অর্থনীতি
কমেছে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা
দেশের অর্থনৈতিক মন্দায় ব্যাংকগুলোতে কোটিপতি আমানতকারী হিসাবধারীর সংখ্যা কমেছে। গত জুনে কোটিপতি আমানতকারীদের হিসাব ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৪৫৭টি। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৬৪টি। আলোচ্য তিন মাসে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৮৯৩টি। প্রায় ২ শতাংশ কমেছে কোটিপতির সংখ্যা। আমানতকারীদের সংখ্যা কমার পাশাপাশি আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪৭ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা কমার কোনো উল্লেখ করা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যাংকে আমানত রাখার প্রবণতা কমেছে। একই সঙ্গে আগের আমানত তুলে নেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। এসব কারণে বড় আমানতকারীরাও টাকা তুলে নিচ্ছেন। এতে করে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা কমে গেছে।
প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, বড় আমানতকারীর সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি ১ কোটি টাকার বেশি আমানতাকরীদের সংখ্যাও কমেছে। সবমিলে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে এমন হিসাবধারীর সংখ্যা গত জুনে ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ৪৫৭ জন। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৬৪ জনে। আলোচ্য তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি আমানতকারী গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে ১ হাজার ৮৯৩ জন।
এর মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি থেকে ৫ কোটি টাকা আমানতকারী গ্রাহক গত জুনে ছিল ৮৫ হাজার ৮৪১ জনে। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮৪ হাজার ৫০৩ জনে। ৫ কোটির বেশি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারী জুনে ছিল ১১ হাজার ৮৬৫ জন। সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫৪৪ জনে।
তবে ১০ কোটি টাকার বেশি থেকে ১৫ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা ব্যাংকে সামান্য বেড়েছে। গত জুনে ওই পরিমাণ আমানত রেখেছেন এমন গ্রাহক ছিল ৩ হাজার ৭৬৩ জন। গত সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮০৬ জনে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ১৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ২০ কোটি টাকা জমা আছে এমন আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে। গত জুনে ছিল ১ হাজার ৭১৯ জন। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭০০ জনে। এ হিসাবধারী ১৯ জন কমেছে। ২০ কোটি টাকার বেশি থেকে ২৫ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যাও কমেছে। এ হিসাবধারীর সংখ্যা গত জুনে ছিল ১ হাজার ১৫১ জন। গত সেপ্টেম্বরে তা কমে হয়েছে ১ হাজার ১৪৭ জন। এ খাতে কমেছে ৪ জন। ২৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ৩০ কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা জুনে ছিল ৮৮৩ জন, সেপ্টেম্বরে তা কমে হয়েছে ৮৬০ জন। ৩০ কোটি টাকার বেশি থেকে ৩৫ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা জুনে ছিল ৫০২ জন, সেপ্টেম্বরে তা কমে হয়েছে ৪৫৮ জন।
তবে ৩৫ কোটি টাকার বেশি থেকে ৪০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে। গত জুনে ছিল ৩০৭ জন, সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয়েছে ৩১৯ জন। বেড়েছে ১২ জন।
এরপরের দুই ধাপেই আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে। ৪০ কোটি টাকার বেশি থেকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত আমানতকারীর সংখ্যা গত জুনে ছিল ৬২১ জন, সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২৩ জনে। ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানতকারীর সংখ্যা জুনে ছিল ১ হাজার ৮০৫ জন, সেপ্টেম্বরে তা কমে হয়েছে ১ হাজার ৬৬০ জন।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের পাশে থাকবে আইএমএফ
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দেশের এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শপথ নেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলমান পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকতে আইএমএফ ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ‘প্রাণহানি ও মানুষের আহত হওয়ার ঘটনায়’ আইএমএফ গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশ ও দেশটির মানুষের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধিতে সংস্থাটি পাশে থাকবে।
এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের একটি ঋণ অনুমোদন দেয় আইএমএফ। ইতোমধ্যেই তিন কিস্তিতে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ডলার ছাড় করেছে আইএমএফ। আর ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাতটি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে সংস্থাটির।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেশের জিডিপির প্রায় এক-চতুর্থাংশের সমতুল্য। সুতরাং, তাদের সমর্থন বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এসি//
অর্থনীতি
আজ ব্যাংক থেকে এক লাখের বেশি টাকা তোলা যাবে না
শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান আজ (০৮ আগস্ট)। সে জন্য নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে এ সিদ্ধান্ত শুধু আজকের জন্য প্রযোজ্য হবে।
বুধবার (০৭ আগস্ট) রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা এমডিদের এক জরুরি বার্তায় এ নির্দেশনা দিয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) এক হিসাব থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। তবে যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করা যাবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক আজকের জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে শাখায় টাকা দেয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়েছে। এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ধারাবাহিকতায় গত রাতে এ সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে কোনো সরকার নেই এবং আজ নতুন সরকার গঠিত হচ্ছে। এই সময়ে কেউ যাতে নগদ টাকা নিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে, সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’
এসি//
অর্থনীতি
এনবিআর চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে বরখাস্তের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।আর বিক্ষোভের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জন চলছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই এনবিআর এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এনবিআরের কর্মচারীরা জানান, তারা দীর্ঘ দিন থেকে তাদের নানা দাবি ও অসুবিধা এনবিআর চেয়ারম্যানকে জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এসব দাবি তিনি পূরণ করেন নাই। বাইরের ক্যাডারের কর্মকর্তারা এনবিআর কর্মচারীদের কষ্ট বুঝতে চান না। তাদের ইচ্ছে মত করে চালাতে চান, সেটা কতটা যৌক্তিক তা ভেবে দেখার এটাই উপযুক্ত সময়।
এসময়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ৯ দফা দাবি জানান।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
১। প্রশাসন ক্যাডার থেকে কোনো কর্মকর্তা প্রেষণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পদায়ন করা যাবে না।
২। স্বৈরাচারী শাসকের ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করে আয়কর/কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে হবে।
৩। অবিলম্বে স্বৈরাচারী চেয়ারম্যানের দোসর এবং প্রিয়পাত্র প্রথম সচিব (কর প্রশাসন) মো. শাহিদুজ্জামানকে তার পদ থেকে বরখাস্ত করে কর ক্যাডারের কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে।
৪। দুই বছর পর পর বদলি বাণিজ্য বন্ধ করে আয়কর আইন-২০২৩ এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং আয়কর আদায়ের স্বার্থে অতীতের মতো রাজস্ব বান্ধব এবং প্রযোজ্যতা সাপেক্ষে বদলি করতে হবে।
৫। অবৈধ নিয়োগ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
৬। সব কর্মচারীদের পদায়ন কর্মচারীদের জন্য প্রণীত জ্যেষ্ঠতা বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী করতে হবে।
৭। আয়কর অনুবিভাগের ১০তম-২০তম গ্রেডের সব শূন্য পদে পদোন্নতি দিতে হবে এবং সব পদ পদোন্নতিযোগ্য হতে হবে, কোনো পদ ব্লক রাখা যাবে না।
৮। কর্মচারীদের নিজ নিজ অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মচারীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় কোনো সিদ্ধান্ত মানা হবে না।
৯। সর্বশেষে আয়কর অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ের সিদ্ধান্ত শুধু আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা/কর্মচারীরা নেবে।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন