ফুটবল
জাপানি উৎসব থামিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া
বিশ্বকাপে জার্মানিকে হারিয়ে শুরু, এরপর স্পেনকে হারিয়ে মৃত্যুকূপ থেকে রীতিমতো গ্রুপের সেরা হয়েই নকআউটে এসেছিল নীল সামুরাইরা। ক্রোয়েশিয়াকেও দারুণ চোখরাঙানিই দিচ্ছিল হাজিমে মরিয়াসুর দল, এগিয়ে গিয়েছিল শুরুতেই।
তবে এরপরই ক্রোয়াটরা ফিরল ম্যাচে। খেলাটা গেল টাইব্রেকারে, কাতার বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো; সেখানেই থামল জাপানি উৎসব।
৩-১ গোলে শেষ হাসি হাসল শেষ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টরা। জাপানের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে নিশ্চিত করে ফেলল প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনাল।
বড় প্রতিপক্ষ সামনে পেলেই জাপান জ্বলে ওঠে, গ্রুপ পর্বে জার্মানি আর স্পেন সেটা টের পেয়েছে ভালোভাবেই। সেটা সোমবারেও (৫ ডিসেম্বর) দেখা গেল। শুরুতে অবশ্য ক্রোয়েশিয়াই নিয়ন্ত্রণ করছিল ম্যাচটা, তবে সময় গড়াতেই জাপান চলে আসে দৃশ্যপটে। পেয়ে যায় গোলের দেখাও। রিতসু দোয়ানের বাড়ানো ক্রসে মায়া ইয়োশিদা মাথা ছুঁয়ে গিয়ে পড়ে দাইজেন মায়েদার কাছে, জাপানকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি সেল্টিকের এই স্ট্রাইকার।
গোলটা করেই যেন ভুলটাও করে বসল জাপান। হ্যাঁ, ভুলই। নিজেদের শেষ সাত ম্যাচে শুরুতে গোল করে ৪ ম্যাচে হেরেছে নীল সামুরাইরা। বিশ্বকাপের নকআউটে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচ জেতার রেসিপি ক্রোয়াটদেরও অজানা নয়। গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেই যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচটা বের করে নিয়েছিল দলটি!
বের করে নিল আজও। গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন যিনি, সেই ইভান পেরিসিচ এগিয়ে এলেন আজও। তার গোলেই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সমতায় ফেরেন লুকা মড্রিচরা।
এরপর জয়সূচক গোলের চেষ্টা চালিয়েছে দুই দল। তবে আলোর মুখ দেখেনি তার কোনোটিই। ফলে খেলাটা গড়ায় যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে, কাতার বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো। সেখানেও দেখা মিলেছে একই দৃশ্যের। মুহুর্মুহু আক্রমণ গিয়ে মাথাকুটে মরেছে দুই দলের বিপদসীমায়। অবধারিতভাবেই খেলাটা গড়ায় পেনাল্টি শুট আউটে।
পুরো ম্যাচে দাঁতে দাঁত চেপে জাপানকে রুখে দেওয়া ক্রোয়াট গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ টাইব্রেকারেও দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেন যেন। তাকুমি মিনামিনোর পেনাল্টি ঠেকিয়ে শুরুটা করেন তিনি। এরপর কাওরো মিতোমার চেষ্টাও রুখে দেন। ওপাশে নিকোলা ভ্লাসিচ আর মার্সেলো ব্রজভিচ গোল করে ক্রোয়াটদের এগিয়ে দিয়েছিলেন ২-০ গোলে।
এই অবস্থা থেকে জাপানকে জিততে হলে অভাবনীয় কিছুই করে বসতে হতো। তাকুমা আসানো গোল করে নিজের কাজটা করে রেখেছিলেন, ওপাশে মারকো লিভাজা পেনাল্টিতে ব্যর্থ যখন হলেন, জাপান সেই অভাবনীয় কিছুর আশাই করে বসেছিল।
তবে সে আশাটা মিলিয়ে যেতেও সময় নিল না তেমন। চতুর্থ শট নিতে আসা মায়া ইয়োশিদার পেনাল্টি ঠেকান লিভাকোভিচ। ওপাশে মারিও পাসালিচ গোলটা পেতেই ক্রোয়েশিয়া চলে যায় শেষ আটে, টানা দ্বিতীয় বারের মতো। আর জাপান টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে গিয়েও জিততে ব্যর্থ হয়ে বিদায় নিল দলটি। গেল বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে ২-০ গোলে এগিয়েও ৩-২ গোলে হারের গ্লানি নিয়ে বিদায় নিয়েছিল। তবে এবারের আফসোসটা হয়তো বেশিই হবে কোচ মরিয়াসুর, ম্যাচটা জেতা থেকে যে মাত্র তিনটা পেনাল্টির দূরত্বে ছিল তার দল!
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন