ফুটবল
স্বপ্ন রক্ষায় আজ মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা
একটি মুমূর্ষু দলকে আইসিইউ থেকে টেনে তুলে নিজেই বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ নতুন করে শুরু হলো।’ মেসির সেই কথা ধরেই আজ আর্জেন্টিনার পুনর্জন্মের নবযাত্রা শুরু।
আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।
জিততেই হবে, ড্র করলে হয়তো চলবে; কিন্তু ‘হার’- জিভ কেটেও তা মুখে আনলেন না মিডিয়া সেন্টারে পাশে বসা আর্জেন্টাইন সাংবাদিক। কিন্তু মানতে তাকে হচ্ছেই যে মেসিরা পড়েছেন ‘জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘে’র সামনে।
এ যাত্রায় যদি ড্র করে পরের রাউন্ডে পৌঁছানোও যায়, সেখানে দাঁড়িয়ে এমবাপ্পের ফ্রান্স। তাই ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলেই শুধু এড়ানো যাবে ফরাসিদের। আর হেরে গেলে তো সব অঙ্কের বাইরে, শুধুই সাদা খাতা পড়ে থাকবে!
গতকাল সাংবাদিকদের সামনে আসা আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনির কাছে প্রথম প্রশ্নই রাখা হয়- শুনতে পাচ্ছি আজও আপনি প্রথম একাদশে লাউতারো মার্টিনেজকে খেলাবেন? উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা সময়ই নিতে হলো স্কালোনিকে। ‘আমি আমাদের খেলার স্টাইলে বদল আনার পক্ষে নই। আজ স্কোয়াডে থাকা সবারই সম্ভাবনা থাকবে একাদশে থাকার।’ আসলে আগের দুই ম্যাচে কোনো গোল করতে পারেননি লাউতারো।
কাতারে আসা মেসির স্বদেশিদের কাছে খবর আছে, বিশ্বকাপের আগে ক্লাব ফুটবলেই ইনজুরিতে পড়েছিলেন লাউতারো। গোড়ালির সেই চোট সেরে না ওঠার পরও কোচের বিশেষ আস্থায় তাঁকে খেলানো হচ্ছে। এদিন স্কালোনিকে তাই অনেক কড়া কথাই শুনতে হলো। ‘আমরা কি জানতে পারি, দলের সঙ্গে পাওলো দিবালা রয়েছেন কিনা? তাঁর অবস্থা এখন কী? তিনি কি দলের সদস্য হিসেবে আছেন এখনও? আসলে আজকের ম্যাচে দিবালাকে খেলানোর জোর দাবি উঠেছে আর্জেন্টাইন মিডিয়াতে।
প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড ইউরোপিয়ান দল। তাদের খেলার ধরণ অবশ্য মেক্সিকোর মতো হবে না। সেদিন ডিফেন্সে পাঁচজন নিয়ে খেলতে নেমেছিল মেক্সিকো। আজ কিন্তু পোল্যান্ডেরও জয় ছাড়া ভিন্ন পথ নেই। তাই তাদের ফরমেশনে নিশ্চয়ই পাঁচ ডিফেন্ডার থাকবে না। তা ছাড়া যে দলে রবার্তো লেভানডভস্কির মতো ক্ষিপ্রতাসম্পন্ন তারকা রয়েছেন, সেই দলের সামনে আর্জেন্টিনাকেও নিশ্চয় অন্যভাবে ভাবতে হবে। পোল্যান্ড যে ইউরোপিয়ান দল, তাও বারবার যেন মনে করিয়ে দেওয়া হলো কোচ স্কালোনিকে। তাতে খুব বেশি টলানো গেল না তাঁকে। আর্জেন্টিনা কোচের সেই একই কথা- ‘আমরা আমাদের কম্বিনেশন থেকে সরে আসব না। এটা ঠিক যে, মেক্সিকোর বিপক্ষে ওই জয়টি আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ইমোশনালিও আমরা অনেক অ্যাটাচড হয়ে গিয়েছিলাম। ভরসা রাখুন, পোল্যান্ডের বিপক্ষেও আমরা ভালো করব।’
সংবাদ সম্মেলনে এসে কে-ই বা কবে বলেছেন, আমরা খারাপ করব। আসলে কোচের এই লাউতারো মার্টিনেজের ওপর একক ভরসা ঠিক মেনে নিতে পারছেন না কেউ। তবে বদলের একটা ইঙ্গিত তিনি দিয়েছেন এই বলে, ‘এখনও হাতে সময় আছে, সেরা একাদশ কেমন হবে, তা নিয়ে বসব মেসির সঙ্গে। এমনিতে যে ধারণা করা হচ্ছে, তাতে আজও ৪-৩-৩ ফরমেশনেই মাঠ সাজাবে আর্জেন্টিনা। সেখানে লাউতারোই থাকবেন সবার ওপরে। তাঁর পেছনে মেসি আর ডি মারিয়া। মাঝমাঠে ফার্নান্দেজ, ডি পল ও পারাদেস। ডিফেন্সে ওতামেন্ডি, লিসান্দ্রো মার্টিনেজ, মোলিনা ও মার্কোস অ্যাকুনা।
পোল্যান্ডের কাউন্টার অ্যাটাকের কথা মাথায় রেখে ডিফেন্সে জোর দিতে হচ্ছে, যেটা লিসান্দ্রো মার্টিনেজও স্বীকার করেছেন। ‘এমনিতে ইউরোপের দলগুলোর সঙ্গে খেলা থাকলেই তাদের গতির ওপর আমাদের বাড়তি নজর দিতে হয়। যে কোনো কাউন্টার অ্যাটাকের সুযোগ তারা কাজে লাগাতে চাইবে। আমি ধরেই নিয়েছি, মেক্সিকো ম্যাচের মতো হবে না এই ম্যাচটি।’ এমনিতে রাত জেগে লা লিগা দেখা দর্শকদের কাছে এই ম্যাচের অন্য মাত্রা রয়েছে। মেসি বনাম লেভানডভস্কি- বার্সার সাবেক বনাম বর্তমান! ম্যাচের আগে লেভানডভস্কির মুখ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। তবে যেদিন বিশ্বকাপের গ্রুপগুলোর ড্র হয়, সেদিন তিনি শুনিয়েছিলেন, ‘আর্জেন্টিনার সঙ্গে ওই ম্যাচটির জন্য এখন থেকেই দিন গুনব। মেসি গ্রেট খেলোয়াড়, আর্জেন্টিনা দলও ফর্মে রয়েছে। সেদিন দারুণ এক ম্যাচ হবে নিশ্চিত।’
লেভানডভস্কি যেদিন কথাগুলো বলেছিলেন, সেদিন সত্যিই সবকিছু রৌদ্রোজ্জ্বল ছিল। এখন সেখানে মেঘে ঢাকা আকাশে হঠাৎ উঁকি দেয় সূর্য! আজ তারই অপেক্ষায় আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। যাঁদের জন্য কাল লিসান্দ্রো মার্টিনেজের একটি আকুতি ছিল। ‘গ্যালারিতে, দেশের বাইরে সারাবিশ্বে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের আবেগ আমরা বুঝতে পারি। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা দেখেছি, দলের হার-জিতে কতটা আবেগ আপ্লুত হন তাঁরা। আপনারা সঙ্গে থাকুন, বিশ্বাস রাখুন। আমরা জিতব।’
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন