উত্তর আমেরিকা
শত শত সাংবাদিক চাকরি হারাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক টেক কোম্পানি ফেসবুকের মেটা, গুগলের আলফাবেট, মাইক্রোসফট গত কয়েক মাসের মধ্যে কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। কর্মী ছাঁটাই থেকে বাদ যায়নি অ্যামাজন ও ম্যাকডোনাল্ড’সের মতো কোম্পানিও।
এবার যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধাক্কা আসছে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর। মার্কিন প্রভাবশালী মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ভক্স মিডিয়া নিজেদের ৭ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে গেলো শুক্রবার। ভক্স মিডিয়ার মালিকানায় রয়েছে ভক্স অ্যান্ড দ্য ভার্জ ওয়েবসাইট, নিউইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিন এবং এর অনলাইন সংস্করণ।
ভক্স মিডিয়ার আগে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে সিএনএন, এনবিসি, এমএসএনবিসি, বাজফিড এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যম। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা চিন্তা করেই মিডিয়া হাউজগুলো এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
শুক্রবার কর্মীদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় ভক্স মিডিয়ার সিইও জিম ব্যাংকঅফ বলেছেন, চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আমাদের ব্যবসা ও ইন্ডাস্ট্রির ওপর প্রভাব ফেলায় ৭ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি আমরা।
বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বার্তা দেয়ার মাত্র ১৫ মিনিট পর ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভক্স মিডিয়ায় বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৯০০ জন। ৭ শতাংশ ছাঁটাই মানে হলো ১৩০ জন চাকরি হারিয়েছেন।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো অভিজ্ঞরাও এ থেকে বাদ যাননি। পুরস্কার বিজয়ী ও ভক্স মিডিয়ার হয়ে ৯ বছর কাজ করা সাংবাদিক মেগান ম্যাককরনকেও ছাঁটাই করা হয়েছে।
মেগান বর্তমানে ৩৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। যখন তিনি এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত থাকার কথা তখন দুশ্চিন্তায় সময় কাটাতে হচ্ছে। তবে ভক্স মিডিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ছাঁটাইকৃতদের আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
কানেক্টিকাটের কুইনিপিয়াক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব কমিউনিকেশনের ডিন ক্রিস রাস বলেছেন, টেক কোম্পানি যেভাবে কর্মী ছাঁটাই করেছে মিডিয়ার ছাঁটাই ওইরকম নাটকীয় না। তবে গুগল ও মাইক্রোসফট ছাঁটাইয়ের যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি আসলে বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাওয়ারই ফল। মূলত অনিশ্চিত অর্থনীতির কারণে এমনটি হয়েছে।
ক্রিস রাস আরও বলেছেন, বেশিরভাগ মিডিয়া ভেবেছিল তাদের ধারণা অনুযায়ী পরিসর বেড়েছে এবং তারা শ্রোতা, পাঠক অথবা দর্শক একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারবে। কিন্তু এটি হয়নি। আর অর্থনীতির যে পরিস্থিতি তাতে এটি হওয়ারও সম্ভাবনা নেই।
আরেকটি বিষয় হলো— ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্বেগজনকহারে কমেছে সংবাদকর্মীর সংখ্যা। এ সময়ের মধ্যে সাংবাদিকের সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার থেকে ৮৫ হাজারে নেমে যায়। ২০২১ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। সংস্থাটি জানায়, স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
মার্কিন সাংবাদিক সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা, পূর্ব এক বিবৃতিতে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছে, সাংবাদিকতা দীর্ঘদিন চাপে রয়েছে। আর কিছু কোম্পানি মনে করছে, খরচ কমানোর এটিই এখন ভালো সময়— যা সাংবাদিক এবং সাংবাদিকতার দুটিরই ক্ষতি করছে।
সংগঠনটি জানিয়েছে, এনবিসি এবং এমএসএসনবিসি অন্তত ৭৫ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এছাড়া ওয়াশিংটন পোস্টের সিইও জানান, ২ হাজার ৫০০ কর্মীর মধ্যে ১ ডিজিট (১০ শতাংশের নিচে) কর্মী ছাঁটাই করবেন তারা।
গত ডিসেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের রোববারের বিশেষ ওয়াশিংটন পোস্ট ম্যাগাজিন ছাপানো বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন তাদের ৪ হাজার কর্মীর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে ছাঁটাই করেছে।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্র অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত : মার্কিন মুখপাত্র
অন্তর্বর্তী সরকার এবং ড. ইউনূসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মিলার বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি শুভ দিন। নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সবেমাত্র বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র এ সরকারকে অভিননন্দ জানিয়েছে কি না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্স আজ শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তারা সাম্প্রতিক সহিংসতা বন্ধের জন্য ড. ইউনুসের আহ্বানকে স্বাগত জানাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান ম্যাথিউ মিলার। তবে কোন বিষয়ে যোগাযোগ হয়েছে তিনি সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেন নি।
আই/এ
উত্তর আমেরিকা
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীকে চাপ দিলেন কামলা হ্যারিস
গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কামলা হ্যারিস।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) হোয়াইট হাউজে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ বিষয়ে নেতানিয়াহুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এর মধ্য দিয়ে কামলা প্রেসিডেন্ট হলে ইসরাইল ইস্যুতে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আনবেন তা স্পষ্ট হয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কামলা বলেন, ‘ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কিন্তু সেটি কীভাবে করা হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘আমি গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার উৎকণ্ঠা জানিয়েছে। আমি চুপ করে থাকব না।’
হ্যারিসের এই তীক্ষ্ণ ও জোরালো মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি কিভাবে নেতানিয়াহুকে মোকাবেলা করছেন সে বিষয়ে বাইডেনের সঙ্গে তার পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
এর কয়েক ঘন্টা আগে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউজে বৈঠক করেন। গেলো ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর বাইডেনের ইসরাইলে সফর শেষে এটিই নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার প্রথম মুখোমুখি আলোচনা। এই আলোচনায় গাজায় ৯ মাস ধরে চলা সংঘাতে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দেন বাইডেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এখনও ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে ব্যবধান রয়ে গেছে তবে আমরা আগের চেয়ে এখন চুক্তির কাছাকাছি আছি। যা আগে কখনও ছিলাম না।
নেতানিয়াহুর এই সফর এমন সময় হলো যখন মার্কিন রাজনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। রোববার ( ২১ জুলাই) ৮১ বছরের বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের চাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দলের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য হ্যারিসকে সমর্থন করেন।
জেএইচ
উত্তর আমেরিকা
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌঁড়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকছেন বাইডেন
২০২৪ সালের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে জো বাইডেন সরে যাচ্ছেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দৌঁড় থেকে কেউ তাকে বাইরে ঠেলে দিচ্ছে না। তিনি দলের মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। সব চাপ উপেক্ষা করে লড়াইয়ে ‘শেষ পর্যন্ত’ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমেরিকার এই প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ জুলাই) ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে থাকা কিছু কর্তা ব্যক্তির সঙ্গে এক ফোনালাপে তিনি এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেয়া প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জো বাইডেন গেলো সপ্তাহে তার দুর্বল বিতর্কের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী দৌঁড় থেকে সরে যেতে তার ওপর চাপ কার্যত বেড়েই চলেছে। এমনকি নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতর থেকেও চাপের মুখে পড়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই বাইডেনের এই ফোনকল।
বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার তার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে ফোন কলে কথা বলেন এবং ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসময় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আসন্ন এই নির্বাচনকে সামনে রেখে গেলো বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।
বিতর্কে পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি, সীমান্ত ইস্যু, সামাজিক নিরাপত্তা, চাইল্ড কেয়ার, কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা এবং গর্ভপাতসহ বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বিতর্কে বাইডেনের পারফরম্যান্স ছিল অত্যন্ত দুর্বল। অনেকেই বলছেন, ৮০ বছরের বেশি বয়সী বাইডেনের এবার আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত নয়। কারণ, তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের কথার জবাবও দিতে পারছেন না।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই বাইডেনের বয়স এবং কর্মক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
এমন অবস্থায় বুধবার প্রচারণা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতা ও গভর্নরদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাইডেন। এর মাধ্যমে তিনি মূলত গেলো সপ্তাহের বিতর্কে নড়বড়ে পারফরম্যান্সের পরে তাকে নির্বাচনী লড়াই বাদ দেয়ার আহ্বানগুলো ঝেড়ে ফেলেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই মনে করছেন, দলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জো বাইডেনের আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত হবে না।
টিআর/
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন