ফুটবল
মেসির সম্ভাব্য যত গন্তব্য
২১ বছরের সম্পর্কের সম্পর্কের ইতি টেনে বার্সেলোনাকে বিদায় জানিয়েছেন লিওনেল মেসি। হুট করে আসা এমন সিদ্ধান্তে অবাক গোটা ফুটবলবিশ্ব। মেসির বার্সেলোনা ছাড়া যেমন অবিশ্বাস্য, তেমনি এই ফুটবল জাদুকরকে বার্সা বাদে অন্য কোন ক্লাবের জার্সিতেও দেখাটা অপ্রত্যাশিত।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে, এমন কিছুরই সাক্ষী হতে যাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীরা। বার্সেলোনার সঙ্গে মেসির সম্পর্কে শেষ যখন আনুষ্ঠানিক, তখন ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারকে দলে ভেড়াতে ইতিমধ্যে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে বিশ্বের সব জায়ান্ট ক্লাবগুলো। চলুন দেখে নেয়া যাক, মেসির পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হতে পারে।
প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)
৬ বারের ব্যালন ডি'অর জেতা ফুটবলারকে বেতন দিয়ে পুষতে পারবে এমন ক্লাব হাতে গোনা ৫-৬টি আছে ইউরোপে। সেই তালিকায় উপরের দিকে থাকবে ফ্রান্সের দল প্যারিস সেন্ট জার্মেইন।
মেসিকে প্রস্তাব দিতে পারে পিএসজি। গত ৩০ জুন ফ্রি-এজেন্ট হওয়ার পর থেকে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে দলে নিতে যারপরনাই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি।
বার্সা ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় মেসিকে দলে নেয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে থাকার কথা তাদেরই। ভক্তরা এরই মধ্যে টুইটারে হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড শুরু করেছেন #MessiAuParis (প্যারিসে মেসি) দিয়ে।
নেইমার-ডি মারিয়া-এমবাপেদের মতো তারকায় ভরপুর দলটি ইতোমধ্যে সার্হিও রামোস, জর্জিনিয়ো ওয়াইনালডাম, জানলুইজি ডোনারুম্মার মতো বিশ্বসেরা ফুটবলারদের দলে ভিড়িয়েছে।
দলের অধরা ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার স্বপ্নটা পূরণ করতে মেসিকে আনার চেষ্টায় কমতি রাখবে না মরিসিও পচেত্তিনোর দল।
ম্যানচেস্টার সিটি
পিএসজির পরে ফেভারিট ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। মেসির গুরু পেপ গার্দিওলা শুরু থেকেই শিষ্যকে নেয়ার ব্যাপারে উৎসাহী। মেসি-পেপ বিস্ফোরণে বার্সেলোনায় ১৪টি শিরোপার উল্লাস দেখেছে বিশ্ব।
আবারও সেই জুটি দেখা যেতে পারে। মেসির বার্সা ছাড়ার দিনই অ্যাস্টন ভিলা থেকে ১০০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে জ্যাক গ্রিলিশকে দলে ভিড়িয়েছেন পেপ। পিএসজির মতো ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার স্বপ্নটা পূরণ করতে মেসিকে দলে আনার চেষ্টা করবে সিটি।
তবে গ্রিলিশকে ১০ নম্বর জার্সি দেওয়ায় মেসি সিটিতে যোগ দিলে গার্দিওলা কিছুটা চিন্তাতেই পড়বেন বটে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
সিটির নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও চেষ্টা চালাতে পারে মেসিকে নিতে। তাদের সেই আর্থিক শক্তি আছে।
তবে ওলে গানার শোলস্কায়ারের দলের খেলার স্টাইলে পরিবর্তন আনতে হবে মেসিকে আনলে। সঙ্গে সিটির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই আর্জেন্টাইনকে ঘরে টানতে হবে।
ইউনাইটেডের মাথা ব্যথা এখন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার নিয়ে। তারপরও মেসিকে পেলে নিঃসন্দেহে দলের শক্তি বাড়বে ক্লাবের। ২০১৩ সাল থেকে লিগের শিরোপা জেতা হয়নি দলটির। সেই আক্ষেপ মেটানোর পরিকল্পনাতেও মেসি থাকবেন।
এই তিন দলের সঙ্গে মেসির সইয়ের দৌঁড়ে আছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসি, ইতালিয়ান সেরি আর দল ইউভেন্তাস ও ইন্টার মিলান।
২০০৪ সালে বার্সার মূল দলে সুযোগ পান মেসি। এরপর প্রায় ১৭ বছর এক ক্লাবেই ছিলেন মেসি। প্রায় দেড় যুগে বার্সার জার্সিতে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল করেছেন। সাফল্যে মোড়ানো ক্লাব ক্যারিয়ারে মেসি জেতেন ৪টি ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ১০টি লিগ শিরোপাসহ ৩৫টি শিরোপা।
চেলসি
তালিকায় অন্যান্য দলগুলোর চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও বাদ দেয়া যাচ্ছে না স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ক্লাবটিকে। গত মৌসুমে ট্রান্সফার মার্কেটে আধিপত্য দেখানো চেলসিও আছে মেসিকে দলে নেয়ার দৌড়ে। সেক্ষেত্রে চতুর্থ সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলটিকেও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
টুখেলের দল মেসিকে নিতে হলে অবশ্য বড় খরচই করতে হবে। তবে উপরের তিন ক্লাবে যদি মেসি নাম না লেখান, তাহলে সেক্ষেত্রে চেলসির নীল জার্সিটাও গায়ে জড়াতে পারেন সাবেক এই বার্সা কিংবদন্তি।
এএ
ফুটবল
ফুটবলকে বিদায় জানালেন পেপে
সব ধরনের ফুটবল থেকে বিদায় নিলেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার পেপে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে পর্তুগালের ম্যাচটাই হয়ে রইল ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলারের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
সে ম্যাচে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল পর্তুগাল। ইউরোর মূলপর্বে সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন তিনি।
পর্তুগালের হয়ে ১৪১ ম্যাচ খেলেছেন পেপে। জিতেছেন ২০১৬ ইউরো।
ফুটবল
বাফুফে থেকে পদত্যাগ করলেন সালাম মুর্শেদী
পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী। তিনি ২০০৮ সাল থেকে পদটিতে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও সালাম মুর্শেদী বাফুফের অর্থ কমিটি ও রেফারিজ কমিটির প্রধানও ছিলেন। এই দুটি পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সালাম মুর্শেদীর পদত্যাগের কথা জানায় বাফুফে। সালাম মুর্শেদী খুলনা–৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।
ফুটবল
চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সংগঠক ও উদ্যেক্তা সাইদুর রহমান প্যাটেল মারা গেছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করতেন তিনি। অবশেষে ৭৩ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সাইদুর রহমান। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শোক জানিয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাইদুর রহমানের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে তহবিল তুলতেন সাইদুর রহমানরা। তারা ভারতে ঘুরে ঘুরে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলতেন। সেখান থেকেও তহবিল সংগ্রহ করতো এই দলটি।
একজন ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার লক্ষ্য নিয়েই স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল গঠন করার উদ্যেগ নিয়েছিলেন সাইদুর রহমান প্যাটেলরা। এখানে খেলে যে অর্থ উত্তোলন হবে, তা মুক্তিযুদ্ধের জন্য গঠিত তহবিলে প্রদান করা হবে; এমনই ছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সেসময়ের ভাবনা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ইচ্ছা ছিল সাইদুর রহমানের। সবশেষ সাধারণ নির্বাচনের আগেই অবশ্য চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমাতে হয় তাকে। সেখানে লম্বা সময় ধরে চিকিৎসা নেওয়ার পর আর দেশে ফিরতে পারলেন না তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই নিজের জীবনের শেষ সময়টুকু কাটালেন।
সাইদুর রহমানের জন্ম ১৯৫১ সালের ৭ অক্টোবর। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। পরে অবশ্য গেন্ডারিয়ায় চলে যায় তার পরিবার। গেন্ডারিয়াতেই বেড়ে উঠেছেন, স্থানীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলতে খেলতে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলেও নিজের জায়গা করে নেন। তিনি ঢাকার ইস্টএন্ডের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। দ্বিতীয় বিভাগে ফরাশগঞ্জের হয়ে, প্রথম বিভাগে পিডব্লুডি’র হয়ে খেলেছেন সাইদুর রহমান প্যাটেল।
এম এইচ//