ফুটবল
দুর্দান্ত জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা
দীর্ঘ ১৬ বছর আগে শেষবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছিল পর্তুগাল। কাতার বিশ্বকাপে এসে সেই আক্ষেপ মোচন করল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোরা।
শেষ ষোলোর লড়াইয়ে সুইজারল্যান্ডকে নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেছে পর্তুগিজরা। সুইসদের ৬-১ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে কোয়ার্টারে উঠেছে ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হয় পুর্তগাল।
বিশ্বকাপ অভিষেকেই গনসালো রামোসের হ্যাট্রিকের সুবাদে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬-১ ব্যবধানের বড় জয় পেয়েছে পর্তুগাল। রামোস ছাড়াও গোল পেয়েছেন পেপে, রাফায়েল গুরেইরো ও রাফায়েল লিয়াও। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেঞ্চে বসিয়ে এদিন ম্যাচ খেলতে নামে পর্তুগিজরা। রোনালদোর জায়গায় রামোসকে খেলানো যে আজ ফার্নান্দো সান্তোসের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর, রামোসের এ হ্যাট্রিক জায়গা করে নিয়েছে রেকর্ডবুকে। এটি কাতার বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাট্রিক।
ম্যাচের শুরুতেই পর্তুগালকে এগিয়ে নেন রোনালদোর পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া গনসালো রামোস। গোল পেয়ে যেন আরো উজ্জীবিত হয়ে উঠে ব্রুনো ফার্নান্দেজরা। একের পর এক আক্রমণে সুইস ডিফেন্ডারদের পরীক্ষা নিতে থাকেন পর্তুগিজরা। ম্যাচের ২১ মিনিটেই আবারও এগিয়ে যেতে পারত তারা। তবে ওতাভিউর লক্ষ্যভ্রষ্ট শট সুইজারল্যান্ড গোলরক্ষকের ফিরিয়ে দেন।
বল দখলে নিয়ে পালটা আক্রমণে যায় সাকিরির দল। ৩০ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় সুইসরা। তবে সাকিরির নেওয়া সেই শট অল্পের জন্য পর্তুগালের জালে জড়ায় নি। আক্রমণের ধার বাড়ানো সুইজারল্যান্ডের জালে উল্টো ম্যাচের ৩৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোল দিয়ে বসে পর্তুগাল। দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন ৩৯ বছর বয়সী পেপে। আর তাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় সান্তোসের শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধে যেন পুরো পাল্টে গেল পর্তুগিজদের চিত্র। প্রথমার্ধের চেয়ে আরো বেশি চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে ব্রুনো ফার্নান্দেজরা। ধারাবাহিক আক্রমণে পর্তুগালকে আবারও এগিয়ে নেন রামোস। ম্যাচের ৫১ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোলের দেখা পান বেনফিকার এই ফরোয়ার্ড। রামোসের দেখানো পথে হাঁটেন বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের তারকা রাফ্যাল গুরেইরা। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে পর্তুগিজদের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন তিনি। ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়া সুইজারল্যান্ড ৫৮ মিনিটে আকাঞ্জির নৈপুণ্যে প্রথম গোলের দেখা পায়।
তবে পর্তুগালের দিনে একেবারেই বিবর্ণ ছিল সাকিরির দল। একটি গোল করে ম্যাচে ফেরার আভাস দিলেও উল্টো আরো দুইটি গোল হজম করে সুইসরা। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিকের দেখা পান গনসালো রামোস। ৫-১ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচ শেষ করার পথে এগিয়ে যাওয়া পর্তুগাল ৯০ মিনিটে আরো একটি গোলের দেখা পায়। ফলে ৬-১ গোলের বড় জয়ে কোয়ার্টারের টিকিট নিশ্চিত করে সান্তোসের দল।
পর্তুগালের এমন পারফরম্যান্স দেখে দুশ্চিন্তায় পড়তে পারে মরক্কো। কোয়ার্টার ফাইনালে রামোস–রোনালদোরা যে তাদের প্রতিপক্ষ!
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন