ফুটবল
রোনালদোকে টপকে আরও এক রেকর্ড গড়লেন মেসি
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে লিওনেল মেসির যুদ্ধ প্রায় দেড় দশক দীর্ঘ। দু’জনের সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপেও দেখা মিলেছে সেই দ্বৈরথের। এবার পর্তুগিজ মহাতারকার এক বিশ্বকাপ রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন মেসি, যেটা আবার চলতি বিশ্বকাপেই গড়েছিলেন রোনালদো।
শেষ কিছুদিনে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো কিছুটা রঙ হারিয়েছেন। তবে বিশ্বকাপে ঠিকই কেড়ে নিয়েছেন আলো। ঘানার বিপক্ষে পর্তুগালের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই হয়েছেন ম্যাচসেরা, জানান দিয়েছেন ‘আমি এখনো ফুরিয়ে যাইনি’। সেই ম্যাচসেরার পুরস্কারটা রোনালদোর ঝুলিতে গিয়েছিল এ নিয়ে সপ্তম বারের মতো। গড়ে ফেলেছিলেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার রেকর্ড।
মেসি সেই রেকর্ডটাই ভেঙে দিয়েছেন কাল। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) আহমাদ বিন আলী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টাইন মহাতারকা প্রথমার্ধে করেছেন দারুণ এক গোল। এছাড়াও পুরো ম্যাচেই আলো ছড়িয়েছেন।
৫৮টা পাস খেলেছেন, যার ৯০টিই নির্ভুল, ১০টা পাস খেলেছেন ফাইনাল থার্ডেও। প্রতিপক্ষ বক্সে বল ছুঁয়েছেন ৯ বার, যা এই ম্যাচে সবচেয়ে বেশি। এখানেই শেষ নয়, ম্যাচে সবচেয়ে বেশি শট (৬), বড় সুযোগ তৈরি (২) করেছেন এই মেসিই। ‘ডার্টি জবও’ করেছেন বৈকি! দু’বার ফাউলের শিকার হয়েছেন, একটা ট্যাকল করেছেন প্রতিপক্ষকে। মোদ্দাকথা, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের এই লড়াইয়ে অলরাউন্ড পারফর্ম্যান্সই উপহার দিয়েছেন মেসি।
তাতেই তিনি বনে গেছেন ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়। গড়ে ফেলেছেন রেকর্ডটাও। রোনালদোর সাত ম্যান অফ দ্য ম্যাচ ছাপিয়ে মেসি পৌঁছে গেছেন বিশ্বকাপে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হওয়ার দিক থেকে অনন্য অবস্থানে, বর্তমানে তার ম্যাচসেরার পুরস্কার আছে ৮টি। ৬ বার ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়ে এই তালিকার তিনে অবস্থান করছেন আরিয়েন রবেন।
এই ম্যাচে অবশ্য এই এক দিক থেকে রোনালদোকে ছাড়িয়ে যাননি মেসি। গোলের দিক থেকেও পর্তুগিজ কিংবদন্তিকে ছাড়িয়েছেন তিনি। বর্তমানে মেসির বিশ্বকাপ গোলের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ৯-এ। রোনালদোর বিশ্বকাপে গোল ৮-টি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে গোলের পর চলতি বিশ্বকাপে মেসির গোলের সংখ্যা দাঁড়াল ৩। তাতে করে গোল্ডেন বুটের দৌঁড়ে আবারও তিনি চলে এসেছেন শীর্ষে। তবে তার সঙ্গে সমতায় আছেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে, ইংল্যান্ডের মার্কাস র্যা শফোর্ড, নেদারল্যান্ডসের কোডি গ্যাকপো। ইকুয়েডরের অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়ার গোলও তিনটি, তবে বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছে তার দল। ওদিকে রোনালদো এই বিশ্বকাপে গোল পেয়েছেন মোটে একটি।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন