আমদানি-রপ্তানি
রোজায় জরুরি ভিত্তিতে রিজার্ভ থেকে ডলার প্রয়োজন: এফবিসিসিআই
আসন্ন পবিত্র রমজান মাস ও ঈদকে কেন্দ্র করে আমদানিতে বাণিজ্যিক ঋণপত্র (এলসি) খুলতে অগ্রাধিকার চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, রমজানে শুধু ৮ পণ্য নয়, এর বাইরেও অনেক আমদানি পণ্য রয়েছে। রমজানের পর ঈদ আসবে। এসব দিক বিবেচনায় এলসি খোলায় যাতে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় এজন্য জরুরি ভিত্তিতে রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার সহায়তার কথা বলেন তারা। একই সঙ্গে আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের এক রেট দাবি করেন তারা।
আজ সোমবার (১২ ডিসেম্বর) সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সভা শেষে এসব দাবির কথা জানায় এফবিসিসিআই। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে এলসি সহজ করে সার্কুলার জারি করেছে। তবে এ ৮ পণ্যের বাইরে আরও পণ্য আছে। কারণ, রোজার পরই তো ঈদ আসছে। সেক্ষেত্রে আরও অনেক পণ্য আমাদানির প্রয়োজন পড়বে। আবার অনেক ব্যবসায়ী এলসি খুলতে পারছেন না। এক্ষেত্রে এলসি খোলা সহজ করতে জরুরিভিত্তিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তা দিতে হবে।
তিনি বলেন, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণ সুবিধা বাড়াতে হবে। ইডিএফ যেটা ১৮০ দিন মেয়াদ আছে, সেটা ২৭০ দিন করার কথা বলেছি। আমরা গ্যাস-জ্বালানি সমস্যায় আছি, কারখানা চালাতে পারছি না। কারখানা চালাতে না পারলে শ্রমিকের বেতন দিতে পারবো না। যেখানে আমি এলসির সমস্যায় পড়ে কাঁচামাল আমাদানি করতে পারছি না, সেখানে ঋণ পরিশোধ কীভাবে করবো? এজন্যই আমরা আগামী জুন মাস পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি।
এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, আমাদের আমদানিতে ডলারের দাম ১০৫ টাকা পড়ছে, যেখানেও রপ্তানিতে ১০১ টাকা। আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ডলারের অভিন্ন দরের কথা বলেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
সুদহারের ক্যাপ তুলে নেয়ার বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সুদহার কম হলে বিনিয়োগ বাড়ে। আমরা মনে করি আগামী এক বছর সুদহারের ক্যাপ না তোলার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, করোনাপরবর্তী সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এখন ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। এলসি খুলতে পারছেন না অনেকে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে নতুন বিধিনিষেধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে ঋণের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আগামী ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো কথা জানিয়েছি। বাংলাদেশ ব্যাংকও বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, করোনা ঊর্ধ্বমুখী সময়ের মতো নীতি সহায়তা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যার কারণে এটা চেয়েছেন, নিয়মিত লোনের জন্য এটা। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতির স্বার্থে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বিষয়টি। এলসি খোলায় যাতে সমস্যা না হয় এজন্য ৮ পণ্যের বিষয়ে সার্কুলার হয়েছে, প্রয়োজনে বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ডলার সরবরাহের কথা যেটা বলা হয়েছে, সেখানে আমাদের রেমিট্যান্স বেড়েছে। আগামীতে ঈদ আছে, রেমিট্যান্স সরবরাহ আরও বাড়াবে ব্যাংকগুলোর। ব্যাংকগুলো নিজেরাই এলসি খুলছে এবং তারা সেটেলমেন্ট (নিষ্পত্তি) করছে। আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের একদর করার কথা বলা হয়েছে। আমরা কিন্তু ধীরে ধীরে সেদিকেই যাচ্ছি। আর সুদহারের ক্যাপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। ক্যাপ তুলে নিলেতো সার্কুলার হবে, সেটা হয়নি। এফবিসিসিআইয়ের সিদ্ধান্তগুলো আমরা দেখবো, তবে এখনি এসব বিষয়ে বলা যাচ্ছে না।
অর্থনীতি
একমাসে পায়রা বন্দরে রাজস্ব আয় অর্ধশত কোটি টাকা
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দেশের আমদানি রপ্তানিতে স্থবিরতা বিরাজ করলেও। ব্যতিক্রম ছিল পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্র বন্দর। চলতি মাসে মোট ৮টি জাহাজ বন্দরে পণ্য খালাস করেছে। যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে অর্ধশত কোটি টাকা।
গেলো বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) পায়রা সমুদ্র বন্দরে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল আব্দুল্লাহ আল-মামুন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, সবশেষ বন্দরের ইনার এ্যাঙ্করে নিরাপদে কয়লা খালাস করছে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া সেই জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। এ কয়লা দিয়েই সচল রয়েছে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান জানান, গেলো ১৮ জুলাই থেকে বন্দরে সি স্পিরিট এবং এমভি আব্দুল্লাহ নামে দুটি মাদার ভেসেল পায়রা বন্দরে আগমন করেছে। এছাড়া ১৯ জুলাই এমভি ব্রাইট নামে একটি জাহাজ কয়লা খালাস করে বন্দর ত্যাগ করেছে।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান, সরকারের জারি করা কারফিউয়ের মধ্যেও বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন। শ্রমিকদের নিরাপত্তা সহ বন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় বন্দরের ৩১ জন নিরাপত্তাকর্মী, ৪৮ জন আনসার সদস্য এবং নৌ বাহিনীর ৪২ জন সদস্য কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, বন্দর সচল রাখতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এখন পর্যন্ত বন্দরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আই/এ
আমদানি-রপ্তানি
২৬০ কোটি টাকার এমওপি সার কিনবে সরকার
কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন থেকে দুই লটে ৮০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। সার ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ২৬০ কোটি ০৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এ সার আমদানি করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়৷
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের (সমন্বয় ও সংস্কার) সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান জানান,৩য় লটে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় এ সার আনতে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি টনের দাম পড়বে ২৭৫.৫০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া চতুর্থ লটে ৪০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রতি টনের দাম পড়বে ২৭৫.৫০ মার্কিন ডলার।
আই/এ
অর্থনীতি
রপ্তানি আয়ের গরমিল নিয়ে যা বললেন সালমান এফ রহমান
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সমন্বয়ের অভাব আছে। ইপিজেড থেকে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হয়েছে, ইপিবি তা ডাবল গণনা করায় রপ্তানি আয়ের তথ্যে গরমিল হয়েছে। বললেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
রোববার (৭ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাজই হচ্ছে যারা বেশি রাজস্ব দেয় তাদের ওপর আরও ট্যাক্সের বোঝা চাপানো। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এনবিআরকে ডিজিটালাইজড করা গেলে এ প্রবণতা কমবে।
গেলো ৩ জুলাই ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর এতে পরিষ্কার হয় ইপিবি দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি আয় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়েছে। এনবিআরের সংশোধিত পদ্ধতিতে গেলো অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণের তথ্যে এ প্রমাণ মেলে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৮০ শতাংশ কম। অথচ ইপিবি বলছে, এপ্রিল পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ, পণ্য জাহাজীকরণেই পার্থক্য ১৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন