অপরাধ
বুশরার দ্রুত মুক্তি চান বাবা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় বর্তমানে কারাবন্দি আছে তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা। ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিনের করা মামলার প্রেক্ষিতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছে সে। হত্যা নয়, ফারদিনের মৃত্যু ‘আত্মহত্যাজনিত’- পুলিশ ও র্যাবের এমন তথ্য-উপাত্ত প্রকাশের পর বুশরার দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, তার নির্দোষ মেয়েটা ফেঁসে গেল। ফারদিনের মৃত্যুতে তার কোনো সংশ্নিষ্টতা নেই। অহেতুক তাকে দীর্ঘদিন কারাগারে কাটাতে হচ্ছে। মেয়েটাকে দ্রুত মুক্তি দিলে, স্বাভাবিক জীবনে তাকে ফিরিয়ে আনা সহজ হতো।
প্রথম থেকেই বুশরার পরিবার বলে আসছে, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় তার কোনো হাত নেই। সন্দেহের বশে তাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এতে তার জীবন বিপর্যস্ত। শিক্ষাজীবনেও নেমে এসেছে অনিশ্চয়তা। কাশিমপুর কারাগারে দেখা করতে গেলে বুশরাও স্বজনের কাছে জানতে চেয়েছেন, তার মুক্তিতে বাধা কোথায়, জামিনে দেরি হচ্ছে কেন? স্বজনরা আদালতে ছুটি চলছে বলে সান্ত্বনা দিয়েছেন। আগামী ৫ জানুয়ারি ঢাকার একটি আদালতে বুশরার জামিন আবেদনে শুনানি হবে। তার আগ পর্যন্ত তাকে কারাগারেই থাকতে হবে বলে আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে।
ফারদিনের মৃত্যু ‘আত্মহত্যাজনিত’- নতুনভাবে পুলিশের এমন দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন রানা। তদন্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে তিনি বলেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে। এখন আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে। পুলিশের প্রতিবেদনে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ থাকলে নারাজি দেয়ার কথা জানান রানা। তার ভাষ্য, পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ড থেকে কাউকে আড়াল করা হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, পুলিশ ও র্যাব ভালোভাবে বিশ্নেষণ করে ফারদিনের বিষয়ে জানিয়েছে। আরও তথ্য জানতে তদন্ত সংস্থার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদ বলেন, ফারদিন হত্যায় যে বুশরার সংশ্নিষ্টতা নেই, তা আদালতকে জানানো হবে। কারণ ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। বাকিটা আদালতের সিদ্ধান্ত।
এদিকে ফারদিনের ‘আত্মহত্যার’ প্রমাণ দেখতে গতকাল বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা র্যাব কার্যালয়ে যান বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাহমিদ হোসেন বলেন, র্যাবের আলামত তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে। তারা এগুলোর পেছনে বেশ অ্যাফোর্ট দিয়েছে। কিছু জায়গায় হয়তো গ্যাপ আছে, এগুলো নিয়ে তারা আরও অগ্রসর হবে এমনটাই আশা প্রকাশ করেন ফারদিনের সহপাঠীরা। এ সময় আরেক শিক্ষার্থী বলেন, তারা এখনই চূড়ান্ত কিছু বলছেন না।
গেলো ৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হন ফারদিন। পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়। এর তিন দিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে নৌপুলিশ। ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসক বলেছিলেন, ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথা ও বুকে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মারা যাওয়ার আগে তাকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করা হয়।
এ বিষয়ে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যে কোনো ঘটনার পরপরই ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক মন্তব্য করলে, তা থেকে বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন বা ভিসেরা রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যু নিয়ে ধারণাগত তথ্য দেয়া থেকে চিকিৎসকদের বিরত থাকাই ভালো।
ফারদিনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ১০ নভেম্বর তাঁর বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাসহ অচেনা কয়েকজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় হত্যা মামলা করেন নূর উদ্দিন রানা। ওই মামলায় বুশরাকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
অপরাধ
রাজধানীতে বস্তা ভর্তি টাকাসহ একটি গাড়ি আটক করলেন শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রাইভেটকার থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যমে জানান, রাজধানীর উত্তরার একটি বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটি জব্দ করা হয়। এ সময় তিনজনকে হেফাজতে নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকা উদ্ধার করে হেফাজতে নেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় স্থানীয় জনতা ও শিক্ষার্থীরা উল্লাস করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, আওয়ামী লীগ ঘরোয়ানার একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের এমডির গাড়ি থেকে এ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গাড়ি থেকে এক বস্তা টাকাসহ একটি শটগান উদ্ধার করে উত্তরা টাউন কলেজের শিক্ষার্থীসহ অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এএম/
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগার থেকে পালিয়েছে ২০৯ বন্দি, নিহত ৬
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০৯ জন বন্দি পালিয়েছেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জন বন্দি নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান,গেলো মঙ্গলবার বিকেলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিরা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কারারক্ষীরা তাদের নিভৃত করার চেষ্টা করলে বন্দিরা কারারক্ষীদের ওপর চড়াও হয়। বন্দিদের কেউ দেয়াল ভেঙে, কেউ দেয়াল টপকে, আবার কেউ দেয়ালের সঙ্গে বিদ্যুতের পাইপ লাগিয়ে কারারক্ষীদের মারধর করে পালিয়ে যেতে চান।
একপর্যায়ে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা কমান্ডো অভিযান চালিয়ে বিদ্রোহ দমন করেন।এসময়ে বন্দিদের মধ্যে ২০৯ জন দেয়াল টপকে পালিয়ে গেছে।বন্দিদের ঠেকাতে নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, নিহতদের নাম পরিচয় পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সিনিয়র জেল সুপার।
আই/এ
অপরাধ
কাশিমপুর কারাগারে তীব্র উত্তেজনা, সেনাবাহিনীর শক্ত অবস্থান
গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বন্দিরা মুক্তির দাবিতে উত্তেজনা শুরু করেছেন। কারারক্ষীদের জিম্মি করে অনেকে দলবদ্ধভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা এসে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরের দিকে এ পরিস্থিতি দেখা গেছে। এসময়ে ওই এলাকার আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিতে দেখা যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানান, কাশিমপুর কারা কমপ্লেক্সে পৃথক চারটি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, ফাঁসি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি বন্দিরা রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার অনেক নেতাকর্মীও ওই কারাগারে রয়েছে।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে কিছু বন্দি কারাগারের অভ্যন্তরে থাকা কারারক্ষীদের জিম্মি করে মুক্তির দাবিতে বিদ্রোহ শুরু করে। এসময়ে কারারক্ষীরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। আগে থেকেই সেখানে অল্প সংখ্যক সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য হেলিকপ্টার যোগে কারা অভ্যন্তরে এসে বন্দিদের নিয়ন্ত্রণ করেন।
প্রসঙ্গত, কারা অভ্যন্তরে বিদ্রোহের খবর পেয়ে বন্দিদের স্বজনরা সকাল থেকেই কারাগারের সামনে অবস্থান করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ করে। কারাগারের বাইরে একটি ঝুট গুদামে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে সেনা সদস্যরা বাইরের বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন