Connect with us

ফিচার

খুনিকে ধরিয়ে দিল সিগারেট আর এক টুকরো পোশাক!

Avatar of author

Published

on

রিটা

গলায় গভীর কালশিটে দাগ। চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে। জিভও বাইরের দিকে একটু ঝোলা। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে আমেরিকার ভার্মন্টে স্কুলশিক্ষিকা রিটা কুরানকে এই ভাবেই উদ্ধার করেন তাঁর সঙ্গে একই ভাড়া বাড়িতে থাকা বান্ধবী। কে খুন করল রিটাকে?

৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে ১৯৭১-এর জুলাই মাসে নিজের ভাড়াঘরে নৃশংস ভাবে খুন হন স্কুলশিক্ষিকা রিটা। রিটার সঙ্গে একই ঘরে ভাড়া থাকা বান্ধবী তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।

তদন্তে নেমে পুলিশ তখন সেই হত্যাকাণ্ডের কোনও সুরাহা করতে পারেনি। সুরাহা হয় ৫০ বছর পর। কে এবং কেন এ খুন করেছে তা জানা যায় চলতি বছর। একটি সিগারেটের পুড়ে যাওয়া টুকরো এবং একটি পোশাকের সাহায্যে।

রিটা

ভার্মন্টের পুলিশ জানিয়েছে, তারা সিগারেটের পোড়া অংশ এবং কুরানের পোশাকে পাওয়া ডিএনএ ব্যবহার করে হত্যাকারীকে শনাক্ত করেছে।

পুলিশের দাবি, হত্যাকারীর নাম উইলিয়াম ডেরুস। তিনি কুরানের সঙ্গে বার্লিংটন অ্যাপার্টমেন্টের আবাসনেই বসবাস করতেন। ডিএনএ এবং জেনেটিক প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণেই তারা অপরাধীকে ধরতে পেরেছে বলেও মঙ্গলবার ভার্মেন্টের পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন যে, তাঁরা নিশ্চিত যে রিটাকে খুন করেছিলেন ডেরুসই।

Advertisement

তবে অভিযুক্ত ডেরুস বর্তমানে বেঁচে নেই। পুলিশের দাবি, রিটা হত্যাকারী ডেরুস ১৯৮৬ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে অতিরিক্ত মাদকসেবনের কারণে মারা যান। তাই স্বাভাবিক ভাবেই মামলাটির নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।

ভার্মন্টের পুলিশ জানিয়েছে, রিটা যে বিল্ডিং’এ থাকতেন, সেই একই বিল্ডিং’এর দোতলায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন ডেরুস।

রিটার খুনি

তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, ১৯৭১ সালের জুলাইয়ে খুনের ঘটনার রাতে, ডেরুস তার স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যান। ঘর থেকে বেরোনোর সময় ২৪ বছরের রিটার মুখোমুখি হন ডেরুস। দু’জনের মধ্যে কোনও একটি বিষয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হলে রিটার উপর চড়াও হন ডেরুস। এরপর রিটাকে টানতে টানতে তারই ঘরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে বেধড়ক মারধর করেন। পরে তার গলা টিপে খুন করেন ডেরুস। খুনের পর দিন সকালে তদন্তে নেমে যখন তদন্তকারীরা ডেরুস এবং তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, সারা রাত একসঙ্গেই ছিলেন। তাঁরা পুলিশকে বিভ্রান্ত করার জন্য এ-ও জানান যে, তারা কোনও আওয়াজ শোনেননি বা কাউকে রিটার ঘর থেকে বেরোতে দেখেননি।

পুলিশের দাবি, তদন্তকারীরা চলে যাওয়ার পরে ডেরুস তার স্ত্রীকে সাবধান করেছিলেন যে, ভবিষ্যতে যদি আবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, তা হলে যেন তিনি বয়ান না পাল্টান। ডেরুস নাকি তার স্ত্রীকে এ-ও বুঝিয়েছিলেন যে, তিনি এই খুন করেননি। কিন্তু তার অতীত অপরাধ-জর্জরিত। তাই পুলিশ তাকেই এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করে নিতে পারে। আর সেই কারণে ডেরুসের স্ত্রী কখনও নিজের বয়ান বদলাননি। হত্যাকাণ্ডের দিন ডেরুস যে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন সেই তথ্য অজানাই থেকে যায় তদন্তকারীদের।

গোয়েন্দা লেফটেন্যান্ট জেমস ট্রিয়েব সংবাদমাধ্যমে জানান, রিটা খুনের ঘটনায় কোনও খুনিকে ধরা না গেলেও সেই মামলা বন্ধ করা হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সেই সময় একটি সিগারেটের পোড়া টুকরো উদ্ধার করেছিল। টুকরোটি রিটার দেহের পাশেই পড়েছিল।

Advertisement

সিগারেট

২০১৪ সালে সেই সিগারেটের টুকরোর ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন তদন্তকারীরা। সেই টুকরোতে লেগে থাকা ডিএনএ সম্পর্কে তথ্য বার করে তা ‘ন্যাশনাল ক্রিমিনাল ডেটাবেসে’ জমা দেয়া হয়।

‘ন্যাশনাল ক্রিমিনাল ডেটাবেসে’ এই ডিএনএ-র সঙ্গে অন্য কোনও অপরাধীর ডিনএ-র মিল পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, রিটার খুনি আগে কোনও বড় অপরাধের জন্য পুলিশের হাতে ধরা পড়েনি।

এরপর আরও পাঁচ বছর কেটে যায়। সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয় রিটা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত। ২০১৯ সালে ট্রিয়েব মামলাটি পুনরায় তদন্ত শুরু করেন এবং নতুন পদ্ধতিতে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেন।

ট্রিয়েব সিদ্ধান্ত নেন তদন্ত জোরদার করতে রিটার হত্যাকাণ্ড ৫০ বছর আগের হত্যাকাণ্ড হিসাবে না দেখে সদ্য ঘটা হত্যাকাণ্ডের মতো করে দেখতে হবে। তাই এ কাজে গোয়েন্দাদের একটি বিশেষ দল গঠন করেন তিনি। সেই দলে নিয়োগ করা হয় প্রযুক্তি এবং ডিএনএ বিশেষজ্ঞদের।

দলটি সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আবার পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করে। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে ‘জেনেটিক জিনিওলজি’ পদ্ধতি ব্যবহার করে সিগারেটের টুকরোয় লেগে থাকা ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হবে। বিশ্লেষণ করে দেখা হবে রিটার পোশাকের টুকরোতে লেগে থাকা ডিএনএ-ও।

Advertisement

‘জেনেটিক জিনিওলজি’ পদ্ধতি ব্যবহার করে এক জন ব্যক্তির জিনের সঙ্গে অন্য কার জিনের মিল রয়েছে তা খুঁজে বার করা সম্ভব। সন্দেহের তালিকায় থাকা সকলের পরিবার-আত্মীয়দের জিন এবং ডিএনএ-র সঙ্গে সিগারেটের টুকরো এবং পোশাকে থাকা ডিএনএ মিলিয়ে দেখা শুরু হয়।

ডিএনএ টেস্ট

জিন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডেরুসের আত্মীয়দের ডিএনএ-র সঙ্গে সিগারেটে থাকা ডিএনএ-র সব থেকে বেশি মিল আছে। তদন্তকারীরা এর পর ডেরুসের এক সৎভাইকে খুঁজে পান। তার কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করার পর তা সিগারেটের ডিএনএ-র সঙ্গে প্রায় মিলে যায়।

তদন্তকারীরা দেখেন সিগারেটের ডিএনএ এবং রিটার পোশাক থেকে পাওয়া ডিএনএ হুবহু মিলে গিয়েছে। তদন্তকারীরা তখন ডেরুসের তৎকালীন স্ত্রীকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেই সময় তিনি স্বীকার করেন যে, ঘটনার রাতে ডেরুস কয়েক ঘণ্টার জন্য বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। এরপরই ডেরুসকে হত্যাকারী হিসাবে চিহ্নিত করে পুলিশ।

সূত্র: সিএনএন

Advertisement
Advertisement
মন্তব্য করতে ক্লিক রুন

মন্তব্য করতে লগিন করুন লগিন

রিপ্লাই দিন

ফিচার

ফিলস লাইক তাপমাত্রা মাপা হয় যেভাবে!

Published

on

তাপমাত্রা

বছরের মাঝামাঝি সময় এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত চলে গরমের তীব্রতা। তাপমাত্রা এমন বৃদ্ধি পাওয়ায় জনজীবন আজ বিদ্ভস্ত। চলতি বছরে দেশের কয়েক জেলায় তাপমাত্রার রেকর্ড মাপা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি। আর এ কারণেই জারি করা হয়েছে হিট অ্যালার্ট ।

ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগে মানুষ এখন আবহাওয়া পূর্বাভাসের জন্য বসে না থেকে ঘন ঘন মোবাইল ঘেটে দেখে নেয় তাপমাত্রার আপডেট। ধরুন, গুগলে সার্চ দেয়ার সময় তাপমাত্রা দেখা গেলো ৩৮ ডিগ্রিতে তবে এর অনুভুতি হচ্ছে যেন ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রা।

এই যে ফিলস লাইক বা অনুভূত তাপমাত্রার কথা বলা হচ্ছে, সেটি আসলে কি? গরমের এই সময়ে কোন এক এলাকার যে নির্দিষ্ট যে তাপমাত্রার হিসাব দেয়া থাকে তার চেয়ে ফিলস লাইক তাপমাত্রা বেশিই থাকে। এই যেমন গুগল বলছে, এখন ঢাকার তাপমাত্রা ৩৮, কিন্তু ফিলস লাইক ৪২, অর্থাৎ চার ডিগ্রি বেশি!

কীভাবে এই ফিল্‌স লাইক মাপেন আবহাওয়াবিদরা? ব্রিটেনের আবহাওয়া অফিস বলছে, ফিল্স লাইক মাপা হয় কোনও এলাকার সম্ভাব্য তাপমাত্রার পূর্বাভাস, ওই এলাকার আর্দ্রতা ও হাওয়ার গতিবেগ মেপে।

তাপমাত্রা বলতে বোঝায় কোনও নির্দিষ্ট এলাকার বাতাসের তাপমাত্রা। কিন্তু রাস্তাঘাটে বেরুলে শুধু হাওয়া নয়, আরও কিছু বিষয় তাপমাত্রায় প্রভাব ফেলে। বাতাসের আর্দ্রতা ও গতিবেগের কারণে মূল তাপমাত্রার চেয়েও বেশি গরম বা ঠাণ্ডা অনুভূত হয়ে থাকে। পরিবেশেরও একটা বিরাট প্রভাব আছে এতে।

Advertisement

কীভাবে অনুভূত তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে বাতাসের আর্দ্রতা এবং হাওয়ার গতি?

আবহাওয়াবিদদের মতে, বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে ঘাম বেশি হয়। কিন্তু সেই ঘাম বাষ্পের সঙ্গে মিশে যেতে সময় বেশি লাগে। শরীর ঠান্ডা হতে পারে না, তখন গরম কিছুটা বেশি লাগে। অস্বস্তির পরিমাণও বেড়ে যায়।

বাংলাদেশ-ভারতে যখন তাপদাহে পুড়ছে, তখন মরুর দেশ আরব আমিরাত আর সৌদি আরবের রুক্ষ দেশে অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি। এতোটাই বৃষ্টি যে দেশগুলো রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতি। আবার ইউরোপেও এবার অস্বাভাবিকভাবে প্রত্যক্ষ করছে বন্যা, যা এক সময় তাদের চিন্তারও বাইরে ছিলো।

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ফিচার

জীবনযোদ্ধার আরেক নাম ‘বাবা’!

Published

on

শব্দটি ছোট, অথচ এর অর্থ অনেক বিস্তৃত। পৃথিবীর আলো দেখার পর থেকে যে মানুষটা সন্তানের একটু সুখের জন্য, পরিবারের চাওয়া-পাওয়া পূরণের জন্য নিজের সব সুখ ও স্বপ্ন বিসর্জন দেন, তিনি আর কেউ নন, ‘ বাবা’।

আজ বিশ্ব বাবা দিবস। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন আর নতযানু হওয়ার দিন। শব্দটি ছোট, অথচ এর অর্থ অনেক বিস্তৃত। ভাষা আর স্থানভেদে ছোট্ট একটি শব্দের উচ্চারণ বদলে গেলেও অর্থ, বদলায় না রক্তের টান।

বাবা শব্দের মাঝেই জড়িয়ে আছে ভালোবাসা, মায়া, নির্ভরতা। বাবা হলেন সেইজন যার শক্ত কাঁধ সন্তানকে সামনে চলতে শেখায়। যার অক্লান্ত পরিশ্রম সন্তানকে সুন্দর একটা জীবন দেয়। যার অসীম ত্যাগ একটা সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত এনে দেয়।

‘বাবা’ ডাকলেই কেমন এক শান্তি আর আস্থার নিঃশ্বাস যেন অনুভূত হয়। বাবা শাশ্বত, চির আপন, চিরন্তন। বাবা এক মায়ার নাম, এক ছায়ার নাম, চোখের সামনে ভেসে ওঠা এক জীবনযোদ্ধার নাম।

বাবা মানেই সব আবদারের জায়গা। সন্তানের জন্য এক পৃথিবী সমান দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন বাবা নামের বটবৃক্ষ। জীবনের সব রং-চাওয়া পাওয়া হাসি মুখে বিসর্জন দিতে পারেন বাবারাই। বাবার আর্দশ সন্তানকে ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতে শেখায়।

Advertisement

প্রতি বছরের জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় বাবা দিবস। সে হিসেবে আজ রবিবার বিশ্ব বাবা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইংল্যান্ড, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, ভারতসহ প্রায় ১১১টি দেশে এ দিনেই বাবা দিবস উদযাপন করা হয়। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ সেপ্টেম্বরের প্রথশ রোববার বাবা দিবস পালন করে থাকে।

বাবা দিবসের শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। তবে ঠিক কবে থেকে এ দিবসটির প্রচলন হলো তা নিয়ে দ্বিধা আছে। কেউ কেউ বলেন, ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় চার্চের মাধ্যমে দিনটির প্রচলন। অন্যরা বলেন, ওয়াশিংটনের ভ্যাংকুবারে প্রথম বাবা দিবস পালন করা হয়। তবে সাধারণ মত, বাবা দিবসের প্রবক্তা সোনার স্মার্ট ডোড। ১৮৮২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি জন্ম নেন। তার পিতা উইলিয়াম জেকসন স্মার্ট (১৮৪২-১৯১৯) ছিলেন কৃষক। মার্কিন গৃহযুদ্ধের সময় তিনি বীরত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ডোডের মা অ্যালেন ভিক্টোরিয়া চেক স্মার্টসহ পুরো পরিবার চলে যান ওয়াশিংটনের স্পোকেনে। সেখানেই জন্ম হয় সোনার স্মার্ট ডোডের। যখন তার বয়স ১৬, তখন তার মা ষষ্ঠ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যান। পরিবারে সোনারই ছিলেন একমাত্র কন্যা। পূর্ব ওয়াশিংটনের এক গ্রামের ফার্মে এরপর থেকে তিনি নবজাতকসহ পাঁচটি সন্তান মানুষ করার দায়িত্ব তুলে নেন। সোনারা বড় হওয়ার পর অনুভব করলেন ছয়টি সন্তান একা একা মানুষ করতে কী ভীষণ পরিশ্রমই না তার বাবাকে করতে হয়েছে। উইলিয়াম তার মেয়ের চোখে ছিলেন সাহসী, নিঃস্বার্থ একজন ভালো বাবা, যিনি সন্তানদের জন্য নিজের সব সুখ-শখ, আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছিলেন। সোনার স্মার্ট বিয়ে করেন জন ব্রোস ডোডকে। তাদের সন্তান জ্যাক ডোড জন্মের কিছুকাল পরে সোনারের স্বামীও মারা যান। এ অবস্থায় বাবা আর মেয়েতে মিলেই পুরো জীবন পার করে দেন।

বাবার প্রতি সম্মান জানাতে ‘বাবা দিবস’ ঘোষণার বিষয়টি সোনারের চিন্তায় আসে ১৯০৯ সালে। ‘মা দিবস’-এর অনুষ্ঠানে সে বছর চার্চে যান সোনার ডোড। অনুষ্ঠানে এসেই তার মনে হয় মা দিবসের মতো বাবাদের জন্যও একটি দিবস করা প্রয়োজন। যেখানে মায়েদের মতো বাবাদেরও সম্মান জানানো হবে। প্রকাশ করা হবে ভালোবাসা। যুক্তরাষ্ট্রের স্পোকেন মন্ত্রীজোটের কাছে তিনি তার পিতার জন্মদিন ৫ জুনকে বিশ্ব বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব পাঠান। তার প্রস্তাবের প্রশংসা করলেও মন্ত্রীজোট ৫ জুনকে বাবা দিবস ঘোষণা করতে রাজি হয়নি। তারা জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে বাবা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। একটি স্থানীয় পত্রিকা সেদিন ছুটি ঘোষণা করে এবং বিভিন্ন দোকানিরা বাবাদের জন্য নানা রকমের উপহার সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে রাখেন।

১৯ জুন ১৯১০। প্রথম বাবা দিবস উদযাপিত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পোকেনস শহরে। শহরের তরুণ-তরুণীরা দুটি করে গোলাপ নিয়ে যান চার্চে। একটি লাল, অন্যটি সাদা। লাল গোলাপ জীবিত পিতাদের শুভেচ্ছার জন্য, আর সাদা গোলাপ মৃত পিতাদের আত্মার তুষ্টির জন্য। বিষয়টি পুরো মার্কিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সবাই মিলে এই ভাবনার প্রশংসা করেন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রে তা শুরু হয়। কিন্তু তারপরও এটাকে জাতীয়ভাবে পালনে কংগ্রেসের নানা দ্বিধা ছিল। কেননা তারা ভাবছিলেন এতে বাবা দিবস একটি বাণিজ্যে পরিণত হতে পারে। ১৯১৬ সালে প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন বিষয়টি অনুমোদন করেন। ১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কোলিজ এটিকে জাতীয় দিবসে রূপ দেন। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন জনসন রাষ্ট্রীয়ভাবে জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস উদযাপনের ঘোষণা দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে ৫৬ বছর পর বাবা দিবসকে জাতীয় মর্যাদা দেয়া হয়। সোনারা ডোড মারা যান ১৯৭৮ সালে। তখন তার বয়স ছিল ৯৬ বছর।

 

Advertisement
পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

ফিচার

বর্ষার ছন্দে এসেছে আষাঢ়ে মেঘের ভেলা!

Published

on

বাংলা পঞ্জিকা না খুললেও প্রকৃতি যেন একটু একটু করে বলছে আষাঢ় এসে গেছে। সকালে আকাশ মেঘলা জানিয়ে দিয়ে আজ শনিবার (১৫ জুন) বাংলা তৃতীয় মাসের আর্বিভাব ঘটে গেছে। বৃষ্টি না থাকলে মেঘলা মেঘলা একটা অনুভূতি কিন্তু আছে।

আর তাই হয়তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখে গেছেন, ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে, আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে। এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার বাজি নূতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে। ‘

ঋতুচক্রে আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল। আষাঢ় মানে বিশাল আকাশে কালো মেঘের পালকিতে ভেসে বেড়ানো মুহুর্মুহু ডঙ্কা-নিনাদ, ঝমঝম বৃষ্টি। বর্ষার শীতল জলে নবজীবন লাভ করে পল্লবপুঞ্জ। প্রকৃতিকে প্রাণবন্ত, সতেজ ও শত সহস্র মনের প্রেমে ভিজিয়ে রাখার সাধ্য যে একমাত্র আষাঢ়েরই আছে, তা অস্বীকার করার সাধ্যি কার। কদম, কেয়া আর কেতকীর নয়নাভিরাম রূপের পসরা ও পেখম খোলা ময়ূরের উচ্ছল নৃত্যের আবাহন নিয়ে আসে বৃষ্টি।

আষাঢ় শব্দটি এসেছে পূর্বাষাঢ়া ও উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। আষাঢ় বাংলা সনের তৃতীয় মাস। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে জুন-জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আষাঢ় আসে।

বছরভর বাংলার প্রকৃতি হাজির হয় ভিন্ন ভিন্ন অপরূপ সাজে। তার মধ্যে বর্ষার সজল, শ্যামল রূপ অনন্যতায় ভরপুর। ধানের ক্ষেতে রৌদ্র-হাওয়ার লুকোচুরির মতো অপার্থিব দৃশ্য আর কখন মেলে! আষাঢ় আর শ্রাবণ দুই মাসজুড়ে ব্যাপ্তি বর্ষার। মাস দুয়েক নানা মাত্রায় বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর। টিপটিপ, ঝিরিঝিরি, ইলশেগুঁড়ি, মুষলধার—বর্ষার বারিধারার কতই না নাম! কবিরা তার মধ্যে শোনেন নূপুর, মৃদঙ্গ আর মাদলের বোল। আকাশের চেহারারও সে কী বৈচিত্র্য! সারাদিন ঘোলাটে থেকে শুরু করে ছাইরঙা হয়ে মোষের মতো কালো। বর্ষার প্রকৃতিতে ডাকাতের মতোই দৌরাত্ম্য চলে মেঘেদের। কখনো কখনো বর্ষণ শেষে সেই মেঘের ফাঁকে হঠাৎ উঁকি দেয় আকাশজোড়া স্বর্গীয় রঙধনু।

Advertisement

একালে অবশ্য আমাদের কেবল বর্ষা নিয়ে কাব্যকথায় বুঁদ হয়ে থাকলে চলে না। বিশেষ করে নগরে বর্ষা মানে মাথায় রাখতে হয় যানজট আর জলজটের কথা। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণেই নাকি গ্রীষ্ম-বর্ষা জুড়ে বেড়ে চলেছে বজ্রপাত আর তাতে হতাহতের সংখ্যাও।

টিআর/

পুরো পরতিবেদনটি পড়ুন

সর্বাধিক পঠিত

প্রধান সম্পাদক : সৈয়দ আশিক রহমান

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: বেঙ্গল টেলিভিশন লিমিটেড , ৪৩৭ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২১৫
ফোন : 01878-184154, ই-মেইল : contact.bayannotv@gmail.com
© 2023 bayanno.tv

কারিগরি সহায়তায় Build it