বাংলাদেশ
জেনে নিন কোরবানি ঈদের ১০ রেসিপি
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। আর তা যদি হয় ঈদুল আজহা, মানে কোরবানির ঈদ তাহলে তো কথাই নেই। কারণ মাংসের নানা পদে বিশেষ খানাপিনার আয়োজন থাকে। এদিন ডাইনিং টেবিলে থাকবে গরু ও খাসির মাংসের নানা পদ। গরুর বা খাসির মাংসের বহুরকম স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় সব পদের চল হয়েছে দেশের সব অঞ্চলেই। ভোজন বিলাসীদের রসনাকে উসকে দিতে গরু ও খাসির মাংসের মজাদার ১০টি রেসিপি তুলে ধরা হলো।
মেজবানি মাংস
উপকরণ
গরুর মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ ও লাল মরিচ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, সরিষার তেল ১ কাপ, মাংসের মসলা ১ চা চামচ, টক দই ১ কাপ, কাঁচামরিচ ১০/১২টি, গোলমরিচ ১ চা চামচ, দারচিনি ও এলাচ ৫/৬টি, জয়ফল ও জয়ত্রী আধা চা চামচ, মেথি গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, তেল, টক দই, হলুদ, মরিচ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, লবণসহ সব মসলা নিয়ে ঘণ্টা খানিক মেরিনেট করে রাখুন। অর্ধেক পেঁয়াজ তেলে ভেজে বেরেস্তা করে নিন। চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে মেরিনেট করা মাংস কষিয়ে নিন। হাঁড়িতে ২ কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষাতে হবে। মাংস থেকে পানি ঝরে গেলে মৃদু আঁচে মাংস সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিন। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে কাঁচামরিচ, ধনে পাতা, জিরা গুঁড়া দিয়ে মৃদু আঁচে ১০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে তারপর পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন সুস্বাদু গরুর মেজবানি মাংস। মেজবান মাংস রান্নার জন্য দোকানে লাল মরিচের গুঁড়া পাওয়া যায় যেটা খেতে খুব একটা ঝাল না কিন্তু মাংসের লালা রং করার জন্য এই ঝালের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।
গরুর কালা ভুনা
উপকরণ
২ কেজি হাড় ছাড়া গরুর মাংস, ১/২ চামচ বা মরিচ গুড়া, ১ চামচ হলুদ গুড়া, ১/২ চামচ জিরা গুড়া, ১/২ চামচ ধনিয়া গুড়া, ১ চা চামুচ পেঁয়াজ বাটা, ২ চামচ রসুন বাটা, ১/২ চামচ আদা বাটা, সামান্য গরম মশলা (দারুচিনি, এলাচি), ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুঁচি, কয়েকটা কাঁচা মরিচ, পরিমান মতো লবণ, সরিষার তেল।
প্রণালি
গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর লবণ, তেল ও বাকি সব মশলা দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে (পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ বাদে)। মাখানো মাংসটি এবার চুলায় হালকা আঁচ রেখে জ্বাল দিতে হবে। এবার দুই কাপ পানি দিয়ে আবারও ঢাকনা দিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ হতে সময় লাগবে। যদি মাংস সেদ্ধ না হয় তবে আবারও গরম পানি এবং জাল বাড়িয়ে নিন । ঝোল শুকিয়ে , মাংস নরম হয়ে গেলে রান্নার পাত্রটি সরিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি কড়াই নিয়ে, তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ ভাঁজতে থাকুন। সোনালী রং হয়ে আসলো সেই কড়াইতে গরুর মাংস দিয়ে, হালকা আঁচে ভাজতে হবে। মাংস কালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন, খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাংস পুড়ে না যায়। সবশেষে রান্নাটি নামানোর আগে লবণটি চেখে নিন। কালা ভুনার স্বাদ আরও বাড়াতে খাঁটি সরিষার তেল ব্যাবহার করুন।
গরুর কড়াই গোস্ত
উপকরণ
গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, হলুদ ও গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, মাংসের মসলা ১ চা চামচ, দারচিনি ও এলাচ ৩/৪ টুকরো, জয়ফল, জয়ত্রী বাটা ১ চা চামচ, টক দই ১ কাপ, টমেটো কিউব ১ কাপ, তেজপাতা ২টি, তেল ১ কাপ, রসুন কোয়া ২/৩টি, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, টক দই, লবণসহ সব মসলা একসঙ্গে ভালো করে মেখে ২০/২৫ মিনিট মেরিনেট করে রাখুন। হাঁড়িতে তেল গরম করে অর্ধেক পেঁয়াজ কুচি, দারচিনি, এলাচ, তেজপাতা হালকা বাদামী করে ভেজে মেরিনেট করা মাংস দিয়ে নেড়ে কষাতে হবে। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে মৃদু আঁচে রান্না করতে হবে। কিছু সময় পর মাংস সেদ্ধ হলো কিনা দেখে নিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে আসলে ও মাংসের ওপর তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে রাখতে হবে। তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি, রসুনের কোয়া, টমেটো কুচি হালকা বাদামী করে ভেজে মাংস কড়াইয়ে দিয়ে ২/৩ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে ফেলুন। এভাবেই তৈরি হয়ে যাবে গরুর মাংসের কড়াই গোস্ত।
কাটা মসলায় বিফ ভুনা
উপকরণ
গরুর মাংস ১ কেজি, আদা বাটা ১ টেবিল, রসুন বাটা আধা টেবিল চামচ, জয়ফল ও জয়ত্রী আধা টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া সামান্য, দারচিনি, এলাচ, তেজপাতা ১/২টি, শুকনো মরিচ কাটা ১৫/২০টি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, টক দই আধা কাপ, লবণ স্বাদমতো, তেল পরিমাণ মতো।
প্রণালি
টক দই দিয়ে মাংস আধা ঘণ্টা ভালো করে মেরিনেট করে রেখে দিতে হবে। চুলায় তেল গরম হলে মাংস ছেড়ে দিয়ে ভালো করে ভাজতে হবে। ভাজা হলে পেঁয়াজ কুচি ও শুকনো মরিচ দিতে হবে। এবার সব মসলা মাংসে দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে একটু পানি দিয়ে দমে বসিয়ে রাখতে হবে। মাংসের ওপর তেল ভেসে উঠলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন কাটা মসলায় বিফ ভুনা।
ঝুরি মাংস
উপকরণ
গরুর মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি দেড় কাপ, ১ চা-চামচ আদা বাটা , ১ চা-চামচ রসুন বাটা, লবণ স্বাদমতো, চা-চামচ গোলমরিচ বাটা, ১ চা-চামচ জিরা বাটা, ধনে বাটা ১ চা-চামচ, বাদাম বাটা ১/২ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, সরষে বাটা ১/২ চা-চামচ, এলাচি-দারুচিনি-লবঙ্গ কয়েকটা, তেজপাতা ৩-৪টা, তেল ১ কাপ, গরম মসলা গুঁড়া ১/২ চা-চামচ।
প্রণালি
পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ তেলে বাদামি করে ভেজে নিয়ে সব মসলা কষিয়ে নিয়ে মাংস দিয়ে দিতে হবে। পরিমাণ মতো পানি দিয়ে মাংস সেদ্ধ করে নিতে হবে। অনেকক্ষণ জ্বাল দিয়ে মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে নামিয়ে নিতে হবে। এবার মাংস নেড়েচেড়ে ঝুরা করে নিতে হবে। অল্প তেলে ১ কাপ পেঁয়াজ বাদামি করে ভেজে ঝুরা মাংস দিয়ে নাড়তে হবে। ভাজা ভাজা হয়ে গেলে গরম মসলা ও গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে মাংস নামিয়ে নিতে হবে । এভাবেই ঝুরা মাংস রান্না হয়ে গেল। এরপর খাওয়ার আগে গরম করে পরিবেশন করতে হবে।
গোশত-ভর্তা
উপকরণ
হাড় চর্বি ছাড়া গরু বা খাসির গোশত, ৪ থেকে ৫টা শুকনো মরিচ (বোটাসহ শুকনো মরিচ ভাজতে হবে), ২ থেকে ৩টি কাঁচা মরিচ বোটা ছাড়িয়ে, দুইটি পেঁয়াজ কুচি (পাতলা পাতলা পেঁয়াজ কুচি), লবণ পরিমাণ মতো, রসুন কুচি (পাতলা করে কেটে নিতে হবে), ১ / ৪ ভাগ গরম মসলা গুঁড়ো, হাফ চা চামচ ভাজা জিরার (জিরা টেলে নিয়ে গুঁড়ো করতে হবে) গুঁড়ো, সরিষার তেল পরিমাণ মতো।
প্রণালি
গোশত রান্না করার পরে হাড় ও চর্বি ছাড়া যে গোশতগুলো থাকে সেগুলো নিয়ে নিতে হবে। ৮ থেকে ১০ পিস গোশত কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে বা চাকু দিয়ে নরম করে নিতে হবে। এবার একটি প্যানে তেল নিয়ে ৪ থেকে ৫টি শুকনো মরিচ (শুকনো মরিচের বোটা সঙ্গে রেখে ভাজতে হবে, বোটা ফেলে দিলে মরিচে তেল ঢুকবে তবে ভাজার পর আর মচমচে থাকবে না), আর ২ থেকে ৩টি কাঁচা মরিচ (কাঁচা মরিচের পেছন থেকে কেটে ফেলে দিতে হবে, নাহলে তেল ছিটবে) দিয়ে দিবেন। মরিচ ভাজা হলে তুলে নিয়ে দুইটি পেঁয়াজ কেটে নিতে হবে আর মরিচগুলো লবণ দিয়ে ভেঙে নিতে হবে। মরিচে লবণের পরিমাণ কম দিতে হবে কারণ রান্না করা গোশত লবণ দেয়া থাকে। পেঁয়াজও হাত দিয়ে ভালো করে চটকে নিতে হবে। পাতলা পাতলা করে রসুন কুচি করে কেটে নিতে হবে আর আদাও পাতলা করে কেটে নিতে হবে। এক চামচের চার ভাগের এক ভাগ গরম মসলা, হাফ চা চামচ টেলে নেয়া জিরার গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মেখে নিতে হবে। এবার কুচি করা গোশতগুলো এর মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। এর সঙ্গে আরও দিতে হবে সরিষার তেল। তারপর গোশতর সঙ্গে এগুলো খুব ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। এভাবে তৈরি হয়ে যাবে গরুর গোশতর মজাদার ভর্তা। এটি খেতে খুবই সুস্বাদু ও মজাদার। এই ভর্তা দিয়ে একবারে অনেক গরম ভাত খাওয়া যায়।
আচার-ই-মাংস
উপকরণ
গরু বা খাসির মাংস দুই কাপ, আদা বাটা এক চা চামচ. রসুন বাটা এক চা চামচ, মরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, ধনে গুঁড়ো এক চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো এক চিমটি, তেজপাতা দুইটা, পাঁচ ফোঁড়ন এক চা চামচ, সরিষা বাটা এক চা চামচ, ভিনেগার এক চা চামচ, গোটা রসুন আধা কাপ, গরম মসলা গুঁড়ো আধা চা চামচ, শুকনা মরিচ পাঁচ-ছয়টা, সরিষার তেল দুই কাপ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি
একটি প্যানে মাংস নিয়ে তাতে হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, আদা-রসুন বাটা ও লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন। এবার পরিমাণমতো পানি দিয়ে মাংস সিদ্ধ করে নিতে হবে। এখন অন্য একটি প্যানে দুই কাপ সরিষার তেল গরম করে এতে তেজপাতা শুকনা মরিচ ও পাঁচ ফোঁড়ন দিয়ে নাড়তে থাকুন। এবার সরিষা বাটা, ভিনেগার ও গোটা রসুন দিয়ে নাড়তে থাকুন দুই মিনিটের মতো। এরপর, এর মধ্যে মাংস দিয়ে দিন এবং নাড়তে থাকুন। এখন এতে গরম মসলা গুঁড়ো দিন। এভাবে নাড়তে নাড়তে যখন মাংস ভাজা ভাজা হবে ও রসুনগুলো সিদ্ধ হবে তখন নামিয়ে নিন। এবার আচার ঠাণ্ডা করে যেকোনো কাচের পাত্রে রেখে দিতে পারেন তিন চার মাসের জন্য।
খাসির গ্লাসি কারি
উপকরণ
খাসির মাংস ৭৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুঁচি ১ কাপ, আস্ত গরম মশলা (দারচিনি, ২টি, এলাচ ২টি, লবঙ্গ ৩টি, গোলমরিচ ৫টি, তেজপাতা ১টি) আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১/২ টেবিল চামচ, বাদাম বাটা ১ ১/২ টেবিল চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, নারিকেল বাটা ১ ১/২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা-চামচ, গরম মশলা বাটা (দারচিনি ২ টুকরা, এলাচ ২টি, লবঙ্গ ৩টি, তেজপাতা ১টি সব একসঙ্গে বেটে নেয়া), জয়ফল গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, জয়িত্রী গুঁড়া ১/৪ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১/২ চা চামচ, টালা জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, আলুবোখারা ৫টি, তেল+ঘি মিলিয়ে ৪ টেবিল চামচ
প্রণালি
প্রথমে পাত্রে তেল গরম হতে নিন। এরপর গরম তেলে একে একে পেঁয়াজ কুঁচি এবং আস্ত গরম মশলা দিয়ে দিন। পেঁয়াজের কালার ব্রাউন হয়ে গেলে এর মধ্যে খাসির মাংস ঢেলে দিয়ে তিন চার মিনিট মাংস ভেঁজে নিন। এরপর মাংসে পরিমানমতো লবণ দিন। মাংস ভাঁজার এই সময় সব বাটা মশলা এবং গুঁড়া মশলা একসঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্টের মতো বানিয়ে নিন। এরপর ভাঁজা মাংসের মধ্যে এই মশলার পেস্টটি দিয়ে দিন। এখন সব একসঙ্গে নেড়ে মাংস এবং মশলা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মাংস বেশ সময় নিয়ে কষিয়ে রান্না করুন। প্রয়োজনে অল্প অল্প করে গরম পানি যোগ করুন। পাত্র ঢেকে দিয়ে রান্না করুন। মাঝে মাঝে সব নেড়ে দিন যাতে পাত্রের নিচে না লেগে যায়। মাংস সিদ্ধ হয়ে ঝোল ঘন হয়ে এলে আলুবোখারাগুলো দিয়ে দিন। এরপর চুলা বন্ধ করে দিয়ে মাংস চুলার উপর ঢেকে রেখে দিন পরিবেশনের আগ পর্যন্ত। রুটি, পরোটা বা পোলাওর সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আফগানি পোলাও-গোশত
উপকরণ
মাংস ১ কেজি, টমেটো ৩টি (ব্লেন্ড করা), পোলাওয়ের চাল ৩ কাপ, রসুন ৪-৫ কোয়া কুঁচি, পেঁয়াজ ৩টি (কুঁচি করা), আদা ১ চা চামচ (কুঁচি করা), ছোট এলাচ ৮টি, গোটা ধনে ১ চা চামচ, জিরা ১ চা চামট, লবঙ্গ ১/২ চা চামচ, লাল মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, দারুচিনি ৩টি ছোট টুকরো, কাঁচা মরিচ ২-৩টি (কুঁচি করা), গরম পানি ৭ কাপ, সাদা তেল ২ টেবিল চামচ, ঘি ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ১৫-২০টি, গাজর ১/৪ কাপ জুলিয়ান কাট।
প্রণালি
প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন আদা, রসুন, গোটা গরম মসলা, পেঁয়াজ, ধনে, জিরা ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে ৭ কাপ পানিতে ৩০ মিনিট ধরে মাংস সিদ্ধ করে নিন। এবার মাংসের টুকরোগুলো আলাদা করে রেখে দিন। একটি পাত্রে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ দিয়ে সোনালি করে ভাজুন। এতে টমোটো কাঁচা মরিচ, লাল মরিচ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষান। মসলা কষানো হয়ে এলে তাতে মাংসের টুকরোগুলো যোগ করুন। এর মধ্যে আগে থেকে বানিয়ে রাখা চিকেন স্টক ভালো করে ছেঁকে ঢেলে দিন। এতে চাল মিশিয়ে ফুটতে দিন। যতক্ষণ না চাল সমস্ত স্টক শুষে নিয়ে সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে কিশমিশ ছড়িয়ে আরও ২-৩ মিনিট হালকা আঁচে ঢাকনা দিয়ে রান্না করুন। অল্প ঘিয়ে গাজর ভেজে নিন নরম হওয়া পর্যন্ত। পোলাওয়ের উপর ছড়িয়ে দিন। তৈরি হয়ে গেল আফগানি পোলাও।
বিফ স্টেক
উপকরণ
বিফ স্টেক- ২ পিস (২ কেজি/ ৯০০ গ্রাম), রসুন বাটা- ১.৫ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা- ২ টেবিল চামচ, অলিভ অয়েল- ২ টেবিল চামচ, ভিনেগার- ২ টেবিল চামচ, সয়া সস- ৩ টেবিল চামচ, লবণ- ১/৪ চা-চামচ, মধু- ১ চা-চামচ, তেঁতুল- ২ টেবিল চামচ, লালমরিচ গুঁড়ো- ১.৫ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো- ১.৫ চা-চামচ।
প্রণালি
একটি বোলে রসুন বাটা, ভিনেগার, সয়া সস, অলিভ অয়েল, সরিষা বাটা, লালমরিচ গুঁড়ো, গোলমরিচ গুঁড়ো, মধু ও লবণ একসঙ্গে ভালো করে মেশাতে হবে। এবার তাতে তেঁতুল ঢেলে দিতে হবে। আবার ঠিক মতো মিশিয়ে নিয়ে মিক্সচারটি একটি জিপলকড ব্যাগে ঢেলে দিতে হবে। তার মধ্যে বিফ স্টেকের টুকরো দুটি দিয়ে লক আটকে ভালোভাবে নেড়ে মাংসের গায়ে মিক্সচারটি লাগিয়ে নিতে হবে। এবারে ব্যাগটি ফ্রিজে ৮-১২ ঘণ্টা মেরিনেট হতে রেখে দিতে হবে। এখন একটি গ্রিল প্যানে কুকিং স্প্রে দিয়ে তার উপর স্টেক দিয়ে দিতে হবে। দুই পাশ ঠিক মতো উল্টে পাল্টে দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে বিফের দুই পাশই রান্না হয়। হয়ে গেলে স্টেক।
হেলথ টিপস
কোরবানির ঈদে বেশিরভাগ মানুষই গরুর মাংস খাবেন বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। অতিরিক্ত রেড মিট খাওয়ার কারণে বদহজম থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয় অনেকেরই। তাই বলে কী গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ রাখবেন? মোটেই না। বরং জেনে নিন গরুর মাংস রান্নার কিছু স্বাস্থ্যকর উপায়। এতে আপনার মাংস খাওয়া বেশি হলেও ক্ষতি হবে কম। গরু, খাসি এমন সব ধরণের রেড মিট রান্নার ক্ষেত্রেই এসব টিপস আপনার কাজে আসতে পারে।
১) শুধু মাংস নয়, এর পাশাপাশি কলিজা এবং অন্যান্য অংশগুলোও খাওয়ার চেষ্টা করুন। তবে কলিজা খাওয়া মানা হলে অবশ্যই খাবেন না।
২) মাংস গ্রিল করে, ফ্রাই বা ডিপ ফ্রাই করে খাবেন না। কম আঁচে বেশি সময় ধরে মাংস রান্না করুন। এছাড়া মাংস বেক করতে পারেন বা স্টিম করতে পারেন। এতে মাংসে ক্ষতিকর কিছু উপাদান তৈরি রোধ করা যায়।
৩) মাংস পুড়ে গেলে পোড়া অংশটি কেটে বাদ দিয়ে দিন অবশ্যই।
৪) অলিভ অয়েল, লেবুর রস এবং রসুন দিয়ে মাংস ম্যারিনেট করলে ক্ষতির পরিমাণ কমানো যায়।
৫) মাংস বেশি খাওয়া হলে শরীরচর্চার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। ঈদের ছুটির সুযোগে অনেকেই অলসতা করেন। তা করা যাবে না। শরীরচর্চা অব্যাহত রাখুন।
৬) লম্বা সময় ধরে মাংস ফ্রিজে রাখবেন না। নির্দিষ্ট পরিমাণ মাংস দান এবং বিতরণ করার পর নিজের জন্য যেটুকু বাকি থাকে, তা এক সপ্তাহ পর্যন্ত ফ্রিজে রাখতে পারেন, তার বেশি নয়। ফ্রিজে জমিয়ে রাখা মাংস খেলে পেটব্যথা, বদহজম, ডায়ারিয়া, বমি এবং অন্যান্য সমস্যা বাড়তে পারে।
৭) রান্নার আগে ৫ মিনিট ফুটিয়ে নিতে পারেন মাংস। এতে মাংসে থাকা ফ্যাটি এসিড কমে যায়।
৮) মাংস থেকে চর্বি যতটা সম্ভব কেটে বাদ দিন।
৯) হৃদরোগ, ডায়াবেটিস হেপাটাইটিস, আলসার এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত মানুষের গরুর মাংস খাওয়ার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ। ঈদের আগেই ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নিন দৈনিক কতটুকু মাংস নিরাপদে খেতে পারবেন আপনি।
এস
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ