শেয়ারবাজার
ডিএসই-সিএসইতে নিয়োগ-ছাঁটাই বন্ধ
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই-সিএসই) সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
ইতোমধ্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের সার্ভিস রেগুলেশন (চাকরি বিধি) সংশোধনের জন্য বিএসইসির গঠিত কমিটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন একই রকম করতে চায় কমিশন। জানা গেছে, সার্ভিস রেগুলেশন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিএসইসির অনুমতি ছাড়া ডিএসই ও সিএসইর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, ছাঁটাই এবং পদোন্নতি না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, প্রস্তাবিত সার্ভিস রেগুলেশনে নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন আনা প্রয়োজন সে বিষয়ে ডিএসই ও সিএসইর কাছে জানতে চেয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি ডিএসই ও সিএসইকে কমিটি গঠন করার নির্দেশও দিয়েছে বিএসইসি। আর গঠিত কমিটিকে এক মাসের মধ্যে সার্ভিস রেগুলেশন সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে বলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গত ৮ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসই ও সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে বিএসইসি।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৭ জুন বিএসইসিতে চিঠি পাঠিয়েছিল ডিএসই ও সিএসই। উভয় প্রতিষ্ঠানের প্রেরিত চিঠিতে সার্ভিস রেগুলেশন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন জানানো হয়। ডিএসই ও সিএসইর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে কমিশন প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আরও ৩০ কার্যদিবস সময় বাড়িয়েছে। বর্ধিত এ সময়ের মধ্যে ডিএসই ও সিএসইকে সার্ভিস রেগুলেশন প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে হবে।
এছাড়া, চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিদ্যমান চাকুরি প্রবিধানমালার অধীনে স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতি সম্পর্কিত কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত বিএসইসির অনুমতি ছাড়া না নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে গত ১৫ জুন বিএসইসির পাঠানো চিঠিতে ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের বিষয়ে জানায় বিএসইসি। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ৬(৩) ধারা অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়। গঠিত কমিটিকে বিএসইসির প্রস্তাবিত সার্ভিস রেগুলেশনে কোনো সংশোধনের প্রয়োজন কি-না সে বিষয়ে প্রতিদেন দাখিল করতে বলা হয়। বিশেষ করে বিদ্যমান সার্ভিস রেগুলেশনের সঙ্গে প্রস্তাবিত সার্ভিস রেগুলেশনে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো অধিক যাচাই-বাছাই করে দেখতে বলা হয়।
এর আগে ২০১৮ সালের ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন প্রণয়নের জন্য এক্সচেঞ্জস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট, ২০১৩ এবং এক্সচেঞ্জস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করে বিএসইসি। আর ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশনের নিয়োগ, ছাঁটাই ও পদোন্নতির বিষয়ে পরিবর্তন আনার জন্য প্রস্তাব দেয় বিএসইসির ওই গঠিত কমিটি। এরই ধরাবাহিকতায় ডিএসই ও সিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের কর্মীদের সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনার জন্য গত বছরের জুন মাসে ডিএসই একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদনে, ডিএসইতে প্রয়োজনের তুলনায় ৭০-৮০ জন বেশি কর্মী রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে প্রতিবেদনের উঠে আসে। এছাড়া এক্সচেঞ্জের ‘সি’ লেভেলের কর্মকর্তাদের (শীর্ষ কর্মকর্তাদের) অত্যধিক বেতন-ভাতার বিষয়টিও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডিএসইর পর্ষদ ব্যয় নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ জুন ১০ জন অধিক কর্মীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে ছাঁটাই করেছে ডিএসই। ফলে ছাঁটাই আতঙ্কে দিন পার করছে ডিএসইর কর্মীরা।
এদিকে, সিএসইতে এখন পর্যন্ত ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু না হলেও কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি ছাঁটাই না করে বিনা করণে কর্মীদের অন্যত্র স্থানান্তর করছে। যাতে বাধ্য হয়ে কর্মীরা পদত্যাগ করেন। বিভিন্ন গ্রুপিংয়ের কারণে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. আব্দুল মতিন পাটোয়ারী বলেন, ডিএসইর সার্ভিস রেগুলেশন প্রণয়নের বিষয়ে কাজ কাজ চলছে। এ জন্য ডিএসই একটি ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। গঠিত কমিটি সংশোধিত সার্ভিস রেগুলেশন কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন সেসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিএসইসি আমাদেরকে এক মাস সময় দিয়েছে।
শুভ মাহফুজ
অর্থনীতি
পুনরায় বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান পদে পুন:নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। গেল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পুন:নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন।
গেলো (৩১ মার্চ) শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে আরও এক মেয়াদে (চার বছরের জন্য) পুন:নিয়োগ দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন।
২০২০ সালের ১৭ মে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে চার বছরের জন্য চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে আগামী ১৬ মে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩-এর ধারা-৫ (১) অনুসারে, বিএসইসিতে একজন চেয়ারম্যান ও চারজন কমিশনার দায়িত্ব পালন করেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান পুন:নিয়োগের বিষয়ে আইনে বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা তাদের নিয়োগের তারিখ থেকে চার বছর মেয়াদের জন্য নিজ নিজ পদে বহাল থাকবেন। অনুরূপভাবে একটিমাত্র মেয়াদের জন্য পুন:নিয়োগের যোগ্য হবেন। এক্ষেত্রে শর্ত হলো, কোনো ব্যক্তির বয়স ৬৫ পূর্ণ হলে তিনি চেয়ারম্যান বা কমিশনার পদে অযোগ্য হবেন। অথবা চেয়ারম্যান বা কমিশনার পদে বহাল থাকতে পারবেন না।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের বয়স আগামী ১৬ মে ৫৬ বছর ৪ মাস ১৫ দিন হবে। সেই মোতাবেক তার বয়স ৬৫ বছর পূর্ণ হতে ৪ বছরেরও বেশি সময় বাকি আছে। এযুক্তিতে তিনি আরও একটি মেয়াদে চার বছরের জন্য পুন:নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য।
প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিপত্র অনুসারে গেল ৪ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১৭ মে থেকে পরবর্তী ৪ বছরের জন্য আরও এক মেয়াদে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বিএসইসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
১৯৬৮ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকার ধামরাইয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার গভ. ল্যাবরেটরি হাই স্কুল থেকে ১৯৮৩ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৮৫ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮৫-১৯৮৯ সেশনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তার বাবা রফিকুল ইসলাম খান ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। দেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রয়াত হাসিনা মমতাজ তার মা । তার স্ত্রী শেনিন রুবাইয়াত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশন বিটিভির সংবাদ পাঠিকা। এই দম্পতি দুই ছেলে সন্তানের বাবা-মা।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং ও বিমা শিক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তিনি দেশে-বিদেশে ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং এবং বিমা সম্পর্কিত অনেক ব্যবসায়, চেম্বার এবং গবেষণায় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি টারশিয়ারি পর্যায়ের জন্য ‘ই-কমার্স ও ই-ব্যাংকিং’ এবং মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় বোর্ড প্রকাশিত ‘ফাইন্যান্স ও ব্যাংকিং’ বইয়ের লেখক। তার ১৬টিরও বেশি গবেষণা প্রকাশনা এবং পাঁচটি আন্তর্জাতিক গবেষণামূলক প্রবন্ধ রয়েছে । তিনি আইন ও ব্যবহারিক ব্যাংকিং, রিটেইল ও ই-ব্যাংকিং, বৈদেশিক বিনিময় ও আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং, করপোরেট সুশাসন, ব্যবসায় ও মৌলিক বিমা সংক্রান্ত আইন বিষয়ের ওপর বিশেষজ্ঞ। শিবলী রুবাইয়াত চীনের চেংদু-তে অবস্থিত সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত ‘অতিথি অধ্যাপক’ ছিলেন।
উল্লেখ্য, কর্মদক্ষতা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসকো) পরিচালক (বোর্ড ডিরেক্টর) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। শিবলী রুবাইয়াত প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইওএসকোর বোর্ড ডিরেক্টর হয়েছেন। একই সঙ্গে আইওএসকোর এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল কমিটির ভাইস চেয়ার হিসেবে পুননিয়োগ পেয়েছেন। আগামী ২০২৪-২৬ সাল পর্যন্ত ওই পদে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। গেল ২০ ফেব্রুয়ারি আইওএসকোর সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন মোলোনি স্বাক্ষরিত এক বার্তায় তাকে এ তথ্য জানানো হয়। এটা বাংলাদেশের জন্য প্রথম কোনো বড় অর্জন।
শেয়ারবাজার
ওয়ালস্ট্রিটের পূঁজিবাজারে টালমাটাল পরিস্থিতি, পতনের ধারা অব্যাহত
বিশ্বের সবচেয়ে বড় পুঁজিবাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের পুঁজিবাজারগুলোয় টালমাটাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চলতি বছরের জুলাইয়ের পর প্রধান সূচক এসঅ্যান্ডপি ৫০০ কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। মার্কিন গণমাধ্যম এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক কমে গিয়ে হয় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বা ১৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। এতে তাদের পয়েন্ট ৪ হাজার ১১৭ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। এ হিসেবে জুলাইয়ের পর সূচকটির ১০ দশমিক ৩ শতাংশ পতন হয়। ওই সময় ৪ হাজার ৫৮৮ দশমিক ৯৬ ছিল এসঅ্যান্ডপির সর্বোচ্চ পয়েন্ট।
এপির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়,নীতি সুদহার বৃদ্ধি নিয়ে বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত বলেই পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত তিন মাস ধরে মার্কিন পুঁজিবাজারের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। এর জন্য দায়ি নীতি সুদহার ‘দীর্ঘমেয়াদে’ ধরে রাখার ব্যাপারে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ নীতি সুদহার ‘দীর্ঘমেয়াদে’ ধরে রাখার কথা বলছেন। একই সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদি সরকারি বন্ডের হার ২০০৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর মুনাফার প্রতিবেদন নিয়ে বিনিয়োগকারীদের দুশ্চিন্তাও দরপতনের জন্য দায়ি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাতের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর শুক্রবার উত্থান দেখা যায় অপর সূচক নাসডাকে। এদিন,নাসডাকের পয়েন্ট বৃদ্ধি পায় ৪৭ দশমিক ৪১ বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ, যাতে তাদের পয়েন্ট হয় ১২ হাজার ৬৪৩ দশমিক ০১।
আমাজনের শেয়ারদর বাড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। মুনাফার প্রতিবেদন প্রকাশের তাদের শেয়ারে বৃদ্ধি দেখা যায়। খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানটি এই গ্রীষ্মে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মুনাফা ও রাজস্ব আয় করেছে। ওয়াল স্ট্রিটে অন্যতম বৃহৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর এসঅ্যান্ডপি ৫০০-সহ সব সূচকের ওঠা-নামায় ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
ওয়াল স্ট্রিটে যেসব বৃহৎ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সূচকের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে তাদের একসঙ্গে বলা হয় ‘ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন’।আমাজন রয়েছে এসব কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে। তাই এদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা তুলনামূলক বেশি। তবে পতনের ধারায় রয়েছে ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের অন্যতম কোম্পানি অ্যালফাবেট,মেটা ও টেসলার।
ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের বাইরে রয়েছে ইনটেল। মার্কিন এই কোম্পানিটি বাজারের উত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখে। শুক্রবার তাদের শেয়ারদর বাড়ে ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তাদের শেয়ার দর বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার চেয়ে এই গ্রীষ্মে বেশি মুনাফা করায। তবে স্বাস্থ্যসেবা, জ্বালানি ও আর্থিক সেবা খাতের সূচকগুলো। তাই বিনিয়োগকারীরা বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করছেন।
বেশ কয়েকটি বড় কোম্পানি শেষ প্রান্তিকে হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে এক্সন মবিলের শেয়ারদর কমে ১ দশমিক ৯ শতাংশ। অন্যদিকে, শেভরনের কমে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
ঢাকা
জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ডিএসই’র নতুন এমডির শ্রদ্ধা
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনি যোগদান করেন। যোগদানের পর বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ডিএসই’র নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি যাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্ষিত মন্তব্য খাতায় স্বাক্ষর করেন।
এ সময় ড. এটিএম তারিকুজ্জামানের সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, মোঃ আশরাফুল ইসলাম, পরিচালক মোঃ মনসুর রহমান, অতিরিক্ত পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, ডিএসই’র প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এ.জি.এম সাত্বিক আহমেদ শাহ, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ও কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ড. এটিএম তারিকুজ্জামান, সিপিএ ২৫ বছরেরও অধিক সময় পুঁজিবাজারের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে এমকম এবং সাউথ ইস্টার্ণ ইউনিভার্সিটি (ইউকে ক্যাম্পাস) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে উপ-পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।
বিএসইসিতে চাকরিরত অবস্থায় ড. তারিক ২০০৭-২০০৯ এর সময় অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ডেকিন ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার অব ফিনান্সিয়াল প্লানিং (এমএফপি) ও মাস্টার্স অব প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং (এমপিএ) অধ্যায়নের জন্য AusAid স্কলারশিপ লাভ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন এর ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফিন্যান্সে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ড. এটিএম তারিকুজ্জামানের দেশে ও বিদেশে শিক্ষকতা পেশায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এবং এশিয়া-প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডজান্ট লেকচারার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে তিনি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের মোনাশ ইউনিভাসির্টির মোনাশ বিজনেস স্কুল, আরএমআইটি ইউনিভার্সিটি এবং নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের স্কুল অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড কমার্শিয়াল ল’তে শিক্ষক সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটনের স্কুল অব অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড কমার্শিয়াল ল’তে লেকচারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রফেশনাল মেম্বারশিপ হিসেবে তিনি সিপিএ (অস্ট্রেলিয়া), দ্যা ইন্সটিটিউট অব ডিরেক্টরস (আইওডি) এবং নিউজিল্যান্ড ইনকরপোরেশন থেকে দ্যা ইন্সটিটিউট অব ফাইন্যান্স প্রফেশনালস নিউজিল্যান্ড আইএনসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এএম/