অপরাধ
শ্যালিকাকে পেতে স্ত্রীকে খুন: সাতমাস পর পুকুর থেকে হাড়গোড় উদ্ধার
কেরানীগঞ্জে শ্যালিকাকে পাওয়ার জন্য সে স্ত্রীকে হত্যার পর গুমের উদ্দেশ্যে লাশ বাসার পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। গুমের ঘটনার সাত মাস পর এর রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে মানবদেহের কিছু হাড়গোড় ও মোহনার মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হাড়গোড়গুলো মোহনার কিনা সেটি নিশ্চিত হতে ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে বুধবার জানান দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইকবাল হোসেন স্ত্রীকে হত্যার কারণ হিসেবে জানিয়েছে, শ্যালিকা আরিফা আক্তারের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। তাকে বিয়ে করতে চায়। এ ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্ত্রী মোহনা। শ্যালিকাকে পাওয়ার জন্য সে স্ত্রীকে হত্যার পর গুমের উদ্দেশ্যে লাশ বাসার পাশের পুকুরে ফেলে দেয়।
ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ২১ জুন রাতে মসলা বাটার শীল দিয়ে ইকবাল মোহনার মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করে। এর পর লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। এ সময় মোহনার ব্যবহৃত মোবাইলটিও সেখানে ফেলে দেয়।
ইকবালের স্বীকারোক্তি মতে, মঙ্গলবার পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে মানবদেহের কিছু হাড়গোড় ও মোহনার মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়েছে। ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানিয়ে বুধবার ইকবালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের ২২ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের চরকদমপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজ হন গৃহবধূ মোহনা আক্তার (২৫)। তার স্বামী ইকবাল হোসেন (৩৫) তখন প্রচার করেন সাংসারিক কলহের কারণে দুই শিশুসন্তানকে রেখে মোহনা অন্য কারও সঙ্গে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন। জীবিকার তাগিদে লেবানন প্রবাসী মোহনার মা রহিমা বেগম তার মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি মানতে পারছিলেন না।
সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে আসেন। ১১ জুন তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় গিয়ে মেয়ের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পুলিশকে জানান। ১২ জুন পুলিশ মোহনার স্বামী ইকবালকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
ইকবালের কথাবার্তায় সন্দেহ প্রবল হয় পুলিশের। একপর্যায়ে ইকবাল মোহনাকে হত্যার পর লাশ গুমের কথা স্বীকার করে। তার স্বীকারোক্তিমতে, মঙ্গলবার দিনব্যাপী তল্লাশি চালিয়ে চরকদমপুরের একটি পুকুর থেকে মানব শরীরের হাড়গোড় ও মোহনার মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়েছে।
মোহনার ফুপু হালিমা আক্তার জানান, স্বামীকে রেখে দুলাভাইয়ের সঙ্গে একাধিকবার পালিয়ে যায় আরিফা। এ নিয়ে কয়েকবার বিচার-সালিশ হলেও সমাধান হচ্ছিল না। একপর্যায়ে এলাকাবাসী অবৈধ সম্পর্কের কারণে ইকবাল ও আরিফাকে মারধর করে। দুই বছর আগে স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে ইকবাল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পেছনে চরকদমপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় ওঠে। তার পরও ইকবাল ও আরিফার মধ্যে যোগাযোগ ছিল।
মোহনার মা রহিমা বেগম বলেন, আরিফার সঙ্গে ইকবালের সম্পর্কের বিষয়টি আমি শুনতে পাই। গত বছরের ২২ নভেম্বর জানতে পারি মোহনা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এটা আমার বিশ্বাস হয়নি। ১১ জুন দেশে ফিরে পুলিশকে জানালে পর দিন ইকবাল ও আরিফাকে আটক করে পুলিশ। আমি মেয়ের হত্যাকারীর বিচার চাই। আমার ছোট মেয়ে জড়িত থাকলে তারও বিচার চাই।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ