আইন-বিচার
সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে ৬ বছর আদালতের বারান্দায় মা
গৃহপরিচারিকা আয়েশা আক্তার (৩০) জীবিকার তাগিদে সাত বছর আগে স্বামী মোস্তফা আর দুই সন্তান আব্দুল্লাহ ও আবিরকে নিয়ে বরিশাল থেকে পাড়ি জমান ঢাকার কেরানীগঞ্জে। কদমতলীর শ্যামপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তারা। গাড়িচালক স্বামী কাজের তাগিদে সারাদিন বাইরে থাকতেন। অন্যের বাসায় কাজ করত আয়েশা।
আয়েশা-মোস্তফা দম্পতির দুই সন্তান আব্দুল্লাহ ও আবির বাড়িতে থাকত। এরই মাঝে স্থানীয় বাসিন্দা হানিফের সঙ্গে ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে ঝগড়া হয়। যার জেরে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আয়েশার ছেলে আব্দুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এরপর থেকে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন সন্তান হারানো মা।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। আগামী ৩১ জানুয়ারি এ মামলার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের বেঞ্চসহকারী সায়েদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তি-তর্কের পর্যায়ে ছিল। আসামিপক্ষের করা সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে রায়ের জন্য আগামী ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
হত্যা মামলার আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ইসহাক তালুকদার বলেন, যেহেতু তারা পলাতক এবং মামলা লড়তেও ইচ্ছুক না। এ কারণে আমি এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি আব্দুল্লাহ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপ-পরিদর্শক এরশাদ হোসেন আদালতে হানিফ ও জাহিদ হোসেন নামের দুজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৮ সালের ১১ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালীন আদালত বিভিন্ন সময়ে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
সন্তান হারানো মা আয়েশা আক্তার বলেন, আমার সাত বছরের ছেলে আব্দুল্লাহকে পাথর দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে হানিফ আর জাহিদ। আমি ছয় বছর ধরে আদালতে ঘুরছি আমার সন্তান হত্যার বিচারের আশায়। তারা জামিন পেয়ে আমাকে ও আমার স্বামীকে অনেক ভয়ভীতি দেখিয়েছে। শেষে টাকার বিনিময়ে আপস করতে চেয়েছে। আমি আপস করিনি। এখন তারা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। মা হিসেবে এটা মেনে নেয়া খুব কষ্টের। আমি আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, প্রত্যেক মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এ মামলায় আমরা রাষ্ট্রপক্ষ পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থিত করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করবেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামিরা সাত বছর বয়সী আব্দুল্লাহকে কদমতলী থানার উজালা ম্যাচ ফ্যাক্টরির পশ্চিম পাশের বাউন্ডারি ওয়ালের ভেতরে পতিত জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে পাথর দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর পাথর চাপা দিয়ে ফেলে রেখে আসেন। ওই ঘটনায় কদমতলী থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়।
ঘটনার কয়েকদিন আগে স্থানীয় বাসিন্দা হানিফের সঙ্গে মামলার বাদী মোস্তফার ছেলেকে নিয়ে ঝগড়া হয়। ওই ঘটনায় বাদী স্থানীয় পঞ্চায়েতে বিচার দিলে হানিফ ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করেন। এর কিছুদিন পর একই ঘটনায় হানিফের সঙ্গে বাদীর স্ত্রী আয়েশারও ঝগড়া হয় এবং হানিফ হুমকি দেন। ওই শত্রুতার জেরে বাদীর ছেলেকে হত্যা করা হয়।
আইন-বিচার
নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাকে এ নিয়োগ দেন।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয় আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগ প্রদান করলেন।’
উল্লেখ্য, আ.লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। বুধবার (০৭ আগস্ট) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মো. আসাদুজ্জামান।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ এম আমিন উদ্দিনকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। এর আগে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এসি//
আইন-বিচার
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর
পদত্যাগ করেছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
পদত্যাগ করার বিষয়টি এস এম মুনীর নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আরেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরসেদ পদত্যাগ করেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম মুনীরকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার চূড়ান্ত আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। গেলো ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টার তাকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। ভারতে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র দেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বড় বড় পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অনেকেই স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছেন।
এসি//
আইন-বিচার
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের সেই ভাস্কর্যটি উপড়ে ফেলা হয়েছে
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হাইকোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে থাকা গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়েছে।তবে কে বা কারা ভাস্কর্যটি ভেঙেছে তা জানা যায়নি।
বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে ভাস্কর্যটি মাটিতে পরে থাকতে দেখা যায়। এর আগে,গেলো মঙ্গলবার সকালে ইস্পাতের তৈরি ভাস্কর্যটির হাত ও দাঁড়িপাল্লা ধরে থাকা হাত ভাঙা অবস্থায় দেখা গিয়েছিলো।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গ্রিক দেবী থেমিসের আদলে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছেন, তা তাদের জানা নেই।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটকের বরাবর থাকা লিলি ফোয়ারায় প্রথমে ভাস্কর্যটি বসানো হয়। হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামি সংগঠনের দাবির মুখে ২০১৭ সালের মে মাসে ভাস্কর্যটি সরিয়ে এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন