বাংলাদেশ
১৫ আগস্ট শুধু শোক দিবস নয়, শক্তি সঞ্চয়েরও দিন: ওবায়দুল কাদের
সীমিত পরিসরে যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি পালনের জন্য দলীয় নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এই আহবান জানান।
তিনি বলেছেন, ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির কাছে শুধু শোক দিবস নয়, বাঙালি জাতির শক্তি সঞ্চয়েরও দিন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আদর্শিক লড়াই ও সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে সমগ্র জাতির শোককে আজ শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, নিরলস পরিশ্রম ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে করোনা মহামারির সময়েও বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী (জাতীয় শোক দিবস)। জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি সীমিত পরিসরে কড়াকড়িভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য দেশবাসী, আওয়ামী লীগ এবং তার সকল সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগস্ট বাঙালি জাতির নিকট বেদনাদায়ক একটি মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসে নির্মমতার এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানবসভ্যতার ইতিহাসে সবেচেয়ে নিকৃষ্ট ও ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বুলেটের আঘাতে স্তব্ধ করে দেয়া হয় বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তি সংগ্রামের দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠ। দেশের বাইরে অবস্থান করার কারণে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুইকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঘাতকেরা এদিন শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকেই সপরিবারে হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি ও সুন্দর আগামীর স্বপ্ন। স্বাধীনতা প্রাপ্তির মাত্র ৩ বছর ৭ মাসের মাথায় দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মাধ্যমে ঘাতকরা বাঙালি জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক পরিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, শুধু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেই খুনিরা ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের জড়িত জিয়া-মুশতাকচক্র অসাংবিধানিক উপায়ে অবৈধ পন্থায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জাতির পিতার খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় এবং বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করে। তবে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পায়। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান এবং নিয়মতান্ত্রিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফাঁসির রায় কার্যকর করে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন। বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বেনিফিশিয়ারি হিসেবে চিহ্নিত একটি মহল এখনও দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিকালে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আজও তারা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। প্রতিনিয়ত নির্লজ্জভাবে মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে তারা জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তবে সকল বাধা-বিপত্তি জয় করে শেখ হাসিনা আজ বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে এক মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় শোক দিবসে দেশের সকল মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা, গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে দেশব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন।
একইসাথে তিনি জাতীয় শোক দিবসসহ আগস্ট মাসের পালনীয় দিবসগুলোতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে তা পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল শাখার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এএ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ