বিএনপি
৪ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি : মির্জা ফখরুল
সরকারের দমন-পীড়ন, আওয়ামী সন্ত্রাসের প্রতিবাদে, নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোসহ পূর্বঘোষিত ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। বললেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস স্মরণ ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবি আদায়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত কী এমন ঘটল যে বাকশাল গঠন করতে হলো। ১৯৭৪-৭৫ সালের কথা ভুলে যান কেন। সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। একদলীয় সরকার ব্যবস্থা বাকশাল গঠন করা হলো। এরপর তথাকথিত বুদ্ধিজীবী তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। অথচ তাকেই সন্ত্রাস করে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই একটা সন্ত্রাসী দল। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে আমাদের এই অফিসের সামনেই নিহত হলেন আমাদের কর্মী মকবুল। যারা আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের অবশ্যই এর ঋণ শোধ করতে হবে। আমাদের রিকশাওয়ালা ভাইরা আজ চাল-আটা কিনতে পারে না। আজ বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, গ্যাসের দাম বাড়ছে। তারা বলেন সব নাকি রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে। আর এই যে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করলেন, কানাডায় বাড়ি করলেন। এই আওয়ামী লীগ মনে করে এই দেশ তাদের পৈত্রিক সম্পদ, এই মানুষ তাদের প্রজা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ এই সরকার পরিকল্পিতভাবে আমাদের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। ছদ্মবেশী বাকশাল তৈরি করেছে, নির্বাচনের নাটক তৈরি করেছে। কিন্তু এদেশের মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফেরত চায়। আমার শ্রমিক ভাই, আমার কৃষক ভাই সবার বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ জন্য এই সরকারকে সরাতে হবে। প্রতিটি জাতিকে তার নিজের ভাগ্যকে তৈরি করে নিতে হয়। আজ আমাদের হাতে এই পবিত্র দায়িত্ব এসেছে। জনগণকে সাথে নিয়ে লড়াইয়ের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ২৭ দফার মধ্যে পরিষ্কার করে বলেছি যে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনতে হবে। আমরা বলেছি দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন করতে হবে। আমাদের প্রথম দফা সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এরা এমনি এমনি যায় না। আন্দোলন করেই এদের সরাতে হবে। আমরা নিশ্চয়ই জনগণকে-দেশকে মুক্ত করব। যতক্ষন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরছে না, যতক্ষণ আমাদের সঙ্গীদের কারাগার থেকে মুক্ত করতে না পারছি, ততক্ষণ আন্দোলন চলবে।
পরবর্তী কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে, আমাদের কর্মীদের মুক্তি, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিসহ আমাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বিএনপি
অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানালেন তারেক রহমান
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ১২ মিনিটে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন বার্তায় তারেক রহমান লিখেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার সহযোগী উপদেষ্টাদের অভিনন্দন। যদি পেছনে ফিরে তাকাই গেলো ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশের মানুষ ব্যাপক অধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সম্মুখীন হওয়ার পর এই মুহুর্তটি এসেছে। আমাদের সাহসী ছাত্র-শিক্ষক, কর্মী, রিকশাচালক থেকে শুরু করে গৃহিণী, সাধারণ নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী- সমস্ত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ ব্যাপকভাবে কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে
তিনি বলেন, এই বিক্ষোভ শুধু কোটা সংস্কার নিয়ে নয়, নজিরবিহীন দুর্নীতি, মূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমন-পীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান। আওয়ামী লীগের শাসনামলে অন্যায়ের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।
নতুন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেই শাসনের পতনের সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণ অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য স্বাধীনভাবে ভোটাধিকারের প্রত্যাশা করে যেন তারা তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির অবস্থা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি পাবলিক ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার গঠন এবং জনগণের সেবা করে একটি জবাবদিহিমূলক সংসদ, জনগণের অধিকার ও স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং এর ফলে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে।
উল্লেখ্য, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের দরবার হলে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে শপথ নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। এরপর বাকি ১৬ উপদেষ্টার মধ্যে ১৩ জন শপথ পাঠ করেন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুকী আযম।
জেএইচ
বিএনপি
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে সরকারের প্রধান করা হয়েছে: ফখরুল
ছাত্র-জনতার সমর্থনেই ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিতে যাওয়া নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে। বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আহত নেতাকর্মীদের দেখতে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় আবেগপ্লুত মির্জা ফখরুল বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যে দৃশ্য দেখেছি তা সহ্য করার মতো না।
নতুন সরকার দেশে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করবে আশা প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, অর্থনীতিকে সচল রাখার দ্রুত উদ্যোগ নিবে সরকার। অন্তবর্তীকালীন সরকার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার কথা জানান তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র ও আমাদের মনোনীত ব্যক্তি ড. ইউনূস। তার সফল নেতৃত্বে চলমান সহিংসতা ও সংকট কেটে যাবে বলে বিশ্বাস করি।
এএম/
বিএনপি
নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহায়তা করবে বিএনপি : ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময়ে নির্বাচন আয়োজনে এ সরকরারকে বিএনপি পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিকেলে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিলম্ব না করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করুন। এই সরকার যারা হবেন, তারা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করবেন; সেই ব্যবস্থা তারা করবেন এবং এর জন্য পূর্ণ সহযোগিতা বিএনপি তাকে দেবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এ বিজয় ছাত্রদের, এ বিজয় আপনাদের। যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এটাকে রক্ষা করতে সবাই সচেতন থাকবেন। চক্রান্তকারীরা নতুন করে চক্রান্ত করতে পারে। তারা বিজয়কে বিলিয়ে দিতে পারে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে। সেই সুযোগ যেন তাদের না দেয়া হয়। যারা এসব করছে তারা দেশের শক্র। এরা কোনো আন্দোলনকারী হতে পারে না।
হামলা বা ভাঙচুর হচ্ছে তারা বিএনপির লোক নয় দাবি করে তিনি আরও বলেন, যারা আজকে বিভিন্ন এলাকায়, বিভিন্ন শহরে বন্দরে ভাঙচুর করছে, লুটপাট করছে তারা কেউ বিএনপির লোক নয়। তারা ছাত্রদের কেউ না। তারা দুর্বৃত্ত, দুষ্কৃতকারী। এটা তাদেরই লোক যারা এদেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চায়। সজাগ থাকবেন, সাবধান থাকবেন। বার বার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এ বিজয় যেন ছিনিয়ে নিতে না পারে।
প্রসঙ্গত, সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
আই/এ
মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন