উত্তর আমেরিকা
মেক্সিকোর মাফিয়ারপুত্র গ্রেপ্তার, সেনাসহ নিহত ২৯
মেক্সিকোর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী জোয়াকিুইন গুজমানের ছেলে ওভিদিও গুজমানকে গ্রেপ্তার অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ২৯ জন। নিহতদের মধ্যে সেনাসদস্যদের সংখ্যা ১০ জন, বাকিরা সবাই গুজমান গ্যাংয়োর অনুসারী।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস ক্রিসেনসিও স্যান্দোভাল রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মেক্সিকোর অপরাধ জগত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ৬৫ বছর বয়সী জোয়াকুইন গুজমান ‘এল চ্যাপো’ নামে পরিচিত, যার আক্ষরিক বাংলা অর্থ ‘পিচ্চি’ বা ‘ছোটো’। তার ছেলে ওভিদিও গুজমানেরও একটি বিশেষ নাম আছে। ‘এল র্যাটন’ বা ‘ইঁদুর’ নামে পরিচিত তিনি।
মেক্সিকোর সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ দল বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সিনালোয়ার রাজধানী কুলিয়াকান থেকে ওভিদিওকে গ্রেপ্তার করে রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে নিয়ে আসে। সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে তাকে রাজধানীতে আনা হয়।
তবে এই অভিযান মোটেও সহজ ছিল না। গুজমান গ্যাংয়ের সিনালোয়া শাখার সদস্যরা ওভিদিওকে ছিনিয়ে আনতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করেছেন।
মেক্সিকোর প্রতিরক্ষামন্ত্রী লুইস ক্রিসেনসিও স্যান্দোভাল শুক্রবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘সামরিক বাহিনীর ১০ জন সদস্য (সিনালোয়ায়) তাদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। এছাড়া নিহতদের বাকি ১৯ জন গুজমান গ্যাংয়ের সদস্য।’
২০১৬ সালে মেক্সিকোর সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত মেক্সিকোর সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ত্রাসী গ্যাংটি চালাতেন জোয়াকুইন গুজমান। মাদক ব্যাবসায়ী হিসেবে গুজমান ও তার গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছিল এই সিনালোয়া প্রদেশেই। ফলে মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুজমান গ্যাংয়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি ছিল সিনালোয়া। ২০১৭ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে পাঠায় মেক্সিকো সরকার।
হেরোইন-কোকেন-গাঁজার পাশপাশি গত কয়েক বছর ধরে ফেন্টানাইল নামের একটি সিনথেটিক মাদকের ব্যবহার বন্যার মতো ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা-ইউরোপে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মাদক হেরোইনের চেয়েও ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই ফেন্টানাইল।
৬৫ বছর বয়সী জোয়াকুইন গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তার ছেলে ওভিদিও বাবার মাদকব্যবসা দেখাশোনা করতেন। তার অধীনে সিনালোয়াতে অন্তত এক ডজন ল্যাব পরিচালনা করত গুজমান গ্যাং। এসব ল্যাবে ফেন্টানাইলসহ বিভিন্ন মাদক প্রস্তুত করা হতো।
মেক্সিকোর পাশপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায়ও আছেন ওভিদিও। তবে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর এক বার্তায় জানিয়েছেন, কারাবন্দি হিসেবে ওভিদিওকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন