জাতীয় পার্টি
চামড়া সিন্ডিকেট ভাঙতে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে: জিএম কাদের
চামড়ার সিন্ডিকেট ভাঙতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ এখন থেকেই নিতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের।
শনিবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সামনে ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ আসছে। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও হয়ত চামড়ার প্রকৃত মূল্য নিয়ে একটা সংকট সৃষ্টি হতে পারে। কাঁচাচামড়া বিদেশে রফতানি করার নিষেধাজ্ঞা আছে। এটি পচনশীল, খুব বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় না।
তিনি বলেন, প্রক্রিয়াজাতকরণ করলেই সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। সেটাতে কারখানার সুবিধা সীমাবদ্ধ। এতে অসৎ উদ্দেশ্যে সিন্ডিকেট করে, তারা যে মূল্য দেবে তাই বিক্রেতা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে। চামড়া বিক্রির টাকার সুবিধাভোগী ফকির-মিসকিন, এতিম, গরিব, দুস্থ লোকজন বঞ্চিত হন। চামড়ার প্রকৃত বাজারমূল্য নিশ্চিত করতে এ সিন্ডিকেট ভাঙতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজন হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য কাঁচাচামড়া রফতানি উন্মুক্ত করা যেতে পারে। তখন প্রতিযোগিতার ফলে চামড়ার প্রকৃত মূল্য বিক্রেতারা পাবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা কমিটিকে কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। নিয়ম, আইন বা অর্থ বরাদ্দ এমন কিছুই থাকে না যাতে করে তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন। প্রায়সময় সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপ দিতে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। ফলে, তাদের প্রধান কাজ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরাসরি মন্ত্রীকে খুশি করে কাজটি বাস্তবায়ন করা। প্রায় ক্ষেত্রেই সহযোগিতা পাওয়া যায় না। টেলিফোন করলে তারা ধরেন না। পত্র দিলে কোনো উত্তর/সমাধান মেলে না। সংসদ সদস্যরা অনেকেই তখন বাধ্য হয়ে সমাধানের লক্ষ্যে বিষয়গুলো সংসদে তুলে ধরেন। যদিও এরপর সমাধান তেমন একটা পাওয়া যায় না।
এ সময় তিনি নিজের নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাট ও রংপুরের কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ২/৩ মাস আগে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সচিবকে মেরামতের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কোনো কাজ হয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীর পাশাপাশি করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সব ধরনের রোগীর জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু যন্ত্রপাতি ও ওষুধের চাহিদা দিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চাহিদা পত্র দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে ক্লিনিক করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা মনে করি এগুলোকে এখন কাজে লাগানো দরকার। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত আছে সেগুলোতে যেখানে মঞ্জুরিকৃত পদ খালি আছে। সেখানে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও অন্যান্য কর্মচারী জরুরিভাবে নিয়োগ দিতে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। চিকিৎসা সহায়ক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের প্রয়োজন নিরুপণ ও সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। এগুলো যে ব্যবহার উপযোগী থাকে ও রোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি চিকিৎসা কেন্দ্রে করোনা চিকিৎসার জন্য আলাদা চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকতে হবে। জেলা পরে উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর সুবিধাসহ আইসিইউ চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। কমপক্ষে জেলা পর্যায় পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার ব্যবস্থা সম্প্রসারিত করতে হবে।
জাতীয় পার্টি
জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন: জিএম কাদের
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে শিক্ষক প্রতিনিধিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও তিন বাহিনী প্রধানের বৈঠকে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম চূড়ান্ত হওয়ায় স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
বুধবার (৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জীবন্ত কিংবদন্তি ড. ইউনুস আমাদের অহংকারের ধন। ক্ষুধা ও দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার যে ধারণা তিনি প্রবর্তন করেছেন তা সারা বিশ্বের সামনে এক অনন্য মডেল। বিশ্ববাসীর কল্যাণে ড. ইউনুসের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ঈর্ষনীয় সাফল্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের বর্তমান বাস্তবতায় ড. মোহাম্মদ ইউনূসের বিকল্প হয় না। ড. ইউনূসের নেতৃত্বকে সহায়তা দিতে জাতীয় পার্টি প্রস্তুত।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে ড. ইউনূস সফল হবেন । তার নেতৃত্বেই ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা শুরু হবে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খুনাখুনি, চুরি, ডাকাতি ও হাইজ্যাকের খবর আসছে। দেশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে আছে। স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া জাতির মাঝে আতঙ্ক থাকবে কেন?
উল্লেখ্য, দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
আটক ৬ ছাত্রনেতাকে মুক্তি দিতে হবে: জি এম কাদের
বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আবলছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
সোমবার (২৯ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র, এখানে দেশের মালিক জনগণ। দেশের সব ক্ষমতার মালিকও জনগণ। সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা বা প্রতিবাদ করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। অহিংস প্রতিবাদকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসেবে বিবেচনা করার বা সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এবং প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ব্যবহার করে সংহিসভাবে মোকাবিলা করার অধিকার সরকার বা সরকারি দলের নেই। সে কারণে শুধু ছাত্র নয়, কোনো আন্দোলন দমাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য গুলি করতে পারে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা হেফাজতের নামে বেশ কয়েক দিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয়জন সমন্বয়ককে ডিবি অফিসে আটকে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার ডিবি হেফাজতে থেকেই আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
এদিকে সাধারণ ছাত্ররা মনে করছেন, গোয়েন্দা সংস্থা বলপূর্বক এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের বাধ্য করছে। এ কারণে সাধারণ ছাত্ররা আটক সমন্বয়কদের সেই ঘোষণা প্রত্যাখান করেছেন। দিনের পর দিন সাধারণ ছাত্রদের নিরাপত্তার নামে তাদের ও তাদের পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখাকে আমরা আইনসম্মত মনে করি না।
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়েছেন। হেলিকপ্টার এবং বহুতলবিশিষ্ট বাড়ির ছাদের ওপর থেকে এবং ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। যে কারণে বাবা-মায়ের কোলের মধ্যে ও ঘরের মাঝে খেলাধুলারত অবস্থায় শিশু নিহত হয়েছে। আবার ঘরের ভেতরে কাজ করতে করতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহিণী নিহত হয়েছেন বলেও গণমাধ্যমে এসেছে।
একইভাবে অসংখ্য নিরীহ পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এ ধরনের গুলির উদ্দেশ্য কী ছিল? সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে এ ধরনের প্রক্রিয়ায় কী সন্ত্রাসী চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল? বাবার কোলে শিশু, রান্নাঘরে গৃহিণী ও নিরীহ পথচারী, তারা কী সন্ত্রাসী? এই মৃত্যুর দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
বিবৃতিতে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, আন্দোলন দমাতে দেদারছে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ মানুষের মাঝে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। দেশের মানুষ যেন আতঙ্কের রাজ্যের বাসিন্দা। প্রতিটি হতাহত এবং সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে আমরা বিচার চাচ্ছি।
এএম/
জাতীয় পার্টি
গ্রেপ্তার হলেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বুধবার (২৪ জুলাই) রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিবি প্রধান হারুন-উর-রশিদ।
ডিবি প্রধান জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উসকানি দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে ব্যারিস্টার পার্থের বিরুদ্ধে। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। এ জন্য তাকে তুলে নেয়া হতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীতে সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনায় ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় ২০১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২২০৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, সহিংসতা নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২৪ জুলাই) ৭৩ মামলায় ১৭৫৮-কে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আর আজ ১২৮ মামলায় ৪৫১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ২০১ জনকে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন ডিএমপির এ কর্মকর্তা।
এসি//