ফুটবল
ব্রাজিলের জয়রথ ছুটছেই
কথায় আছে- ওস্তাদের মার শেষ রাতে। সেটা আবারও প্রমাণ করল ব্রাজিল ফুটবল দল। শুরুর দিকে খেলা জমছিল না। ছিল না প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঝড় তোলা নেইমারের সেই চিরচেনা ছন্দ। নেইমার নিষ্প্রভ থাকায় জ্বলে উঠতে পারেনি ব্রাজিলও। তবে নেইমারকে বোতলবন্দি করে রাখতে পারেনি কলম্বিয়ানরা। তার শেষ মুহূর্তের ঝলকে জয়ের ধারা অব্যাহত রইল ব্রাজিলের।
রিও ডি জেনিরোর স্তাদিও অলিম্পিকো নিলতন সান্তোসে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি ব্রাজিল ২-১ গোলে জিতেছে। খেলার শুরুতেই গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ব্রাজিল। ম্যাচের একটা বড় সময় পর্যন্তই পিছিয়ে ছিল তারা। কিন্তু শেষের ঝলকে ঠিকই জয় তুলে নিল সেলেসাওরা।
খেলার ৭৮ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর গোলে সমতায় ফিরেছিল সেলেসাওরা। রেনান লোডির দারুণ এক ক্রস থেকে গোলটা করেছিলেন রবার্তো ফিরমিনো।
কিন্তু ঝামেলা বাধে বিল্ড আপ নিয়ে। নেইমারের বাড়িয়ে দেয়া বলটা লেগেছিল ম্যাচের আর্জেন্টাইন রেফারি নেস্তর পিতানার গায়ে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে খেলা থামিয়ে আবারও শুরু করা হয়। কিন্তু কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলীয় খেলোয়াড়রা সেটা হতে দেননি, খেলা চালিয়ে গেছেন, সেখান থেকেই এসেছে সমতার গোলটা। এরপর কলম্বিয়ার খেলোয়াড়রা অনেকক্ষণ ধরে আবেদন করলেও গোলের সিদ্ধান্ত আর বদলাননি আর্জেন্টাইন রেফারি।
আজকের খেলার প্রথমার্ধে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা ব্রাজিল পিছিয়ে পড়েছিল ম্যাচের ১০ মিনিটেই। ব্রাজিল বক্সে জটলার ভেতরেই ক্রস করে বসেন হুয়ান কুয়াদ্রাদো, লুইস দিয়াজ গোল করেন দারুণ এক ভলি থেকে। সেই গোলের পরই অনেকটা রক্ষণাত্মক হয়ে গিয়েছিল কলম্বিয়া। ফলে নেইমার, রিশার্লিসন, গ্যাব্রিয়েল জেসুসদের পক্ষে আক্রমণে ওঠাটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। প্রথমার্ধ বিরতির আগে এ পরিস্থিতিতে আর পরিবর্তন আসেনি, ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
গোলের জন্য মরিয়া ব্রাজিল বিরতির পরই আক্রমণ শানাতে থাকে। ৬২ মিনিটে তার ফলটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল দলটি। সতীর্থের বাড়ানো বল বক্সে পেয়ে নেইমার কাটিয়ে গিয়েছিলেন গোলরক্ষককেও। কিন্তু তার শটটা আটকে দেয় গোলপোস্ট, ফলে সে যাত্রায় আর সমতা ফেরেনি খেলায়। এরপর ৭৮ মিনিটে আসে সেই বিশেষ মুহূর্ত। ব্রাজিল সমতা ফেরায় ম্যাচে। সে গোলের পর কলম্বিয়ার ফুটবলারদের সঙ্গে রেফারির কথা কাটাকাটিতে সময় চলে যায় প্রায় ছয় মিনিটের মতো।
সেটাই অতিরিক্ত সময় দিয়ে পুষিয়ে দেন রেফারি। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর আরও ১০ মিনিট দেয়া হয় ইনজুরি সময়। তার শেষ মিনিটেই দেখা মিলল নেইমার ম্যাজিকের। ডান পাশে পাওয়া কর্নার থেকে দারুণ এক বল বাড়িয়েছিলেন কাছের পোস্টে। তাতে ক্যাসেমিরোর দারুণ এক হেডার গিয়ে আছড়ে পড়ে কলম্বিয়ার জালে। শেষ মুহূর্তের এই গোল অসাধারণ এক জয় এনে দেয় ব্রাজিলকে।
এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচে তিন জয় নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছেন নেইমাররা। প্রতিযোগিতার ‘বি’ গ্রুপে তাদের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট, আছে গ্রুপের সবার ওপরে। এক ম্যাচ বেশি খেলা কলম্বিয়া ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//