ষ্যগুলোকে তাড়া করতে হয়েছে। কখনও কারো ক্ষতি কামনা করিনি বরং যাদের দরকার তাদের সাহায্য করেছি।
আজ আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তগুলোর মধ্যে একটি… এবং আবারও একটি বিশ্বকাপে। আমি ইনজুরিতে পড়েছি। হ্যাঁ, এটা বিরক্তিকর, এটি কষ্ট দেয়। তবে আমি নিশ্চিত যে আমি ফিরে আসার সুযোগ পাব। কারণ আমি আমার দেশ, আমার সতীর্থ এবং নিজেকে সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
শত্রুরা আমাকে এভাবে বিধ্বস্ত করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করবে? কখনই না! আমি অসম্ভবের পুত্র এবং আমার বিশ্বাস অসীম।’
অসীম প্রতিভা নিয়ে তার উদয় হয়েছিল বিশ্ব ফুটবলে। এমনকি সময়ের অন্যতম সেরা লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে তুলনা হয় তার প্রতিনিয়তই। আর তিনি হলেন লাতিন আমেরিকার ব্রাজিলের ফুটবল দলের নেইমার জুনিয়র। ‘পোষ্টাররয়’ বলা হয় তাকে। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম আসরেই ইনজুরিতে পড়েন নেইমার। সৃজনশীলতার প্রতিফলনের আগেই যেন মাঠেই চাপা পড়ে গেছে সেলেসাও এই তারকার।
দীর্ঘ ২০ বছরের শিরোপা খরা ঘুচানোর স্বপ্ন নিয়েই কাতার বিশ্বকাপে এসেছিল ব্রাজিল। নেইমারকে ঘিরেই হেক্সা মিশনের পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন কোচ তিতে। কিন্তু চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই গোড়ালির চোটে পড়ে গেলেন ৩০ বছরের এই তারকা। ফলে গ্রুপপর্বের বাকি দুই ম্যাচে তো খেলতে পারবেনই না, শেষ হয়ে যেতে পারে পুরো বিশ্বকাপটাই!
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালেও ঘরের মাটিতে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে পিঠের চোটে পড়েছিলেন নেইমার। পরে সেমিতে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গিয়েছিল ব্রাজিলের। এবার কাতার বিশ্বকাপেও কি নেইমার বাদ পড়বেন। নাকি নকআউট পর্বে ব্রাজিল জায়গা করে নিলে মাঠে ফিরতে পারেন তাই এখন দেখার বিষয়।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন