ফুটবল
ক্রোয়েশিয়াকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে দুর্দান্ত আর্জেন্টিনা
২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের পর আবারো মেসির সামনে সুযোগ আসলো বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের। দুর্দান্ত মেসি যেভাবে আগাচ্ছেন তাতে বোধহয় ভাগ্যদেবতা তার দিকে মুখ তুলে তাকাতেও পারেন। ৮৮ হাজার দর্শকের মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি ছিলেন মেসি ভক্তরাই। ৩-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছে যে!
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের পুরো সময় বল দখলে এগিয়ে থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল আর্জেন্টিনা।
শেষ ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে আর্জেন্টিনা। সেবার অবশ্য ট্রফি ছোঁয়া হয়নি। জার্মানির কাছে হেরে ভেঙে যায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। ৮ বছর বাদে আরেকবার ট্রফি ছোঁয়ার মহারণে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
পুরো ম্যাচে ৩৯ ভাগ সময় দখলে রেখে ৯বার আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে ৭টি অনটার্গেট শট। বিপরীতে ৬১ভাগ সময় বল পায়ে রাখা ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ করে ১২ বার। কিন্তু একটিও সফল হয়নি।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ের শুরু থেকে ধীরে এগোতে থাকে দুই দল। ৪-৪-২ ফর্মেশনে আর্জেন্টিনা এবং ৪-১-২-৩ ফর্মেশনে ক্রোয়েশিয়া রণকৌশল সাজায়। মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ রাখতে ছোট ছোট পাসে আক্রমণ শানাতে থাকে উভয় দল। ২৪ মিনিটে আর্জেন্টাইন তারকা ফার্নান্দেজের শট রুখে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ।
ম্যাচের ৩০ তম মিনিটে ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচের শট বারপোস্ট ঘেঁষে যায়। প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম আক্রমণ এটিই।
৩১ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ওয়ান টু ওয়ানে আলভারেজকে ফাউল করেন গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। তিনি দেখেন হলুদ কার্ড। পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
পেনাল্টি থেকে এবার আর গোল করতে ভুল করেননি মেসি। এই গোলে বাতিস্তুতাকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যান মেসি। বিশ্ব আসরে মেসির গোলসংখ্যা এখন ১১টি। আর চলটি বিশ্বকাপে পাঁচটি। গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে আগে থেকে শীর্ষে থাকা কিলিয়ান এমবাপের পাশে বসলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
গোল পেয়ে আক্রমণের গতি বাড়ায় আলবিসেলেস্তেরা। ৩৮ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে দ্বিতীয় গোল পায় তারা। দ্বিতীয় গোলের নায়ক আলভারেজ। ৪২ মিনিটে কর্ণার থেকে মাথা ছোঁয়ান আলভারেজ৷ সেই যাত্রায় রক্ষা করেন লিভাকোভিচ। ক্রোয়েশিয়া চেষ্টা করলেও শোধ করতে পারেনি গোল। আলভারেজ ঠিকই ঠাণ্ডা মাথায় ডান পায়ের শটে ঠিকানা খুঁজে নেন। তাতে উচ্ছ্বাস নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরে ফের গোলের খাতায় আলভারেজের নাম। এবার অবশ্য মূল নায়ক মেসি। ৬৯তম মিনিটে নিজের দৃঢ়তায় গোলমুখে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। সতীর্থের পাস পেয়ে গোল আদায় করে নিতে ভুল করেননি আলভারেজ। ডান পায়ের আলতো ছোঁয়ায় ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি।
তিন গোলে পিছিয়ে পড়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। ফলে ৩-০ ব্যবধান রেখেই শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ে লিওনেল স্কালোনির দল।
তৃতীয় বিশ্বকাপের স্বপ্নে বিভোর থাকা আর্জেন্টিনার সামনে আর মাত্র একটি ম্যাচ। এই ম্যাচ জিতলেই মিলবে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফি। এই আরাধ্যের শিরোপার জন্য আগামী ১৭ ডিসেম্বর ফাইনালে মাঠে নামবেন লিওনেল মেসিরা। ফাইনালে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ ঠিক হবে আগামীকাল। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কো ও ফ্রান্সের মধ্যকার জয়ী দলের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে আর্জেন্টিনা।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন