বাংলাদেশ
বিদায় বেলায় জানালেন আবার বার্সায় আসবেন মেসি
পৃথিবীর কোটি কোটি ভক্ত তার অপেক্ষায়। সবার দৃষ্টি ছিল লিওনেল মেসির সংবাদ সম্মেলনের দিকে। কি বলবেন তিনি। অবশেষে বার্সাকে বিদায় বলেই দিলেন। কিন্তু বিদায় বলতে গিয়ে নিজেও কাঁদলেন। কথা বলতে পারলেন না অনেক্ষণ। তবে বিদায়কালে জানালেন আবারও ফিরতে চান বার্সায়।
রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে কান্নাভেজা চোখে মেসি জানান তার ছোটবেলার ক্লাব বার্সেলোনায় থেকে যাওয়ার পুরো ইচ্ছা ছিল। লা লিগার নতুন নিয়মের কারণে তেমনটা হয়নি।
স্বামীর এমন অবস্থায় স্ত্রী আন্তেনেল্লো রোকুজ্জে এগিয়ে আসলেন হাতে টিস্যুবক্স নিয়ে। চোখ মুছতে মেসি নিলেন সেটি। অনেকক্ষণ পর কথা বলতে শুরু করলেন আর্জেন্টাইন তারকা। পুরো পৃথিবীকে স্বাক্ষী রেখে বললেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক কঠিন’।
২০০০ সালে বার্সেলোনার বিখ্যাত লা মাসিয়া অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন মেসি। ২০০৪ সালে সুযোগ পান বার্সার মূল দলে। এরপর প্রায় ১৭ বছর এক ক্লাবেই আছেন মেসি। বার্সার জার্সিতে ৭৭৮ ম্যাচে ৬৭২ গোল করেছেন। সাফল্যে মোড়ানো ক্লাব ক্যারিয়ারে মেসি জেতেন ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ১০টি লিগ শিরোপাসহ ৩৫টি ট্রফি।
এলএমটেন বলেন, আমি ক্লাব ছেড়ে যেতে চাইনি। আমি বার্সেলোনাকে ভালোবাসি এখানেই থাকতে চেয়েছি। আমার চুক্তিও প্রস্তুত ছিল। ছুটি থেকে ফিরে আসার পর সব ঠিকঠাক ছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু হলো না।
ক্ষুদেজাদুকর বলেন, জীবনে অনেক হার-জিতের মধ্যে দিয়ে গেছি। কিন্তু পরদিন অনুশীলনে নেমে সব ভুলে গেছি। আমি এখানে আর অনুশীলনে আসব না, মাঠে নামব না। এই ক্লাবের হয়ে আর খেলব না। এটাই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্ত।
মেসি যোগ করেন, গত বছর আমি ক্লাব ছাড়তে চেয়েছি কিন্তু এই বছর সব পালটে গিয়েছিল। আমি বুঝতে পেরেছি যে এটা আমার ঘর আর আমি বার্সেলোনাকে কতটা ভালোবাসি। ২১ বছর ধরে আমি এখানে আমার স্ত্রী ও তিন আর্জেন্টাইন-কাতালান সন্তানকে নিয়ে থাকি।
মেসি বলেন, ‘খুব কষ্টের এটা, দেড় বছর ধরে ভক্তদের ছাড়া। আমি একেবারে অন্যভাবে বিদায় বলতে চেয়েছিলাম। প্রথম দিন থেকে শেষ পর্যন্ত আমি আমার সবটুকু দিয়েছি। একদিন আশা করি ফিরব। বাচ্চাদের কথা দিয়েছি। আমি এই ক্লাবকে সেরা হতে সহায়তা করতে চাই।’
মেসি আরও জানালেন বার্সার সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা। আমার নতুন চুক্তি সম্পন্নই ছিল। সব চূড়ান্ত ছিল। আমি এখানে থাকতে চেয়েছিলাম। যখন আমি ছুটি কাটিয়ে আসি এটা সম্পন্ন হয়। শেষ সময়ে লা লিগার নিয়মের কারণে এটা সম্পন্ন হয়নি।'
সংবাদ সম্মেলনে মেসিকে জিজ্ঞেস করা হয় তার নতুন ঠিকানা নিয়ে। পিএসজির পক্ষ থেকে মেসির যোগদান মোটামুটি নিশ্চিত করা হলেও আর্জেন্টাইন অধিনায়ক জানালেন এখনও কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়।
তিনি বলেন, সম্ভাবনা আছে কিন্তু কোনো কিছুই চূড়ান্ত নয়। বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছি না এই ঘোষণার পর অনেকগুলো ফোন কল পেয়েছি। অনেকগুলো ক্লাবই নিতে চেয়েছে। চূড়ান্ত হয়নি কোনো কিছু। অনেকের সঙ্গেই আলোচনা চলছে।
২১ বছর মেসি দেখিয়েছেন তিনি কী পারেন। ২০০০ সালে জন্মভূমি আর্জেন্টিনা থেকে স্পেনে পাড়ি জমান মেসি। বয়সভিত্তিক স্তর পেরিয়ে ২০০৪ সাল থেকে বার্সার মূল দলের হয়ে খেলছেন তিনি। ১৭ বছরের বার্সেলোনা ক্যারিয়ার ও ২১ বছরের সম্পর্ক শেষ হলো বৃহস্পতিবারের অলস দুপুরে। অথচ তার নামের পাশে কতশত অর্জন, কতশত কীর্তি।
২০০৪-০৫ মৌসুমে মাত্র ১৭ বছর বয়সে মেসির বার্সেলোনায় অভিষেক হয়। ৭৭৮ ম্যাচ খেলেছেন কাতালানদের হয়ে। গোল করেছেন ৬৭২টি। অ্যাসিস্ট আছে ৩০৫টি। ১৭ মৌসুমে মেসি ১০টি লা লিগা জিতেছেন। কোপা দেল রে জিতেছেন ৭টি। সুপারকোপা ৮টি। সবচেয়ে মর্যাদার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন ৪টি। ইউয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন ৩টি করে।
এএ
জাতীয়
শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা
শপথ নেয়ার পরের দিন ভাষা শহীদদের স্মরণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৩ জন উপদেষ্টা নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এর আগে, সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেন।
আই/এ
জাতীয়
উপদেষ্টা পরিষদকে অভিনন্দন জানালেন জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল—জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস এবং অন্য উপদেষ্টাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন
বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট ) রাতে দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিনন্দন জানান তারা।
বিবৃতিতে জানানো হয়, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর দেশে আর একটিও প্রাণহানি, হামলা ও সম্পদ ধ্বংসের ঘটনা যেন না ঘটে তা নিশ্চিত হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতিসহ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সাথে আলোচনা করে সরকারের কর্ম পরিকল্পনার রূপরেখা দ্রুত প্রকাশ করে বিদ্যমান অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতা প্রশমিত করবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক ও প্রধান কাজ হিসেবে অনতিবিলম্বে দেশে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
জাসদ নেতৃবৃন্দ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
জাসদ জোর দাবি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ববর্তী সরকারের পদত্যাগের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যসহ পেশাজীবী ও হিন্দু ও আহমদীয়াসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও হত্যা করা, মন্দিরসহ ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে ও নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে হামলা-হত্যা-নির্যাতন, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ, সংসদ ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন-বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে হামলা, লুটপাট, জ্বালিয়ে ছারখার, দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, সাত বীরশ্রেষ্ঠর ভাস্কর্যসহ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা এবং কুমিল্লার বীরচন্দ্র পাঠাগার, সুনামগঞ্জের ঐতিহ্য জাদুঘর, কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক শশীলজের ভেনাস ভাস্কর্য ভেঙে ফেলাসহ অগনিত শিল্পকর্ম ভেঙে ফেলার সব অপরাধ কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার।
জেডএস/
জাতীয়
তদবির থেকে বিরত থাকুন, দেশগঠনে পরামর্শ দিন : আসিফ মাহমুদ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে ১৭ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকার। এ উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুইজন প্রতিনিধি। এদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ। তিনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেয়ার পর ঘনিষ্ঠজনদের নিজেদের সুবিধার জন্য কোনো আবদার কিংবা তদবির করতে বারণ করেছেন। বরং দেশগঠনে কোনো পরামর্শ থাকলে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্ট করে এ অনুরোধ করেন।
পোস্টে এই তরুণ উপদেষ্টা লিখেছেন, ব্যক্তিগত লাভের আশায় আবদার, তদবির করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আমার সাথে আপনার সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। দেশগঠনে পরামর্শ থাকলে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ জনকে নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ঢাকার বাইরে থাকায় তিন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আযম, বিধান রঞ্জন রায় এবং সুপ্রদীপ চাকমা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি।
সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছাড়া অন্যান্য উপদেষ্টারা হলেন- ১. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ২. ড. আসিফ নজরুল ৩. আদিলুর রহমান খান ৪. হাসান আরিফ ৫. তৌহিদ হোসেন ৬. সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ৭. মো. নাহিদ ইসলাম ৮. আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ৯. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন ১০. সুপ্রদীপ চাকমা ১১. ফরিদা আখতার ১২. বিধান রঞ্জন রায় ১৩. আ.ফ.ম খালিদ হাসান ১৪. নুরজাহান বেগম ১৫. শারমিন মুরশিদ ১৬. ফারুক-ই-আযম।
জেএইচ