ফুটবল
বিদায় ফুটবল সম্রাট
পতন হলো একটি নক্ষত্রের। বিশ্ব ফুটবলের প্রথম ‘মেগাস্টার’ ছিলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি পেলে। সাও পাওলোতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফুটবল সম্রাট পেলে। অ্যাকুউমেনিকা মেমোরিয়াল নেক্রোপোল কবরস্থানের ১৪ তলা ভবনের নবম তলায় সমাহিত করা হয় ফুটবলের মহানায়ককে। বিদায়বেলায় লাখো ভক্তের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন পেলে।
গত ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন বিশ্ব ফুটবলের সম্রাট পেলে। এরপর ভক্ত সমর্থকদের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সান্তোসের মাঠ ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামে দুই দিনব্যাপী শেষকৃত্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত পেলের মরদেহ রাখা হয়। এরপর মেমোরিয়াল নেক্রাপোল অ্যাকিউমেনিকায় যাওয়ার পথে পেলের শতবর্ষী মা সেলেস্তে আরন্তেসের বাড়ির সামনে মরদেহ রাখা হয়। সেখানে সমর্থকরা কান্নায় ভেঙে পড়লে আবেগাপ্লুত পরিবেশ তৈরি হয়।
পরে নেক্রোপোল কবরস্থানের ১৪ তলা ভবনের নবম তলায় ব্রাজিলিয়ান এই আইকনকে সমাহিত করা হয়। পেলের বাবা ডনডিনহো খেলোয়াড়ি জীবনে নয় নম্বর জার্সি পরতেন, এ কারণেই পেলের ইচ্ছায় তাকে নবম তলায় সমাহিত করা হয়। বিদায়বেলায় ফুটবলের এই মহানায়ককে লাখো ভক্ত শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানান।
একমাত্র ফুটবলার হিসেবে তিনবার বিশ্বকাপ জেতা এই ফুটবল সম্রাটের কারণেই ফুটবল বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলায় পরিণত হয়। কথিত রয়েছে যে, তার কারণেই একটি দেশের গৃহযুদ্ধ ৪৮ ঘণ্টার জন্য থেমে গিয়েছিল। এমনকি একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের হয়ে মাত্র ১৭ বছর বয়সে প্রথম বিশ্বকাপ জেতেন পেলে। এরপর ১৯৬২ ও ১৯৭০ বিশ্বকাপেও শিরোপা জিতে অনন্য কীর্তি গড়েন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারে বিশ্বের সব ক্লাবের প্রস্তাব পেয়েছিলেন পেলে। তবে নিজের প্রিয় ক্লাব সান্তোসের বাইরে খেলার কথা চিন্তাই করেননি ফুটবলের কালো মানিক।
সান্তোসের ইট-কাঠের সঙ্গে জড়িয়ে আছে পেলের হাজারও আনন্দ-বেদনার স্মৃতি। সেখানেই শেষ যাত্রায় অনেকের সঙ্গে শামিল হয়েছিলেন দেশটির সাবেক ও বর্তমান ফুটবলাররাও। শেষবারের মতো প্রিয় তারকাকে বিদায় জানান দেশটির সদ্য নিযুক্ত প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। এ সময় পেলের পরিবারকে কঠিন এই সময়ে সান্ত্বনা দেন।
পেলের শোক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা থেকে আসা সমর্থকরাও। এ সময় সান্তোসের বাড়ির ছাদ, প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি জানালায় সব চোখ শুধুই খুঁজেছে পেলেকে। হাতে দশ নম্বর জার্সি নিয়ে সবার মুখে শুধুই পেলে আর পেলে প্রতিধ্বনিতে চারপাশ মুখরিত ছিল।
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন