বাংলাদেশ
আফগানিস্তান জুড়ে কারফিউ
তালেবানের দখলে চলে যাওয়া জেলাগুলো উদ্ধারে আফগান সরকারি বাহিনীর তৎপরতা
সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের অগ্রযাত্রা রুখতে প্রায় সারা দেশে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে আফগানিস্তানের বর্তমান সরকার। গভীর রাতে তালেবান যোদ্ধাদের হামলা থেকে দেশের শহরগুলোতে রক্ষা করতে শনিবার (২৪ জুলাই) এই সিদ্ধান্তের কথা জানায় দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রশাসন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের মোট ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে মাত্র তিনটি ছাড়া বাকি ৩১টি প্রদেশে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। এই প্রদেশগুলোতে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে। এই সময়ের মধ্যে কেউই ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এছাড়া কারফিউয়ের আওতার বাইরে থাকা তিনটি প্রদেশ হচ্ছে- কাবুল, পাঞ্জশির এবং নানগারহার।
শনিবার এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘সহিংসতা কমাতে এবং তালেবানের হামলা ও অগ্রযাত্রা সীমিত করতে কাবুল, পাঞ্জশির এবং নানগারহার প্রদেশ ছাড়া বাকি ৩১টি প্রদেশে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে।’
আলাদা এক অডিও বিবৃতিতে আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারি মুখপাত্র আহমেদ জিয়া জিয়া সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত এই কারিফউ কার্যকর থাকবে।
দীর্ঘ দুই দশক পর আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছে মার্কিন সেনাসহ দেশটিতে অবস্থান করা সকল বিদেশি সেনা। এই পরিস্থিতিতে গত দুই মাস ধরে তালেবান ও আফগান সরকারি বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধ আরও মারাত্মক রূপ নিয়েছে। আফগান সরকারের কাছ থেকে তালেবান যোদ্ধারা ইতোমধ্যেই দেশের প্রায় অর্ধেক এলাকা দখল করে নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার জেমস বায়েস জানাচ্ছেন, হঠাৎ করে আফগান সরকারের কারফিউ আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ অনেকটা স্পষ্ট।
তিনি বলছেন, ‘বহু বছর ধরেই এটা পরিষ্কার যে, আফগানিস্তানের অনেক এলাকায় দিনের বেলা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার এবং রাতের বেলা এই নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তালেবানের হাতে।’
এদিকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশি সেনাদের প্রত্যাহারের কাজ চলছে। সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে অনেকে দ্বিমতও পোষণ করলেও যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটি থেকে সকল বিদেশি সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার পক্ষেই কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
চলতি জুলাই মাসের প্রথম দিকে বাইডেন বলেন, আফগানিস্তান থেকে আগামী আগস্টের মধ্যেই সকল সেনা যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাবে। আফগানিস্তানে আমাদের সামরিক অভিযান ৩১ আগস্ট শেষ হবে। এর আগে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
তার মতে, ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এক লাখ কোটি ডলার ব্যয় করার পর এবং ২৪০০-র বেশি মার্কিন সেনার মৃত্যুর পর দুই দশক আগে প্রণীত নীতির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্ত থাকতে পারে না।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা। সেই হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এরপরই আল কায়দার পৃষ্ঠপোষক তালেবান গোষ্ঠীকে দমন করতে আফগানিস্তানে হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো।
অভিযানে দেশটির তৎকালীন তালেবান সরকারের পতন হলেও তালেবান গোষ্ঠীকে নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। পরিসংখ্যান বলছে, দীর্ঘ প্রায় দু’দশকের এই যুদ্ধে ২ হাজারেরও বেশি মার্কিন সেনা এবং এক লাখেরও বেশি আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা দখলে নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
মুক্তা মাহমুদ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ