জাতীয়
আগামী ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে চালু হচ্ছে মেট্রোরেল !
আগামী ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে সরকার। সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণ উদযাপন করতে দেশের প্রথম মেট্রোরেল ও প্রথম উড়াল মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর প্রথম অংশ উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু করতে চায় সরকার।
সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে আর মাত্র মাস পাঁচেক বাকি। ২০১৬ সালের জুনে কাজ শুরুর পর থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও অংশের অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মেট্রোরেল চালুর ঘোষণা দিলেও বাকি পাঁচ মাসে ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব কি-না, তা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা রয়ে গেছে।
দিয়াবাড়ি-আগারগাঁওয়ের সব কাজ শেষ করে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব কি-না জানতে চাইলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিকও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) আমরা অনলাইনে সংযুক্ত হবো। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করতে পারবো কি-না তা ওই দিনই বলবো।’
ইতোমধ্যে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের পিলার বসানো হয়েছে। পিলারের ওপর স্প্যান বসানো হয়েছে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পার হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংলগ্ন সেকেন্ড গেট পর্যন্ত। সেকেন্ড গেট থেকে মতিঝিল পর্যন্ত কিছু অংশে বসানো হয়েছে, কিছু অংশে বসানো হয়নি।
দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর কাজীপাড়া পর্যন্ত স্প্যানের ওপর রেললাইন বসানো হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনো আগারগাঁও পর্যন্ত রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়নি।
মেট্রোরেল চলবে বিদ্যুতের সাহায্যে। তাই মেট্রোরেলের পুরোটা জুড়ে বসানো হবে বিদ্যুতের খুঁটি ও তার। দেখা গেছে, দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁওয়ের আবহাওয়া অধিদফতর পর্যন্ত স্প্যানের ওপর বসানো হয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। বিদ্যুতের তার বসানো হয়েছে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত।
ডিএমটিসিএলের তথ্য বলছে, প্যাকেজ ৩ ও ৪ এর আওতায় উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও অংশে ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট (স্প্যান) ও ৯টি স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। উভয় প্যাকেজের কাজ ২০১৭ সালের ১ আগস্ট শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মে পর্যন্ত সময়ে পরিসেবা স্থানান্তর, চেকবোরিং, টেস্ট পাইল, মূল পাইল, পাইল ক্যাপ, আই-গার্ডার, প্রিকাস্ট সেগমেন্ট কাস্টিং, পিয়ার হেড, ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট, ৫টি লং স্প্যান ব্যালেন্সড কান্টিলিভার নির্মাণ, সব স্টেশনের সাব-স্ট্রাকচার নির্মাণ এবং ১৪ হাজার ৭৪৮টি প্যারাপেট ওয়ালের মধ্যে সব প্যারাপেট ওয়াল ভায়াডাক্টের ওপর স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও পল্লবী স্টেশনের কনকোর্স ছাদ নির্মাণ শেষ হয়েছে। বর্তমানে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া এবং আগারগাঁও স্টেশনের কনকোর্স ছাদ নির্মাণকাজ চলছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও পল্লবী স্টেশনের প্লাটফর্ম নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
মিরপুর-১১, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনের সমাপ্ত করা কনকোর্স ছাদের ওপর প্লাটফর্ম নির্মাণকাজ চলছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও পল্লবী স্টেশনসহ স্টিল রুফ স্ট্রাকচার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী ও মিপুর-১১ স্টেশনে মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ অ্যান্ট্রি-এক্সিট স্ট্রাকচার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এসব কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ শতাংশ।
এমআরটি লাইন-৬ এর সার্বিক তথ্য তুলে ধরে ডিএমটিসিএল বলছে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ বা বাংলাদেশের প্রথম মেট্রো রেলের নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৬৪ দশমিক ৯১ শতাংশ। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্মাণের জন্য নির্ধারিত আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ।
ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল সিস্টেম এবং রোলিং স্টক (রেলকোচ) ও ডিপো ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ কাজের সমন্বিত অগ্রগতি ৫৬ দশমিক ০৪ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুসরণে এমআরটি লাইন-৬ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত করার জন্য সোস্যাল স্টাডি, অংশীজনসভা, গৃহ জরিপ, ভূমি অধিগ্রহণ পরিকল্পনা, পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা, পরিবেশগত প্রভাব এবং মূল নকশা সম্পন্ন হয়েছে। এখন পূর্ণাঙ্গ নকশা ও ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান।
এমআরটি লাইন-৬ এর প্রথম আইকনিক স্টেশন হিসেবে উত্তরা সেন্টার মেট্রোরেল স্টেশনের মূল অবকাঠামোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর ১৬টি স্টেশন রয়েছে। তার মধ্যে উত্তরা সেন্টার, বিজয় সরণি ও মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশন আইকনিক স্টেশন হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে ডিএমটিসিএল।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ করা হচ্ছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ