ফুটবল
এক ভয়াল সুন্দর ব্রাজিল!
শুধু পাঁচ বিশ্বকাপ জেতার জন্য নয়, এমন মোহনীয় মুহূর্তের জন্যই ব্রাজিল অনন্য। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে যে নেইমার, ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রিচার্লিসন, রাফিনিয়ারা যে নান্দনিক ফুটবল উপহার দিয়েছে, তা দেখে ধারাভাষ্যকার কেন ফুটবল-ভক্ত মাত্রই মুগ্ধ হতে বাধ্য।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় নাইন সেভেন ফোর স্টেডিয়ামে ব্রাজিল ৪-১ গোলে জিতেছে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে।
পুরো ম্যাচে নয় অবশ্য, ব্রাজিল ছড়ি ঘুরিয়েছে প্রথম ৪৫ মিনিটে, শুরুর অর্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। আক্রমণ শানিয়েছে মুহুর্মুহু। সেসব বাদ, শুধু গোলগুলোর দিকেই তাকান!
শুরুর গোলে রাফিনিয়া ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠলেন লুকাস পাকেতার সঙ্গে দারুণ একটা ওয়ান-টু খেলে। বক্সের জটলায় মাঝ দিয়েই বলটা পাঠালেন ভিনিসিয়াসের কাছে। রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড সেটা আয়ত্বে নিলেন, একটু অপেক্ষা করলেন, এরপর ঠাণ্ডা মাথায় করলেন শট, যেটা কোরিয়ান রক্ষণ তো বটেই, গোলরক্ষক কিম সিউং-গিউরও ধরার উপায় রইল না।
৬১ মিনিটে রাফিনহা গোলের সহজ সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন। না হলে ব্রাজিল আরও একটি গোল পেতে পারত। ৬৭ মিনিটে ব্রাজিলের গোলের সামনে পাঁচবার আক্রমণ চালিয়েও গোল আদায় করতে পারেনি দ. কোরিয়া। ব্রাজিলের গোলরক্ষক অ্যালিসন এবং রক্ষণভাগের কল্যাণে তখন গোল হয়নি।
তবে ৭৫ মিনিটে একমাত্র গোলের দেখা পেয়েছিল দ. কোরিয়া। পাইক সেউং-হোর গোলটি হয়তো হারের ক্ষততে একটুখানি সান্তনার প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। অবশ্য ৭৯ মিনিটে আবারও দুর্দান্ত সেভ করে কোরিয়ানদের গোল বঞ্চিত করেন অ্যালিসন। শেষ পর্যন্ত ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল।
ব্রাজিলের বিপক্ষে অসহায় মনে হচ্ছিল দক্ষিণ কোরিয়াকে। শেষ পর্যন্ত এই চারটি গোল নিয়েও একটি গোল হজম করে মাঠ ছাড়ে সেলেসাওরা।
পেলের শুভকামনা বিফলে যায়নি। হেক্সা মিশনে আরও কাছাকাছি চলে গেছে তার উত্তরসূরিরা। গ্রুপ পর্বে ক্যামেরুনের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত হারের পর এমন পারফরম্যান্স খুবই প্রয়োজন ছিল ব্রাজিলের জন্য। সেটা তো তারা করেছেই, বিশ্বকাপের বাকি প্রতিপক্ষদেরও একটা বার্তা দিয়ে রাখল তারা। নেইমার-রিচার্লিসনদের ভয়ঙ্কর এ ব্রাজিলকে রুখবে কে, এমন প্রশ্নও এতক্ষণে উঠে গেছে!
আগামী ৯ ডিসেম্বর রাত ৯টায় কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন