বাংলাদেশ
বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব বছর গণনা করা হয় জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। চলতি হিসাব বছরে ব্যাংকগুলো জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে অর্ধবার্ষিক আর্থিক হিসাব শেষ করেছে। এ সময় অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে।
পরিচালন মুনাফা থেকে ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত হারে প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ, করপোরেট কর পরিশোধের পর নিট মুনাফার হিসাব হবে। নিট মুনাফাই ব্যাংকের সঠিক মুনাফা। কোনো কোনো সময় পরিচালন মুনাফা বেশি থাকলেও নিট মুনাফা কমে যায়। তবে, এবার নানা ব্যয় করার পর বোঝা যাবে, প্রকৃত মুনাফা কী দাঁড়ায়।
জুন শেষে ব্যাংকগুলোর তাদের অর্ধবার্ষিক আর্থিক হিসাব শেষ করলেও তা পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন করা হবে। পরে তা বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জমা দেবে। একই সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের জন্য অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুদহার কম থাকা, ঋণের কিস্তি আদায়ের সুবিধা, খেলাপি আদায়ের ধীর গতি, বিপরীত দিকে ব্যয় কমার কারণে পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।
যেসব ব্যাংকের পরিচালন মুনাফার তথ্য পাওয়ার গেছে, সেগুলো অধিকাংশই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। পরিচালন মুনাফা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এবার সবচেয়ে বেশি পরিচালন মুনাফা হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের। গত ছয় মাসে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১ হাজার ৭ কোটি টাকা। এছাড়া, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫০৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৪১৭ কোটি টাকা।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩৫৮ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২৪৩ কোটি টাকা।
সাউথইস্ট ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৮২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা করেছিল ৩৪২ কোটি টাকা।
ব্যাংক এশিয়ার পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৪৮৪ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৩৫১ কোটি টাকা।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২২৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১৭৫ কোটি টাকা।
ঢাকা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২৬৩ কোটি টাকা।
যমুনা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩০১ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২৬২ কোটি টাকা।
সাউথবাংলা অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৮০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৭০ কোটি টাকা।
শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২৮০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২৪৭ কোটি টাকা।
এক্সিম ব্যাংকের গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩৪০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৩১৭ কোটি টাকা।
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩১০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৩০৫ কোটি টাকা।
মধুমতি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১২৪ কোটি টাকা।
এনসিসি ব্যাংক গত ছয় মাসে ৩১৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। আগের বছর একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ২৯০ কোটি টাকা।
এছাড়া, পূবালী ব্যাংকের ৫০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে। আগের হিসাব বছরে একই সময়ে মুনাফা হয়েছিল ৪০০ কোটি টাকা।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ৯১ কোটি টাকা।
প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১৮৬ কোটি টাকা।
মেঘনা ব্যাংক গত ছয় মাসে পরিচালন মুনাফা করেছে ৭০ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল মাত্র ১২ কোটি টাকা।
শুভ মাহফুজ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ