জাতীয়
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ড. শামসুল আলম
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে চলেছেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদ্য সাবেক সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক এই বিভাগের দায়িত্ব পালন করেছেন। আগামী রোববার (১৮ জুলাই) বঙ্গভবনে তার শপথ অনুষ্ঠিত হবে।
আজ শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেনছেন ড. শামসুল আলম।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ড. শামসুল আলম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে জিইডিতে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেটি আমি সূচারুরূপে পালন করার চেষ্টা করেছি। তিনি আমাকে নতুন যে দায়িত্ব দিচ্ছেন, সেই দায়িত্বও শতভাগ পালন করার বিষয়ে আশাবাদী। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রধান কাজ হবে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো।’
দীর্ঘ ৩৫ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা শেষে প্রেষণ ছুটিতে ড. শামসুল আলম ২০০৯ সালের ১ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন এবং চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সৃষ্টির পর সদস্য হিসেবে ড. আলমই সবচেয়ে দীর্ষ সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে যান। ড. শামসুল আলম ২০১৪ সালের ফেব্রয়ারি থেকে রাষ্ট্রপতির ১০ শতাংশ কোটায় ক্যাডার সার্ভিসের বাইরে প্রথম সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা অর্জন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগে দীর্ঘ ৩৫ বছর অধ্যাপনায় যুক্ত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগদানের আগে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন এবং বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশনে তার প্রাপ্ত প্রথম দায়িত্বের মধ্যে ছিল দ্বিতীয় দারিদ্র্য বিমোচন কৌশলপত্র (২০০৯-১১), সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের আলোকে সংশোধন পুনর্বিন্যাস করা।
সংশোধিত সেই দলিল ‘দিন বদলের পদক্ষেপ’ জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত হয়ে ২০১০-১১ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়। রূপকল্প ২০২১ এর আলোকে প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম দীর্ঘমেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১), ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-১৫), সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২১-২৫) ড. আলমের নেতৃত্বে ও অংশগ্রহণে প্রণীত হয়।
পরিকল্পনা কমিশনে ড. আলমের কার্যকালীন সময়ে অন্যসবের মধ্যে বাংলাদেশে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বিষয়ক ১৫টি গ্রন্থ, এসডিজি বিষয়ক ২৫টি প্রতিবেদন ও মূল্যায়ন গ্রন্থ প্রণীত হয়েছে।
বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন কৌশলপত্র (২০১১-২১) এবং বাংলাদেশের প্রথম সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্র (এনএসএসএস) ড. আলমের নেতৃত্বে (২০১৫-২৫) প্রণীত হয়েছে। ড. আলমের অংশগ্রহণে ও নেতৃত্বে শতবর্ষী বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণীত হয়েছে (২০১৮)। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগে কার্যকালীন সময়ে তাঁর তত্তাবধানে ও সম্পাদনায় এ পর্যন্ত গত ১২ বছরে ১১৫ টি মূল্যায়ন প্রতিবেদন, অধ্যয়ন ও গবেষণা গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে শামসুল আলম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি অর্থনীতি স্নাতক (সম্মান) কোর্সে ভর্তি হন। ড. শামসুল আলম ১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতিতে এমএসসি, ১৯৮৩ সালে ব্যাংককের থাম্মাসাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ অর্থনীতি এবং ইংল্যান্ডের নিউ ক্যাসেল আপন টাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে অর্থনীতি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. আলম বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও শিক্ষকতায় ১৯৭৪ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন।
অধ্যাপনা জীবনে ড. আলম ২০০৮ সালে জার্মানির হোমবোল্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বেলজিয়ামের ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেদারল্যান্ডসের ভাগিনিঙ্গেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিকস স্কুলে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষকতায় অংশ নেন। প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডজাঙ্কট ফ্যাকাল্টি হিসেবেও কৃষি অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন তিনি।
শেখ সোহান
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ