আফ্রিকা
সেনেগালে মাটি-বর্জ্য দিয়ে তৈরি ইটের বাড়ি
পরিবেশবান্ধব মাটির দালান তৈরি করে সেনেগালের ওয়ারোফিলা নামের এক প্রতিষ্ঠান। মাটি-বর্জ্য দিয়ে বানানো এক ধরনের ইট দিয়ে ওই বাড়ি তৈরি করেছে তারা। পুরো ভবন নির্মাণেই প্রাকৃতিক কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়েছে। এই বাড়িতে এসি ছাড়াই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাই এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সুনাম কুড়িয়েছে।
আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে যে মাটির ঘর দেখা যেতো তাতেই যেন লেগেছে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া। সেনেগালের রাজধানী ডাকারে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ও স্থানীয় উপাদানে এই বাড়ি তৈরি হয়েছে।
ডাকারের বেশিরভাগ বাড়ি কংক্রিট দিয়ে তৈরি। সেখানে প্রাচীন উপাদান ব্যবহার করে বাড়ি তৈরির প্রচারণা চালাচ্ছে ওয়ারোফিলা। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এলিমেন্টের। পুরনো আদলে মাটি না পুড়িয়ে সঙ্গে বর্জ্য মিশিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্বে যেখানে ৮ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমণের জন্য দায়ী সিমেন্ট, সেখানে এই ইট তৈরির সময় ক্ষতিকর কোন গ্যাস উৎপাদন হয় না বলে দাবি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের।
ওয়ারোফিলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস রনডেট বলেন, সিমেন্ট উৎপাদনে চুনাপাথর লাগে। সেনেগালে চুনাপাথরের ওপরই জন্মে বাওবাব গাছ। যা দেশটির মূল্যবান সম্পদ বলে বিবেচিত। গাছ নিধন করে চুনাপাথর সংগ্রহ করে উচ্চতাপ প্রয়োগ করা হয়। আর এখানে স্থানীয়ভাবে প্রচুর পাওয়া যায় এবং পরিবেশ দূষণ হয় না এমন কাঁচামাল ব্যবহার করি।
যেখানে প্রচলিত শহুরে দালান পশ্চিম আফ্রিকার গরম ঠেকাতে অকার্যকর, সেখানে গরম ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে এই পরিবেশবান্ধব বাড়ি।
ওয়ারোফিলার সহ প্রতিষ্ঠাতা এনজিংগা বলেন, কড়া তাপ থেকে ঘর ঠাণ্ডা রাখতে আমরা কতকিছু করি, এসি লাগাই। অথচ প্রকৃতিতে ছড়িয়ে থাকা উপাদান ব্যবহার করেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে পরিবেশের ক্ষতিও হয় না।
এই বাড়িগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে নান্দনিকতা আর ভিন্নধর্মী নকশা। সেনেগালে এই মাটির দালানের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
এলিমেনটেরের প্রতিষ্ঠাতা ডৌডৌ ডেমে বলেন, ১০ বছর আগে যখন প্রকল্প শুরু করি, ক্লায়েন্ট খুঁজতে হতো। আর এখন সবার চাহিদা পূরণই করতে পারি না। অবশ্য এটা কেবল ডাকারে। পুরো দেশেই এই ধারণা ছড়িয়ে পড়ুক তা আমরা চাই।
জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখার জন্য ব্রিটেনের পুরস্কার অ্যাশডেন অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হয়েছে ভোরোফিলা।
এসএন
আফ্রিকা
বরখাস্ত হলেন তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী
তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী আহমেদ হাচানিকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ। বুধবার (৭ আগস্ট)বরখাস্ত হন হাচানি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে চীনা বার্তা সংস্থা শিনহুয়া। তবে বরখাস্তের কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
গেলো বছরের আগস্টে হাচানিকে তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করা হয়। এর এক বছরের মাথায় তিনি পদ হারালেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট সাইদ সামাজিক বিষয়কমন্ত্রী কামেল মাদ্দৌরিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং তাকে জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন ঘিরে তিউনিসিয়া জটিল সময় পার করছে। জনগণের মধ্যে সরকার নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন খাতে জনরোষে রূপ নিতে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর আফ্রিকার উপকূলে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত দেশ তিউনিসিয়া। দেশটি উত্তর আফ্রিকা, আটলান্টিক মহাসাগরের নীল নদের বদ্বীপ এবং ভূমধ্য উপকূলের মধ্যে অবস্থিত।
জিএমএম/
আফ্রিকা
মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা, নিহত ৪০
পশ্চিম আফ্রিকার মধ্যাঞ্চল মালিতে গ্রামবাসীদের ওপর হামলা চালিয়েছে সশস্ত্র সন্ত্রাসি বাহিনী। এতে প্রায় ৪০ গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
দেশটির স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্রোহে জর্জরিত মধ্য মালির একটি গ্রামে অজ্ঞাত সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। সোমবার মোপ্তি অঞ্চলের ডিজিগুইবোম্বো গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ব্যাঙ্কাসের মেয়র মৌলেয়ে গুইন্দো বলেছেন, সশস্ত্র লোকেরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে লোকজনকে গুলি করতে শুরু করে।
তিনি মৃতের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তবে দুই স্থানীয় কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, হামলায় প্রায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন।
‘এটি গণহত্যা ছিল’ উল্লেখ করে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘হামলার আগে সন্ত্রাসীরা গ্রামটি ঘিরে ফেলে। সেখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল… হামলার ঘটনায় সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, কিছু লোক পালিয়ে যেতেও সক্ষম হয়। কিন্তু অনেককে হত্যা করা হয়েছে।’
নিহতদের বেশিরভাগই পুরুষ বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মালির কর্মকর্তারা হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পারেননি। এছাড়া কোনো গোষ্ঠী এখনও হামলার দায় স্বীকার করেনি।
টিআর/
আফ্রিকা
নাইরোবিতে ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন, নিহত কয়েকজন
কেনিয়ায় ট্যাক্সবিরোধী আন্দোলন সহিংস আকার ধারণ করেছে। এই বিক্ষোভ থেকে দেশটির সংসদ ভবনে আগুন দেয়া হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ গুলি ছুড়লে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশি বাধা টপকে দেশের সংসদ ভবনে আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যর্থ হলে পুলিশ গুলি চালায়।
বুধবার (২৬ জুন) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
সংসদ ভবনের বাইরে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন এমন পাঁচজন বিক্ষোভকারীর মরদেহ গুণে দেখেছেন রয়টার্সের একজন সাংবাদিক। তবে প্যারামেডিক ভিভিয়ান আচিস্তা বলেছেন, কমপক্ষে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
আরেকজন প্যারামেডিক রিচার্ড এনগুমো বলেছেন, গুলিতে ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তিনি সংসদের বাইরে দুজন আহত বিক্ষোভকারীকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
ডেভিস তাফারি নামে একজন বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে বলেন, আমরা সংসদ বন্ধ করে দিতে চাই। প্রত্যেক এমপির পদত্যাগ করা উচিত। আমাদের একটি নতুন সরকার দরকার।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কাঁদনে গ্যাস ও গুলি চালিয়ে পুলিশ শেষ পর্যন্ত সংসদ ভবন থেকে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ করতে পেরেছে। এছাড়া ভূগর্ভস্থ টানেল দিয়ে এমপিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
শুধু নাইরোবি নয়, এদিন ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য শহর ও নগরেও বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়েছে। এসব বিক্ষোভ থেকে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর পদত্যাগের দাবি করা হচ্ছে। যদিও আন্দোলন শুরু হয়েছিল ট্যাক্স বৃদ্ধির বিরোধিতা করে।
আফ্রিকার এই দেশের মানুষজন করোনো মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব, ইউক্রেনের যুদ্ধ, টানা দুই বছরের খরা এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে সৃষ্ট বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। তাদের এমন অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেই রাজস্ব আয় বাড়াতে আরও প্রায় ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের করের বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে সরকার।
ইতিমধ্যে নতুন এই অর্থ বিলের অনুমোদন দিয়েছে সংসদ। এখন তৃতীয় বারের মতো এটি আবারও সংসদে উঠবে। এই ধাপে পাস হলে তা স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। কোনো আপত্তি থাকলে তিনি তা সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন। আর আপত্তি না থাকলে তিনি সই করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে।