আন্তর্জাতিক
ব্রাজিলে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্যালেস এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলার ঘটনায় চলছে গণগ্রেপ্তার। আর এরই মধ্যে দেশটির শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) ব্রাজিলের সামরিক পুলিশের প্রধানকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দাঙ্গাকারীরা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোতে হামলা চালানোর পর ব্রাজিলের বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ দেশটির শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছে। ওই নির্দেশের পর ব্রাজিলের সামরিক পুলিশের সাবেক কমান্ডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস বলেছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেস-সহ এবং অন্যান্যরাও রয়েছেন। তবে টরেস দাঙ্গায় কোনও ভূমিকা রাখার কথা অস্বীকার করেছেন।
এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা কংগ্রেস, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালানোর পরে পুলিশ কমান্ডার কর্নেল ফাবিও অগাস্টোকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।
প্রবীণ বামপন্থি নেতা লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার এক সপ্তাহ পরই এই দাঙ্গা শুরু হয়।
বিবিসি বলছে, দাঙ্গার পরে গ্রেপ্তারকৃত প্রায় ১৫০০ জনকে পুলিশ একাডেমিতে আনা হয়। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রায় ৬০০ জনকে পৃথক জায়গায় নেওয়া হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনার জন্য পুলিশ কর্মকর্তারা পাঁচ দিন সময় পাবেন।
এর আগে মঙ্গলবার ব্রাসিলিয়ার সাবেক জননিরাপত্তা প্রধান অ্যান্ডারসন টরেসের বিরুদ্ধে ‘কাঠামোগত নাশকতা অভিযান’ পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। ব্রাসিলিয়াতে নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে নিযুক্ত রিকার্ডো ক্যাপেলি বলছেন, সরকারি ভবনেগুলোতে হামলার আগে টরেসের ‘কমান্ডের অভাব’ ছিল।
এর আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর বিচার মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন অ্যান্ডারসন টরেস।
অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট লুলাও ব্রাসিলিয়ায় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ মোকাবিলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের দায়িত্ব ‘অবহেলা’ করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া দাঙ্গার জেরে জাইর বলসোনারোর সম্পদ জব্দ করার জন্য সরকারি আইনজীবীরা মঙ্গলবার দেশটির একটি ফেডারেল অডিট আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে।
ব্রাজিলের সদ্য সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ব্রাসিলিয়ায় দাঙ্গার নিন্দা করেছেন। অবশ্য গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনের পরাজয় এখনও স্বীকার করেননি তিনি। গত ১ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
বিবিসির দক্ষিণ আমেরিকা সংবাদদাতা কেটি ওয়াটসনের মতে, কিছু বিক্ষোভকারী শুধু বলসোনারো নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ নন – তারা চান প্রেসিডেন্ট লুলা কারাগারে ফিরে যাক।
জাইর বলসোনারো গত অক্টোবরের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে খুব শান্ত হয়ে গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে পরাজয় স্বীকার না করে, বলসোনারো তার সবচেয়ে কট্টর সমর্থকদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিয়ে ক্ষুব্ধ করে রেখেছিলেন।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট হামলার নিন্দা করেছেন এবং সহিংসতা শুরু হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরে টুইটারে দেয়া একটি পোস্টে দাঙ্গাকারীদের উৎসাহিত করার দায়ও অস্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার বলসোনারোর ছেলে এবং ব্রাজিলের সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো বলেছেন, তার বাবাকে দাঙ্গার সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করা উচিত নয়। কারণ নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকে নীরবে ‘কষ্ট পাচ্ছেন তিনি’।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
এশিয়া
জাপানে ৭.১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৩ মিনিটের দিকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রধান দ্বীপ কিয়ুশুর মিয়াজাকি অঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থার (জেএমএ) বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম এনএইচকে ওয়ার্ল্ড এ তথ্য জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর দেশটিতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মিয়াজাকিতে সমুদ্রের ঢেউ ইতোমধ্যে ৫০ সেন্টিমিটারে পৌঁছেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখ্য সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি গণমাধ্যমকে বলেন, ভূমিকম্পের পর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্ল্যান্টগুলোতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যায়নি। সরকার ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, জাপানে ভূমিকম্পের ঘটনা একেবারে সাধারণ। বিশ্বে ৬ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের প্রায় এক-পঞ্চমাংশই এদেশে ঘটে থাকে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১১ মার্চ দেশটির উত্তর-পূর্ব উপকূলে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। যেটি ছিলো জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। ওই সময় ভূমিকম্পের পর দেশটিতে বিশাল সুনামি আঘাত হানে।
সূত্র: রয়টার্স
জিএমএম/
আন্তর্জাতিক
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে: যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়নের ব্যাপারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেনো গণতন্ত্র, আইন ও বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করে-এমনটাই চাইছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় বুধবার (৭ আগস্ট) ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে এমনটাই আশা করে বলে জানিয়েছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। এদিন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ইরাকের এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে তার বা অন্যদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হয়েছি কী? বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা পরিস্থিতিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?’
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা এখনও যোগাযোগ করেনি। আমরা বাংলাদেশের পরিস্থিতির উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছি এবং আমরা এরইমধ্যে দেখেছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আপনি নিশ্চয়ই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শুনেছেন যে. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তা যেনো গণতান্ত্রিক নীতিমালাকে, আইনের শাসন এবং সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি জনগণের ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।
এসময় যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী একটি প্রশ্ন করেন। তার প্রশ্নটি ছিল, আপনি কি জানেন যে স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করে নতুন সরকারকে হুমকি দিচ্ছেন, সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন? তিনি সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন যিনি বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। দয়াকরে তার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য জানাবেন কী?’
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘একজন সাধারণ নাগরিকের বিবৃতি নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এরইমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেছি এবং আমরা দেখতে চাই এই সরকার কী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যায়।
এসময় মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও জানতে চান, ‘দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে প্রত্যাশা নিয়ে আপনার কী মন্তব্য?
জবাবে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেটের মুখপাত্র বলেন, শনের প্রশ্নের উত্তরে আমি যেমনটি বলেছি – অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা দেখতে চাই ওই সিদ্ধান্তে যেনো গণতান্ত্রিক নীতি মেনে চলা হয় এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ওই ব্রিফিংয়ে ফিলিস্তিনের গাজা, দক্ষিণ আমেরিকার ভেনিজুয়েলা, ইরাক ও ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
এমআর//
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন